আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) প্রধান নাওয়াফ সালামকে লেবাননের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করেছেন দেশটির নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন। সংসদের অর্ধেকেরও বেশি সদস্যের সমর্থন পেয়েছেন নাওয়াফ সালাম। খবর আল জাজিরা।
গতকাল সোমবার (১৩ জানুয়ারি) নাওয়াফ সালামকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। আর এই ঘোষণা দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর দুর্বল অবস্থানকেই প্রতিফলিত করে। হিজবুল্লাহ বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতিকে আবারও এ পদে চেয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি ইসরায়েলের সঙ্গে ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ এবং সিরিয়ায় তাদের মিত্র বাশার আল-আসাদের পতনের পর হিজবুল্লাহর অবস্থান দুর্বল হয়ে যায়।
নাওয়াফ সালামকে লেবাননের প্রধানমন্ত্রী করাকে দেশটির রাজনীতিতে নতুন যুগের সূচনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। আল জাজিরার বৈরুত প্রতিনিধির মতে, সালাম রাজনীতিতে নতুন, তবে তিনি বহু বছর ধরে জাতিসংঘে রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং তার আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা রয়েছে। সালাম পরিবর্তনের প্রতীক। তাকে এমন বিরোধী ও স্বাধীন এমপিরা বেছে নিয়েছেন, যারা নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার পক্ষে। তারা এমন শাসকশ্রেণির বাইরে যেতে চেয়েছে যাদের বিরুদ্ধে বছরের পর বছর ধরে দেশ পরিচালনায় অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।
আইসিজের প্রধান নির্বাচিত হওয়ার পর গত বছর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার করা গণহত্যা মামলা এবং অন্যান্য ট্রাইব্যুনালের নেতৃত্ব দেয়ার মধ্য দিয়ে নাওয়াফ সালাম আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেন।
গত সপ্তাহে সেনাপ্রধান জেনারেল জোসেফ আউনের লেবাননের রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে নির্বাচিত হন। যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন পেয়েছেন তিনি। আর এ ঘটনা লেবাননের সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। দীর্ঘদিন ধরে এখানে নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করে আসছিল হিজবুল্লাহ।
জোসেফ আউনের প্রেসিডেন্ট হওয়ার মাধ্যমে দুই বছর ধরে দেশটির ক্ষমতার শূন্যতার অবসান ঘটেছে। পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় দেশটি ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে পরিচালিত হয়ে আসছিল।
সৌদি আরবের জোরালো চাপের পর গত বৃহস্পতিবার লেবাননের পার্লামেন্টে ভোটাভুটির মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন জোসেফ আউন। আর এরপরই দেশটির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী মনোনয়ন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।