রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চল থেকে উত্তর কোরিয়ার দুই সেনাকে আটক করেছে ইউক্রেন। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি শনিবার এ তথ্য জানিয়েছেন। ২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত শুরুর পর থেকে এই প্রথম উত্তর কোরিয়ার সেনাদের জীবিত আটকের ঘোষণা দিয়েছে ইউক্রেন। খবর রয়টার্স।
কিয়েভ ও এর পশ্চিমা মিত্রদের মতে, গত অক্টোবরে রাশিয়ার পক্ষে যুদ্ধে যোগ দেয়া উত্তর কোরিয়ার নিয়মিত সৈন্যর সংখ্যা ১০ হাজার বা তার বেশি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) জেলেনস্কি বলেন, ‘আটক সেনাদের কিয়েভে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাদের সঙ্গে অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা ইউক্রেনের সিকিউরিটি সার্ভিস (এসবিইউ) যোগাযোগ করছে।’
কিয়েভ বলছে, উত্তর কোরিয়ার সেনারা কুরস্ক অঞ্চলে লড়াই করছে। ইউক্রেন অঞ্চলটির কয়েকশ বর্গকিলোমিটার এখনো নিয়ন্ত্রণ করছে। কিয়েভ ও পশ্চিমা দেশগুলোর দাবি, উত্তর কোরিয়া রাশিয়াকে প্রচুর পরিমাণে আর্টিলারি শেল সরবরাহ করছে। তবে রাশিয়া উত্তর কোরিয়ার সেনাদের উপস্থিতি নিয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।’
জেলেনস্কি বলেন, ‘ইউক্রেনের বিশেষ বাহিনী ও প্যারাট্রুপারদের অভিযানে দুই সেনাকে আটক করা হয়। বিশেষ বাহিনী ড্রোনের মাধ্যমে পুরো অভিযান পরিচালনা করে। ড্রোনের একটি ভিডিওতে জঙ্গলের মধ্যে পাঁচজনকে দেখা গেছে। জেলেনস্কি আরো বলেন, ‘যুদ্ধবন্দিদের চিকিৎসা সহায়তা দেয়া হচ্ছে। শিগগিরই সাংবাদিকদের সঙ্গে তাদের সাক্ষাৎ করানো হবে।’
এসবিইউ প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, আটক দুই সেনার একজনের চোয়ালে ব্যান্ডেজ ও অন্যজন স্ট্র দিয়ে পানি পান করছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, একজনের মুখের আঘাত সারাতে ডেন্টাল চিকিৎসা প্রয়োজন এবং অন্যজনের পায়ে ফ্র্যাকচার রয়েছে।
এসবিইউ জানিয়েছে, আটক সেনাদের একজনের কাছে রাশিয়ার একটি সামরিক নথি পাওয়া গেছে। অন্যজনের কাছে কোনো নথি ছিল না। এ দুই সেনার জন্ম ২০০৫ ও ১৯৯৯ সালে। তারা যথাক্রমে ২০২১ ও ২০১৬ সাল থেকে উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনীতে কর্মরত। তবে ইউক্রেন তাদের পরিচয় এখনো প্রকাশ করেনি।
আন্তর্জাতিক আইন মেনেই আটক দুই সেনাকে চিকিৎসা সহায়তা দেয়া হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছে এসবিইউ। একই সঙ্গে তদন্ত চলছে তারা কোনো যুদ্ধাপরাধে জড়িত কিনা। কোরিয়ান ভাষায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার সাহায্য নেয়া হচ্ছে।