বিশ্ব ডিএনএ দিবস ২০২৫ উদযাপন করেছে গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (গাকৃবি) বায়োটেকনোলজি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট (আইবিজিই)।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) কৃষি, স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত টেকসই উন্নয়নে ডিএনএ বিজ্ঞানের ভূমিকা তুলে ধরে আয়োজিত দিনব্যাপী কর্মসূচিতে অংশ নেন শিক্ষার্থী, গবেষক ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা। ডিএনএ-এর ডাবল হেলিক্স গঠন আবিষ্কারের ৭২তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের জৈবপ্রযুক্তি খাতে নেতৃত্বের প্রতিফলন ঘটে।
সকাল সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে দিনের সূচনা হয়। বাংলাদেশ একাডেমি অব সায়েন্সেসের ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. জাহুরুল করিম এবং আইবিজিইর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও বিশ্ব বিজ্ঞান একাডেমির ফেলো প্রফেসর তোফাজ্জল ইসলামের নেতৃত্বে এ শোভাযাত্রায় অংশ নেন ১৫০ জনেরও বেশি শিক্ষক-শিক্ষার্থী, গবেষক ও সাংবাদিক। জিনোমিক্স, খাদ্য নিরাপত্তা ও জলবায়ু-সহিষ্ণু কৃষিতে ডিএনএ গবেষণার অগ্রগতি তুলে ধরে বানার, প্ল্যাকার্ড ও শিল্পকর্ম নিয়ে শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ শেষে প্রশাসনিক ভবনে গিয়ে শেষ হয়। বেলুন উড়িয়ে বিশ্ব ডিএনএ দিবসের শুভ সূচনা করা হয়।
সকাল ১০টায় জিনোম সম্পাদনা, বায়োইনফরমেটিক্স ও জৈবপ্রযুক্তি বিষয়ক জ্ঞান যাচাইয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মেধার প্রতিযোগিতা জাতীয় ডিএনএ অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হয়। মাইক্রোবায়োম গবেষণা, ফসলের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও টেকসই জৈবসার নিয়ে উদ্ভাবনী প্রকল্পগুলোর পোস্টার ও নিবন্ধ প্রদর্শনী সবার দৃষ্টি কাড়ে।
দিবসের অন্যতম আকর্ষণ ছিল বিশ্ববিদ্যালয় অডিটোরিয়ামে আয়োজিত সেমিনার। এতে প্রফেসর তোফাজ্জল ইসলাম ‘ডিএনএ থেকে জিনোম সম্পাদনা: জীববিজ্ঞানে এক বিপ্লবী অধ্যায়’ শীর্ষক মূল বক্তৃতায় ডিএনএ-এর ঐতিহাসিক আবিষ্কার থেকে CRISPR ভিত্তিক জিনোম এডিটিং প্রযুক্তির যুগান্তকারী প্রয়োগ নিয়ে আলোচনা করেন। তার উপস্থাপনার উল্লেখযোগ্য দিকগুলো হলো: (ক) বছরজুড়ে উৎপাদনযোগ্য কাঁঠালের জিনোম ডিকোডিং (পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে)। (খ) জাতীয় মাছ ইলিশের অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম এবং বাংলাদেশের ১৪টি কৃষি-বাস্তুসংস্থান অঞ্চলের মাটির মাইক্রোবায়োম ম্যাপিং। (গ) বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে ব্লাস্ট-প্রতিরোধী গম উদ্ভাবন ও দ্রুত রোগ শনাক্তকরণ কিটের বৈশ্বিক সম্প্রসারণ।
ড. জাহুরুল করিম ডিএনএ-কে"জীবনের নীলনকশা আখ্যায়িত করে জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় তরুণদের উদ্ভাবনী গবেষণায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। আইবিজিইর বর্তমান পরিচালক প্রফেসর শাহ মোহাম্মদ নাঈমুল ইসলাম চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও গবেষকদের সমন্বিত প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানান। সাবেক পরিচালক প্রফেসর মাহবুবুর রহমান ও প্রফেসর মোরশেদুর রহমান খাদ্য নিরাপত্তা ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় গবেষণার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে অলিম্পিয়াড, পোস্টার প্রদর্শনী ও কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হয়।