‘যতোই ব্যথিত হও মানুষের সান্নিধ্য ছেড়ো না/মানুষের সাথে থাকো সব দুঃখ দূর হয়ে যাবে/ যতোই আঘাত পাও মানুষকে কিছুতে ছেড়ো না/যখন কিছুই নেই মনে রেখো/তখনো সর্বশেষ আশা এই মানুষ/সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেলেও তোমার পাশে এসে মানুষই দাঁড়াবে’—মহাদেব সাহা রচিত ‘মানুষের সাথে থাকো’ কবিতার এই পঙিক্তগুলোর মর্মাথকে ধারণ করেই যেন বিক্ষুব্ধ এ পৃথিবীতে আজও কিছু মানুষ আছে, যারা সবকিছুতেই মানুষের দেখা পায়, খুঁজে ফেরে নানান রঙের মানুষ। বিপরীতে শহরের নাগরিক জীবনের জটিল যাপনের গ্যাঁড়াকলে পড়ে কিছু মানুষ আবার খেই হারিয়ে ফেলে, ভুলে যায় নিজের এবং অন্যের পরিচয়কে। বোধ ও বোধির সঙ্গে তাদের পারস্পরিক যোগসূত্রও নিঃশেষ হয়ে যায় কখনো কখনো।
বহু মানুষের বিচিত্র, জটিল ও দ্বান্দ্বিক এ মনস্তাত্ত্বিক অবস্থানেরই একটি চাক্ষুষ দলিল সম্প্রতি দেখার সুযোগ করে দিয়েছে রাজধানীর ধানমন্ডিতে অবস্থিত আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ। তারা এমন একটি ব্যতিক্রমী কার্টুন প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে, যেখানে আগতরা চাইলেই খুঁজে নিতে পারেন অজস্র মানুষ আর মানুষের গল্প। প্রদর্শনীটির নামও জুতসই ‘নানান রঙের মানুষ’।
স্থপতি সাজিদ বিন দোজার ‘নানান রঙের মানুষ’ শীর্ষক একক কার্টুন প্রদর্শনীটি শুরু হয়েছে ২০ ডিসেম্বর। আয়োজকদের ভাষায়, প্রদর্শনীতে শিল্পী সাজিদ বিন দোজার চিত্রগুলো তুলে ধরেছে ঢাকা মহানগরীর মতো নগরের রাস্তা, ফুটপাত, গলি-তস্যগলিতে হেঁটে চলা অগণিত মানুষের মুখ। যে মুখগুলো প্রথম দৃষ্টিতে খুব অচেনা মনে হয়, তবু তাদের প্রত্যেকেরই রয়েছে নিজস্ব পরিচয়; যারা এই সমাজের অগুনতি ক্ষুদ্র অস্তিত্ব হিসেবে বিভিন্ন দায়িত্ব ও চরিত্রে ভূমিকা পালন করে থাকে। ক্রমনগরায়ণ ও ক্ষীয়মান পারস্পরিক যোগসূত্রে এ চেহারাগুলোও ক্রমে অপরিচয়ে হারিয়ে যেতে বসেছে।
প্রদর্শনীটিতে হাজির করা কার্টুনকে ড. সাজিদ বিন দোজা বলছেন ‘সামাজিক ব্যঙ্গচিত্র’। তিনি তার এ ব্যঙ্গচিত্রের ভেতর দিয়ে ঢাকায় অবস্থান করা মানুষের মুখোমুখি হন এবং তার দর্শকদের সামনে একটু ব্যঙ্গের সঙ্গে তাদের পরিচয় তুলে ধরার চেষ্টা করেন।
‘নানান রঙের মানুষ’ শীর্ষক একক কার্টুন প্রদর্শনীটি নিয়ে কথা হয় সাজিদ বিন দোজার সঙ্গে। টকিজের সঙ্গে তার কথোপকথন ছিল এমন—
টকিজ: কেন এ ধরনের ছবি আঁকার ইচ্ছা হলো আপনার?
সাজিদ: শৈশব থেকে আমি কার্টুন আঁকতাম। একসময় ‘উন্মাদ’-এও কার্টুন আঁকতাম। আমি পলিটিক্যাল ও এডিটোরিয়াল কার্টুনও করেছি। আমি আমার কার্টুনের মাধ্যমে আমাদের সমাজ, সংস্কৃতির মতো বিষয়গুলোকে সম্মানের সঙ্গে স্যাটায়ার করে দেখাতে চেয়েছি। সেদিক থেকে চিন্তা করেই এ কাজটি করলাম। এ ছবিগুলো দেখলেই বোঝা সম্ভব দেশ, সংস্কৃতি, আচার