ঢাকায় গৃহকর্মীদের সুরক্ষা ও জীবনমান উন্নয়নে নীতি সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রোববার (২৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় সিরডাপ মিলনায়তনে গণসাক্ষরতা অভিযানের আয়োজনে এই সংলাপ হয়। এতে সহযোগিতা করে অক্সফাম ইন বাংলাদেশ ও ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন।
গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে. চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তী সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।
সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা বলেন, দেশে গৃহকর্মীর সংখ্যা প্রায় ২৫ লাখ। এদের মধ্যে বেশিরভাগই অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়ে শিশু। তিনি বলেন, গৃহকর্মীদের জীবনমান উন্নয়নে বিশেষ কর্মসূচি নেয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি প্রশিক্ষণ ও ন্যূনতম শিক্ষা অর্জনের সুযোগ তৈরি করতে হবে।
নীতি সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন অন্তর্বর্তী সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, গৃহশ্রমিকদের সুরক্ষায় মনমানসিকতার পরিবর্তন জরুরি। শ্রম মন্ত্রণালয় থেকে একটি অভিযোগ কেন্দ্র ও কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে, যেখানে গৃহকর্মীরা তাদের সমস্যা জানাতে পারবেন ও দ্রুত সমাধান হবে।
বিশেষ অতিথি ছিলেন শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান ও বিলসের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদ, নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান ও নারীপক্ষের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শিরীন পারভীন হক এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
গেস্ট অব অনার ছিলেন ইনফরমাল সেক্টর ইন্ডাস্ট্রি স্কিলস কাউন্সিলের (আইএসআইএসসি) সভাপতি ও শ্রম আদালত ঢাকা-১ এর সদস্য মীর্জা নূরুল গণি শোভন।
অনুষ্ঠানে নির্ধারিত আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম, বিশ্বব্যাংকের পরামর্শক ও এনএসডিসির সাবেক সিইও এবিএম খোরশেদ আলম, অক্সফাম ইন বাংলাদেশের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মাহমুদা সুলতানা, ক্যাপের নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রেবেকা সান-ইয়াত ও সলিডারিটি সেন্টার বাংলাদেশের কান্ট্রি প্রোগ্রাম ডিরেক্টর অ্যাডভোকেট এ কে এম নাসিম।
গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্কের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী আবুল হোসাইন, সফোরন ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ার সৌমিক দত্ত, গৃহকর্মী শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি মর্জিনা সুলতানা, সদস্য সাবিনা আক্তার, হোসনো আরা বেগম খাদিজা, রেবেকা সুলতানা ও গৃহকর্মী আমেনা আক্তার মনি তাদের কাজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য দেন গণসাক্ষরতা অভিযানের উপ-পরিচালক তপন কুমার দাশ। তিনি বলেন, দেশে গৃহশ্রমিকরা নানা ধরনের কাজে যুক্ত হলেও তাদের সুরক্ষা ও জীবনমান উন্নয়নে এখনো কার্যকর নীতি নেই। এই সংলাপের মাধ্যমে নীতিনির্ধারকদের কাছে বিষয়টি গুরুত্বসহ তুলে ধরা হয়েছে।
গৃহকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া, ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন, শিশুদের শিক্ষায় সহায়তা, জরিপের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, অভিযোগ নিষ্পত্তির বিশেষ সেল গঠন ও আবাসনের ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
এই নীতি সংলাপে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, গণমাধ্যমকর্মী, অক্সফাম ইন বাংলাদেশের ইডব্লিউসিএসএ কর্মসূচির অংশীদার সংগঠনের সদস্য, গণসাক্ষরতা অভিযান কাউন্সিলের প্রতিনিধি, এডুকেশন ওয়াচের প্রতিনিধি ও নারী গৃহকর্মীসহ প্রায় ৭০ জন অংশ নেন।