ডিভাইসে ম্যালওয়্যার?

ফ্যাক্টরি রিসেটের আগে অনুসরণ করা যায় কয়েকটি পদক্ষেপ

কম্পিউটার সিস্টেম বা নেটওয়ার্কে ব্যাঘাত সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে ক্ষতিকর সফটওয়্যার (ম্যালওয়্যার) ব্যবহার করাই ম্যালওয়্যার আক্রমণ।

কম্পিউটার সিস্টেম বা নেটওয়ার্কে ব্যাঘাত সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে ক্ষতিকর সফটওয়্যার (ম্যালওয়্যার) ব্যবহার করাই ম্যালওয়্যার আক্রমণ। ম্যালওয়্যার এমন কোনো সফটওয়্যারকে বোঝায়, যা ব্যবহারকারীর সম্মতি ছাড়াই ডিভাইসের ক্ষতি করা, ডাটা চুরির কাজের জন্য ডিজাইন করা হয়। প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতি বছর এমন অসংখ্য ম্যালওয়্যার আক্রমণ ঘটে। তাই প্রতিটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীই একাধিকবার এর লক্ষ্য হয়েছেন এবং সম্ভবত একবার হলেও আক্রান্তও হয়েছেন। ম্যালওয়্যার অপসারণের সবচেয়ে সহজ ও দ্রুততম পদ্ধতি হলো ডিভাইস ফ্যাক্টরি রিসেট করা, যদিও এটি সবসময় শতভাগ কার্যকর নয়। এছাড়া এ পদ্ধতি অনুসরণে ডিভাইসে থাকা ব্যক্তিগত তথ্য যেমন ছবি, ভিডিও, পাসওয়ার্ড ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ফাইল মুছে যাবে। প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট মেকইউজঅব বলছে, ম্যালওয়্যারটি অপসারণে ফ্যাক্টরি রিসেটের আগে কিছু পদক্ষেপ অনুসরণ করা যায়—

ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা

ব্যবহারকারী যদি ধারণা করেন, তার ডিভাইসটি ম্যালওয়্যার দ্বারা সংক্রমিত হয়েছে, সেক্ষেত্রে প্রথমে এটির ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হবে। কারণ কিছু ম্যালওয়্যার ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে বা ক্ষতিকর কার্যক্রম সম্পাদন করে। ডিভাইসটি ইন্টারনেট থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিলে অতিরিক্ত ক্ষতি রোধ করতে ও ম্যালওয়্যারটি ছড়িয়ে পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করবে।

সেফ মোডে বুট করা ও ম্যালওয়্যার স্ক্যান

নিরাপদ মোডে কম্পিউটার বুট করার প্রক্রিয়াটি শুধু প্রয়োজনীয় ফাইল ও প্রোগ্রামগুলো চালানোর অনুমতি দেয়। ফলে ম্যালওয়্যারটি চলতে পারে না। কারণ বেশির ভাগ ম্যালওয়্যার সাধারণ প্রোগ্রামের সঙ্গে চলতে থাকে। একবার সেফ মোডে গেলে ব্যবহারকারী ‘মাইক্রোসফট সেফটি স্ক্যানারে’র মতো ম্যালওয়্যার স্ক্যানার টুল চালাতে পারেন। টুলটি সিস্টেমের সব ফাইল স্ক্যান করতে সক্ষম। এছাড়া নতুন কোনো হুমকি থাকলেও তা শনাক্ত করবে এটি।

সন্দেহজনক ম্যালওয়্যার মুছে ফেলা

কম্পিউটারে ম্যালওয়্যার আছে কিনা তা চিহ্নিত করবে স্ক্যানার প্রোগ্রামটি। শনাক্ত হলে স্ক্যানারটি ব্যবহারকারীকে ম্যালওয়্যারটি মুছে ফেলতে বা এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সরিয়ে ফেলার সুযোগ দেবে।

অস্থায়ী ফাইল মুছে ফেলা

ম্যালওয়্যার সবসময় স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান থাকে না। ম্যালওয়্যার স্ক্যানারও অনেক সময় কিছু ক্ষতিকর ফাইল শনাক্ত করতে পারে না। কারণ এগুলো সিস্টেমের গভীরে লুকিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে ডিভাইসে থাকা অস্থায়ী ফাইলগুলো মুছে ফেলা উচিত বলে জানান প্রযুক্তিসংশ্লিষ্টরা। উইন্ডোজের ডিস্ক ক্লিনআপ টুল অস্থায়ী ফাইল দ্রুত মুছে ফেলতে সাহায্য করে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এসব ফাইল অপসারণ করা নিরাপদ ও এটি কম্পিউটারকে আরো দ্রুত চালাতে সহায়ক হতে পারে। এ পদক্ষেপ অনুসরণ করার আগে নিশ্চিত হতে হবে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ফাইল ভুল করে যেন মুছে ফেলা না হয়। এছাড়া ব্রাউজার ক্যাশেও মুছে ফেলতে হবে। ব্রাউজারের সেটিংসে গেলে অপশনটি পাওয়া যাবে। তবে এটি করার ফলে সাইন ইন করা সাইটগুলো সাইন আউট হয়ে যাবে। প্রযুক্তিবিদরা বলছেন, ম্যালওয়্যারের সঙ্গে লড়াই করার চেয়ে ইন্টারনেট সেবাগুলোয় পুনরায় সাইন ইন করা ভালো।

দ্বিতীয়বার স্ক্যান করা

উল্লেখিত পদক্ষেপগুলো শেষ হলে সিস্টেমটি রিবুট করে আবার একবার ম্যালওয়্যার স্ক্যান করতে হবে। দ্বিতীয় স্ক্যানটি যদি নির্ভেজাল আসে, তবে বোঝা যাবে ডিভাইসটি সুরক্ষিত আছে। অর্থাৎ সফলভাবে ম্যালওয়্যারটি সিস্টেম থেকে মুছে গেছে। প্রযুক্তিবিদরা বলছেন, কোনো স্ক্যানারই সব ম্যালওয়্যার শনাক্ত করতে পারে না। প্রতিদিন হাজার হাজার নতুন ম্যালওয়্যার ভ্যারিয়েশন আবিষ্কৃত হচ্ছে, তাই স্ক্যানারটি কিছু হুমকি ধরতে পারবে না এটাই স্বাভাবিক। তবে এসব পদক্ষেপ অনুসরণ করার পরও যদি কম্পিউটারটি সংক্রমিত মনে হয়, তাহলে ফ্যাক্টরি রিসেট করার কথা ভাবা যায়।

আরও