২০২৪ সালের চতুর্থ প্রান্তিকের (অক্টোবর-ডিসেম্বর) আয়ের পূর্বাভাস প্রকাশ করেছে স্যামসাং ইলেকট্রনিকস। এ সময়ে বিশ্লেষকদের প্রত্যাশার তুলনায় কম আয়ের পূর্বাভাস দিয়েছে স্যামসাংয়। খবর টেকমনিটর।
গত বছরের একই সময়ের তুলনায় কোম্পানির পরিচালন মুনাফা ১৩১ শতাংশ বাড়বে বলে আশা করছে টেক জায়ান্টটি। ফলে স্যামসাংয়ের মুনাফা ৬ লাখ ৫০ হাজার কোটি কোরিয়ান ওন বা প্রায় ৪৫০ কোটি ডলারে পৌঁছবে। তবে এআই চিপ সংকটসহ নানা জটিলতার কারণে এ পূর্বাভাস বিশ্লেষকদের প্রত্যাশার চেয়ে কম।
বাজার বিশেষজ্ঞরা পূর্বাভাস দিয়েছিলেন, ডিসেম্বরে শেষ হওয়া প্রান্তিকে স্যামসাংয়ের পরিচালন মুনাফা দাঁড়াবে ৭ লাখ ৭০ হাজার ট্রিলিয়ন কোরিয়ান ওন বা প্রায় ৫৩০ কোটি ডলারে।
গত বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে কোম্পানির পারফরম্যান্স সম্পর্কে আরো বিস্তারিত তথ্য দিয়েছে স্যামসাং। পূর্বাভাস অনুযায়ী, এ সময় প্রায় ৭৫ লাখ কোটি কোরিয়ান ওন বা ৫ হাজার ১০০ কোটি ডলার মূল্যের পণ্য বিক্রি করেছে স্যামসাং। অর্থের এ পরিমাণ ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় ১০ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। কোম্পানিটি পূর্ণাঙ্গ আর্থিক ফলাফল প্রকাশ করবে ৩১ জানুয়ারি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্যামসাংয়ের পূর্বাভাস প্রত্যাশার চেয়ে কম হওয়ার পেছনে একটি বড় কারণ হলো উচ্চ ব্যান্ডউইডথ মেমোরি (এইচবিএম) চিপ বাজারে কোম্পানির ব্যর্থতা। এসব উন্নত চিপ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) অ্যাপ্লিকেশনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে এআই কম্পিউটিং শিল্পে নেতৃত্ব দিচ্ছে এনভিডিয়ার মতো কোম্পানিগুলো। যদিও স্যামসাং আগে এইচবিএম উৎপাদন বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তবে কোম্পানি এখনো এসব চিপ সরবরাহের জন্য এনভিডিয়া থেকে অনুমোদন পায়নি। ফলে এ বাজারে স্যামসাংয়ের প্রবেশের গতি আরো ধীর হয়ে গেছে।
এছাড়া স্যামসাং জানিয়েছে, কোম্পানিটি গত প্রান্তিকে গবেষণা ও উন্নয়নে (আরঅ্যান্ডডি) বেশি খরচসহ উন্নত চিপ তৈরিতে বিনিয়োগ করেছে। উচ্চমানের সেমিকন্ডাক্টর প্রযুক্তিতে নিজেদের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য নেয়া এসব পদক্ষেপ কোম্পানির খরচ অনেক বাড়িয়েছে, ফলে সামগ্রিক মুনাফায় প্রভাব পড়েছে। বছরের শেষ প্রান্তিকে স্মার্টফোন বিভাগেও প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়েছে স্যামসাং। টেক জায়ান্টটির মতে, সাম্প্রতিক উন্মোচন করা ডিভাইসগুলো ক্রেতাদের প্রত্যাশিত সুবিধা দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
যদিও ঠিক আগের প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বৈশ্বিক স্মার্টফোন বিক্রিতে শীর্ষে ছিল দক্ষিণ কোরিয়ার এ জায়ান্ট। বাজার গবেষণা সংস্থা ক্যানালিসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ প্রবৃদ্ধিতে কোম্পানির এন্ট্রি-লেভেলের ফোনগুলো বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০২৩ সালের তুলনায় স্যামসাংয়ের মোট বিক্রির সংখ্যা কমলেও ১৮ দশমিক ৩ শতাংশের হিস্যা নিয়ে সর্বোচ্চ স্থানে ছিল কোম্পানিটি।
কোম্পানিসংশ্লিষ্টরা বলছেন, যদিও চতুর্থ প্রান্তিকের পারফরম্যান্স হতাশাজনক, তবে পুরো ২০২৪ সালের ফলাফল ২০২৩ সালের তুলনায় ভালো ছিল। আগের বছরের তুলনায় গত বছর পরিচালন মুনাফা প্রায় পাঁচ গুণ বেড়েছে।