কথায় বলে এক দেশের বুলি, অন্য দেশের গালি। তেমনি এক দেশে যা খুবই স্বাভাবিক ঘটনা, অন্য দেশে তার জন্য হতে পারে জরিমানাও। যেমন ধরুন, পায়রা বা পাখিকে খাবার খাওয়ানো। ভারতে তা পুণ্যের কাজ। কিন্তু সামান্য পায়রাকে দানা খাওয়াতে গিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা গচ্চা যেতে পারে যদি আপনি ইতালির ভেনিস শহরে যান।
২০০৮ সালে এখানে নিয়মটি চালু হয়। তবে এক সময় এই শহরে উড়ে বেড়াত অসংখ্য পায়রা। পর্যটকেরা তাদের খাবারও দিতেন। বহু লোকের রুজিরুটি ছিল পাখির খাবার বিক্রি করা। কিন্তু পায়রার মলত্যাগে, ঝরে পড়া পালকে বহু প্রাচীন স্থাপত্যকীর্তি নষ্ট হচ্ছে, এমন কারণ দেখিয়ে তা বন্ধ করা হয়েছে। কোনো কোনো জায়গায় অবশ্য পরবর্তীতে নিয়ম কিছুটা শিথিল করা হয়েছে। তবে ভেনিসে গেলে এ ব্যাপারে সাবধান থাকাই ভালো।
এরকম আজব নিয়ম রয়েছে অন্যান্য বেশ কিছু দেশেও।
যে কোনো দেশেই দুর্ঘটনা রুখতে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণের আইনকানুন রয়েছে। কিন্তু এমন দেশও আছে যেখানে গাড়ির গতি যত বেশিই হোক না কেন, কোনো আইনি জটিলতায় পড়তে হবে না। জার্মানিতে রয়েছে এমন নিয়ম।
জার্মানির বেশ কিছু জাতীয় সড়ক রয়েছে এই নিয়মের আওতায়। এই জাতীয় সড়কগুলোকে বলা হয় অটোবান। দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা এই সড়কপথের বিস্তার ১২০০ কিলোমিটার। ১৯৩০ সালে অটোবান তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছিল। মূলত দ্রুত গতিতে দেশের গুরুত্বপূর্ণ শহর এবং স্থানগুলোতে পৌঁছানোর জন্যই রয়েছে এই রাস্তা। অটোবানে বেশির ভাগ গাড়ির সর্বোচ্চ গতির কোনো সীমা নেই।
জঙ্গলে ঘুরতে গেলে বা পাখি দেখতে গেলে, সাধারণত পরিবেশপ্রেমীরা জংলা ছাপ বা সামরিক কেতার ছাপওয়ালা পোশাক পরে থাকেন। এগুলোকে বলা হয় 'ক্যামোফ্লেজ়'। এর সুবিধা হল, চট করে সবুজের মধ্যে মিশে যাওয়া যায়। আমেরিকার ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের বিভিন্ন দ্বীপ এবং রাষ্ট্রে ক্যামোফ্লেজ না পরলে শাস্তি অনিবার্য।
জামাইকা, বারবাডোজ, সেন্ট লুসিয়াসহ একাধিক দেশ এবং দ্বীপে এ নিয়ে আবার নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে। এই সমস্ত দ্বীপ এবং দেশে শুধু ক্যামোফ্লেজ জামা বা প্যান্ট নয়, এমন ছাপওয়ালা টুপি এবং ব্যাগ ব্যবহারও বেআইনি।
তার কারণ হল, এই ধরনের পোশাক পরেন সামরিক বাহিনীর সদস্যেরা। মনে করা হয়, পর্যটক বা দ্বীপের বাসিন্দারা এমন জামাকাপড় পরে সহজেই সামরিক বাহিনীর মধ্যে মিশে যেতে পারেন। দেশের ক্ষতি করার চেষ্টা করতে পারেন।