জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিক

সেমিকন্ডাক্টরের বাজারে শীর্ষে স্যামসাং

২০২৪ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বিশ্বব্যাপী সেমিকন্ডাক্টরের বাজারে শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে টেক জায়ান্ট স্যামসাং।

২০২৪ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বিশ্বব্যাপী সেমিকন্ডাক্টরের বাজারে শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে টেক জায়ান্ট স্যামসাং। তবে কোম্পানির বাজার হিস্যা আগের প্রান্তিকের তুলনায় কমেছে ১৩ শতাংশ। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্যামসাংয়ের প্রত্যাশা অনুযায়ী এ সময় পণ্যের মূল্য বা মজুদের মূল্যায়ন বাড়েনি, ফলে মুনাফাও কম হয়েছে। এছাড়া স্যামসাংয়ের উন্নত মেমরি প্রযুক্তি পণ্য এইচবিএম৩-এর উৎপাদনে বিলম্ব, লো-এন্ড মেমরি বিক্রি ও দামের জটিলতা স্যামসাংয়ের কার্যক্রমকে প্রভাবিত করেছে। সেমিকন্ডাক্টরের বাজারে স্যামসাংয়ের পর দ্বিতীয় স্থানে আছে দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক এসকে হাইনিক্স। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কোম্পানির আয় বেড়েছে ৯৪ শতাংশ। এ প্রবৃদ্ধির মূল কারণ ছিল এনভিডিয়ার মতো ডাটা সেন্টার গ্রাহকদের থেকে এইচবিএম মেমরির উচ্চ চাহিদা। গাড়ি শিল্পের শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির কারণে সেমিকন্ডাক্টর আয় বেড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের চিপ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান কোয়ালকমের। এ তালিকায় তৃতীয় স্থান দখল করা কোম্পানিটি স্মার্টফোন ব্যবসা নিয়ে বেশ আশাবাদী। তারা ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকের (জানুয়ারি-মার্চ) জন্য আয়ের পূর্বাভাসও বাড়িয়েছে। আইওটি (ইন্টারনেট অব থিংস) সেগমেন্টে কিছুটা পুনরুদ্ধারের প্রবণতা দেখতে পাচ্ছে বলে জানিয়েছে কোয়ালকম।

গত বছর সেপ্টেম্বরে শেষ হওয়া প্রান্তিকে ইন্টেলের উন্নত চিপ তৈরি ও বিক্রি প্রাথমিক পর্যায়ে ছিল এবং লাভজনক হয়নি। ফলে কোম্পানিটি কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়। তবে এখন উন্নত প্যাকেজিং ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ফাউন্ড্রি আয় (যেখান থেকে চিপ তৈরি হয়) বাড়াতে সহায়তা করছে।

২০২৩ সালের প্রথমার্ধে দুর্বল চাহিদার মধ্য দিয়ে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হয় বৈশ্বিক সেমিকন্ডাক্টর খাতকে। ২০২৪ সালের তৃতীয় প্রান্তিক ছিল সেমিকন্ডাক্টর কোম্পানিগুলোর জন্য ঘুরে দাঁড়ানোর সময়। বছরের শেষ তিন মাসেও এ পণ্যের চাহিদা বাড়ার প্রত্যাশা করছেন বাজার বিশ্লেষকরা। মূলত এআই চিপ ও মেমরির জন্য বেড়ে চলা কম্পিউটিং চাহিদার কারণে এ প্রবৃদ্ধি লক্ষণীয় হবে।

সেমিকন্ডাক্টর ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (এসআইএ) তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সালের অক্টোবরে বৈশ্বিক সেমিকন্ডাক্টর খাতে বিক্রি ৫ হাজার ৬৯০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। শিল্পটির ইতিহাসে একক মাস হিসেবে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে অক্টোবরে। সংস্থাটির পূর্বাভাস অনুযায়ী, বছর শেষে এ খাতে বিক্রি বাড়বে ১৯ শতাংশ। ২০২৫ সালে বিক্রির পরিমাণ বাড়বে দ্বিগুণ হারে। এ বিষয়ে এসআইএর প্রেসিডেন্ট ও সিইও জন নিউফার বলেন, ‘বৈশ্বিক সেমিকন্ডাক্টর বাজার ২০২৪ সালের শেষে এসে বড় সাফল্য অর্জন করেছে। কারণ অক্টোবরে শিল্পটি মাসিক হিসাবে ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি সেমিকন্ডাক্টরে বিক্রি করেছে এবং গত সাত মাসে বিক্রি ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে।’

চিপ নির্মাণের ক্ষেত্রে ২০২৫ সালে নতুন করে যোগ দেবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ও হাই পারফরম্যান্স কম্পিউটিং (এইচপিসি)। ফলে দুই ন্যানোমিটার প্রযুক্তি ও চিপ প্যাকেজিং উন্নত হবে, যা সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে বড় পরিবর্তন নিয়ে আসবে।

বাজার গবেষণা সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ডাটা করপোরেশনের (আইডিসি) সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়। আইডিসির বৈশ্বিক সেমিকন্ডাক্টর টেকনোলজি সাপ্লাই চেইন ইন্টেলিজেন্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫ সালে বৈশ্বিক সেমিকন্ডাক্টরের বাজার বাড়বে ১৫ শতাংশ।

এ বিষয়ে সংস্থাটির জ্যেষ্ঠ গবেষণা ব্যবস্থাপক গ্যালেন জেং বলেন, ‘আরো উন্নত চিপ ও উচ্চ ব্যান্ডউইথ মেমরির (এইচবিএম) চাহিদা বাড়ায় ২০২৫ সালে সেমিকন্ডাক্টর মার্কেটে বড় ধরনের প্রবৃদ্ধি হতে পারে।’

আরও