দক্ষিণ এশিয়া ও এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলোর অন্যতম বৃহৎ
ভিডিও স্ট্রিমিং প্লাটফর্ম জি ফাইভ। ‘ঐক্যতাই শক্তি’—এমন প্রতিপাদ্য সামনে রেখে প্রতিষ্ঠানটি গতকাল ঢাকায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের দর্শকদের নিয়ে তাদের পরিকল্পনা এবং বিভিন্ন উদ্যোগ সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেছে। এর অন্যতম ঘোষণাটি হলো বাংলাদেশে জি ফাইভ প্রথমবারের মতো এ দেশীয় অরিজিনালস তৈরি করছে। এর মধ্যে রয়েছে একটি ওয়েব সিরিজ ও একটি চলচ্চিত্র। কয়েক মাসের মধ্যে এগুলো মুক্তি পাবে। ওয়েব সিরিজ ও চলচ্চিত্রটি স্থানীয় প্রডাকশন হাউজ এশিয়াটিকের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান গুড কোম্পানির সঙ্গে অংশীদারির মাধ্যমে তৈরি করা হচ্ছে এবং তাতে এ দেশের তারকারাই অভিনয় করছেন।
জি ফাইভের কার্যক্রম নিয়ে এ অনুষ্ঠানে জি ফাইভ গ্লোবালের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা অর্চনা আনন্দ জানান, সবচেয়ে বেশি অরিজিনাল কনটেন্ট তৈরিতে শীর্ষস্থানীয়দের অন্যতম হিসেবে জি ফাইভ গত বছর ৮৪টির বেশি অরিজিনালস তৈরি করেছে; যা তাদের বিনোদন কনটেন্টের বিশাল লাইব্রেরিকে আরো সমৃদ্ধ করেছে। এগুলোর সঙ্গে প্লাটফর্মটিতে এখন একের পর এক স্থানীয় বাংলাদেশী কনটেন্ট যুক্ত হবে, যা বিশ্ববাজারে স্থানীয় কনটেন্ট ও মেধার যথোপযুক্ত বহিঃপ্রকাশ ঘটাবে। প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশই প্রথম মার্কেট, যেখানে জি ফাইভ স্থানীয় কনটেন্ট তৈরি শুরু করেছে। এর মাধ্যমে বোঝা যায় প্লাটফর্মটি বাংলাদেশের বাজারকে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে।
বাংলাদেশে নির্মিত জি ফাইভের অরিজিনালসের মধ্যে প্রথম মুক্তি পাবে রোমান্টিক চলচ্চিত্র যদি... কিন্তু...
তবুও। বিয়ের আগের দিন বর যখন সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন, তখন কী হতে পারে, এমন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়েই দর্শকদের নিয়ে যাবে শিহাব শাহীন পরিচালিত এ চলচ্চিত্র।
এছাড়া অরিজিনালসের মধ্যে রয়েছে মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন রচিত উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত কন্ট্রাক্ট নামের একটি ওয়েব সিরিজ। এ মুহূর্তে এর নির্মাণকাজ চলছে। একজন ভাড়াটে খুনি, পুলিশ কর্মকর্তা এবং আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন সম্পর্কিত টানটান উত্তেজনাপূর্ণ থ্রিলার ওয়েব সিরিজ এটি। সিরিজটি পরিচালনা করছেন কৃষ্ণেন্দু ও তানিম।
এদিকে চলতি মাসে শুরু হতে যাওয়া ‘বাংলাদেশের গ্লোবাল সুপারস্টার’ শিরোনামের ট্যালেন্ট হান্ট প্রোগ্রামের বিষয়েও বিস্তারিত জানানো হয় গতকালের অনুষ্ঠানে। এ প্রতিযোগিতায় নির্বাচিত বিজয়ীরা জি ফাইভ অরিজিনালসে কাজ করার সুযোগ পাবেন, যা ১৯০টির বেশি দেশে দেখা যাবে।
প্রোগ্রামটিতে অংশ নেয়ার প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত প্রকাশ করেছে জি ফাইভ। আগ্রহীরা নিজের কিছু প্রাথমিক তথ্যসহ তাদের অডিশন ব্র্যান্ডের ওয়েবসাইটে আপলোড করতে পারবেন। এ ট্যালেন্ট হান্ট মূল্যায়নের সবচেয়ে বড় মানদণ্ড হচ্ছে প্রকৃত মেধা। বিচারকের একটি প্যানেল অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে পাঁচজন করে পুরুষ ও নারী শিল্পী বাছাই করবেন। চূড়ান্ত পর্বে দুজন শিল্পী বাংলাদেশের গ্লোবাল সুপারস্টার হিসেবে অভিষিক্ত হবেন।
এ ঘোষণার বিষয়ে জি এন্টারটেইনমেন্ট ও জি ফাইভ গ্লোবালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত গোয়েঙ্কা বলেন, ‘আমরা
বাজারের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক স্থাপন করতে চাই, তাই এ বছর আমাদের কর্মসূচির অন্যতম একটি অংশ হলো স্থানীয়করণ। বাংলাদেশের বাজার সবসময় আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শক্তিশালী স্থানীয় সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা আমাদের সম্পর্কগুলো আরো জোরদার করতে চাই। বাংলাদেশই হবে প্রথম বাজার, যেখানে আমরা স্থানীয় ভাষায় কোনো কনটেন্ট তৈরি করতে যাচ্ছি। আমি আনন্দের সঙ্গে জানাতে চাই, আমরা শিগগিরই এখানে অফিস শুরুর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছি।’
অনুষ্ঠানে এসব উদ্যোগ ও জি ফাইভের বাংলাদেশকে প্রাধান্য দেয়ার বিষয়ে জি ফাইভ গ্লোবালের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা অর্চনা আনন্দ বলেন, ‘বাংলাদেশ
অনেক সম্ভাবনাময় একটি দেশ, যা বিশাল প্রবৃদ্ধির জন্য প্রস্তুত। ঢাকায় আসতে পেরে এবং স্থানীয় অংশীদারদের সঙ্গে বিভিন্ন উদ্যোগের কথা জানাতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এগুলো সামনে আসবে। ক্রমবর্ধমান এ বাজারে আমাদের অন্যতম লক্ষ্য একত্র হয়ে কাজ করা, যা একে অন্যকে একসঙ্গে বেড়ে উঠতে এবং শিখতে সাহায্য করবে।’
উল্লেখ্য, টিভি শো, সিনেমা, স্বাস্থ্য ও লাইফস্টাইল এবং অন্যান্য ভিডিওর ১ লাখ ঘণ্টার বেশি সময়ের বিনোদন কনটেন্ট নিয়ে দক্ষিণ এশিয়া এবং এর পার্শ্ববর্তী ১৯০টির বেশি দেশের দর্শকদের জন্য ১৭টি ভাষায় কনটেন্ট দিচ্ছে জি ফাইভ। এছাড়া দর্শক জির সবচেয়ে জনপ্রিয় চ্যানেলসহ ৬০টির বেশি লাইভ টিভি চ্যানেল দেখতে পারবেন এ প্লাটফর্মে।
হিন্দি, ইংরেজি, বাংলা, মালয়ালাম, তামিল, তেলেগু, কন্নড়, মারাঠি, ওড়িশা, ভোজপুরি, গুজরাটি, পাঞ্জাবি এবং পাঁচটি আন্তর্জাতিক ভাষা মালয়, থাই, বাহাসা, জার্মান ও রাশিয়ান ভাষার কনটেন্ট নিয়ে ২০১৮ সালের অক্টোবরে ১৯০টির বেশি দেশে চালু হয় জি ফাইভ।