সবুজের চাদরে ঘেরা বাংলাদেশের সিলেট। পাহাড়, টিলা আর দিগন্ত বিস্তৃত চা-বাগান ঢেকে রেখেছে এ অঞ্চলকে। সাদা পাথর, পাহাড় আর নদীর প্রেমে পড়ে যান এখানে আসা পর্যটকরা।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এমনই এক জায়গা রাংপানি। সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার মোকামপুঞ্জি এলাকায় এর অবস্থান। তবে জেলার বাইরের অনেকেই জানেন না এ জায়গা সম্পর্কে।
আশি-নব্বইয়ের দশকে ঢাকাই চলচ্চিত্রের একাধিক ছবির শুটিং হয়েছে রাংপানি এলাকার নয়নাভিরাম নদী ও এর আশপাশে। বাংলাদেশের চলচিত্রের সে সময়ের জনপ্রিয় নাঈম-শাবনাজ জুটির প্রথম চলচ্চিত্র ‘চাঁদনীর’ একটি গান ছাড়াও বেশ কিছু দৃশ্যের চিত্রায়ন এখানেই করা হয়েছিল।
রাংপানি যেতে হলে প্রথমে সিলেটে পৌঁছাতে হবে। দেশের যেকোনো বিভাগ থেকে বাস, ট্রেনে করে সিলেটে যাওয়া যায়।
এরপর সিলেট শহর থেকে যেতে হবে রাংপানিতে। সেখানে যেতে হলে ব্যক্তিগত যানবাহন কিংবা জাফলং যাওয়ার বাসে উঠে পড়লেই হবে। আর সারাদিনের জন্য সিএনজি ভাড়া করলে খরচ পড়বে ১ হাজার ৭০০ থেকে দুই হাজার টাকা। জৈন্তাপুর শ্রীপুর পর্যটনকেন্দ্র পার হয়ে মোকামপুঞ্জি এলাকায় নামলেই পায়ে হেঁটে মাত্র আধা কিলোমিটার এগোলেই দেখা মিলবে রাংপানির।
তবে রাংপানিতে থাকার জন্য এখনো তেমন কোনো আবাসন ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। জৈন্তাপুর বা সিলেটের আশপাশে ফিরে এসেই থাকতে হবে রাতে। আর খাবারের জন্য জৈন্তাপুর বা মোকামপুঞ্জির যেকোনো হোটেলে যেতে পারেন। এছাড়া জিন্দাবাজার এলাকাতেও বেশকিছু খাবারের দোকান আছে যেখানে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী নানান খাবার পাওয়া যায়।
পর্যটনের অপার সম্ভাবনা থাকলেও সিলেটের রাংপানি এখনো লোকচক্ষুর আড়ালে রয়ে গেছে। কারণ সরকারিভাবে এক সময় পাথরকোয়ারির কারণে শ্রীপুর তার শ্রী হারাতে তাকে। ফলে কমে যায় পর্যটকদের আসা-যাওয়া। নতুন প্রজন্মের কাছে তাই এ অঞ্চল এখানো অজানা। তাই কোলাহলবিহীন এ অঞ্চলে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন দু-একদিনের মধ্যেই। পাহাড়ি সরু রাস্তার দুই ধারের সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ করবেই।