রাজনৈতিক পক্ষপাতের কারণে ইলোন মাস্ক মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সম্প্রতি জার্মানির ৬০টির বেশি ইউনিভার্সিটি ও উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এ প্লাটফর্ম ত্যাগের ঘোষণা দিয়েছে। এ পদক্ষেপের কারণ হিসেবে একাধিক বিষয় সামনে এনেছে প্রতিষ্ঠানগুলো। তাদের মতে, এ মাইক্রো ব্লগিং সাইটে বৈচিত্র্য, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও পাণ্ডিত্যের মতো মূল্যবোধের প্রতি সমর্থন পাওয়া যায় না।
এক যৌথ বিবৃতি উদ্ধৃত করে আনাদোলু জানায়, ইউনিভার্সিটিগুলো এক্সে অতিডানপন্থী জনতোষণধর্মী কনটেন্ট প্রচারের নিন্দা জানিয়েছে। একে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে অভিহিত করেছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মতে, তাদের এ সিদ্ধান্ত তথ্যভিত্তিক যোগাযোগের পক্ষে ও গণতন্ত্রবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে একটি স্পষ্ট সংকেত পাঠাচ্ছে।
এ পদক্ষেপের অগ্রভাগে রয়েছে ডুসেলডর্ফের হাইনরিখ হেইনে ইউনিভার্সিটি। প্রতিষ্ঠানটির মুখপাত্র আখিম জোলকে জানান, এক্সের বিরুদ্ধে এ আন্দোলনে একের পর এক বিশ্ববিদ্যালয় যোগ দিচ্ছে।
প্লাটফর্মটির সম্প্রতি কার্যক্রম ও কার্যকারিতায় সাম্প্রতিক পরিবর্তন এবং অ্যালগরিদমের সমালোচনা করেছেন পটসডাম ইউনিভার্সিটির মুখপাত্র সিল্কে অ্যাঙ্গেল। তার মতে, এক্সের এসব পদক্ষেপ তথ্য ভাগাভাগি ও আলোচনার ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করছে।
বাক্স্বাধীনতার আড়ালে তদারকির অভাবেরও নিন্দা করেছেন সিল্কে অ্যাঙ্গেল, যা বিদ্বেষপ্রসূত বক্তব্য, বিভ্রান্তিকর তথ্য ও ছলচাতুরিকে উৎসাহিত করে বলে তার মন্তব্য।
এক্স ত্যাগ করা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে আরো রয়েছে ফ্রেই ইউনিভার্সিটি বার্লিন, হামবোল্ট ইউনিভার্সিটি, হেইডেলবার্গ ইউনিভার্সিটি, মিউনস্টার ইউনিভার্সিটি, আরডব্লিউথ আখেন ইউনিভার্সিটি, জার্মান স্পোর্ট ইউনিভার্সিটি কোলন ও ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি ভিয়াদ্রিনা ফ্রাংকফুর্ট (অর্ডার)।
অতিডানপন্থী দল অলটারনেটিভ ফর জার্মানির (এএফডি) প্রতি ইলোন মাস্কের স্পষ্ট সমর্থনের পর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এক্স ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয়। মাস্কের সমর্থন ও কিছু রাজনৈতিক কার্যক্রমের কারণে জার্মান নেতারা অভিযোগ করেছেন যে তিনি নির্বাচনের ফলাফলে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করছেন, যা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অসৎ প্রভাব ফেলতে পারে।
এক্স কিনে নেয়ার পর মিথ্যাচার ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের বিরুদ্ধে নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই তুলে নিয়েছেন ইলোন মাস্ক। সাম্প্রতিক মার্কিন নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষ নিয়েও সমালোচনার মুখে পড়েন এ ধনকুবের।
এদিকে মার্ক জাকারবার্গ মালিকানাধীন স্যোশাল মিডিয়া প্লাটফর্ম ফেসবুকের প্যারেন্ট মেটা সম্প্রতি ফ্যাক্ট-চেকিং তুলে দেয়ার কথা বলেছে। এ নিয়েও সমালোচনা ছড়িয়ে পড়েছে।