গার্ডিয়ানের বিশ্লেষণ

নীরব আরব দেশগুলো, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একাই লড়ছে ইরান

বিবৃতি দিয়েই হাত গুটিয়ে নিয়েছে সৌদি আরব, বাহরাইন, মরক্কো, ওমান, কাতার, কুয়েতের মতো পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলো। প্রকাশ্যে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানালেও তারা মূলত ইরানকে দুর্বল হিসেবেই দেখতে চায়। বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশগুলো মূলত যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের মিত্রতার প্রলোভন থেকে সরতে পারছে না। এসব দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের অত্যাধুনিক সামরিক ও নজরদারি যন্ত্রপাতি পেতে আগ্রহী।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় নানাভাবে প্রভাব বিস্তার করে চলেছে ইঙ্গ-মার্কিন জোট। লিবিয়া, সিরিয়া, মিসর, ইরাকে গত ৬০-৭০ বছর ধরে যতো রাজনৈতিক অস্থিরতা ঘটেছে তা সবই এই জোটের ষড়যন্ত্র।

ইরানই একমাত্র দেশে ইঙ্গ-মার্কিন ষড়যন্ত্রের বাইরে গত চল্লিশ বছর নিজেকে গড়ে তুলেছে। পরমাণু শক্তিতে নিজেদের স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছে। আর তাতেই দেশটির ওপর বাড়ছিল পশ্চিমা ক্ষোভ। অবশেষে গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের মদদে ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। ইরানের পরমাণু বিশেষজ্ঞদের টার্গেট করে হত্যা করছে।

ইসরায়েলের নজিরবিহীন হামলায় সামরিকভাবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছে ইরান। হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশ একক বা জোটগতভাবে ইসরায়েলের নিন্দা জানিয়েছে। কিন্তু হামাস, হিজবুল্লাহ ও হুতিদের মতো তেহরানের সহায়তাপুষ্ট সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর অবস্থা বেশ দুর্বল হওয়ায় ইতিহাসের চরম এই ক্রান্তিকালে দেশটি এই মিত্রদের কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য কোনো সহায়তা পাচ্ছে না।

শুধু বিবৃতি দিয়েই হাত গুটিয়ে নিয়েছে সৌদি আরব, বাহরাইন, মরক্কো, ওমান, কাতার, কুয়েতের মতো পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলো। প্রকাশ্যে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানালেও তারা মূলত ইরানকে দুর্বল হিসেবেই দেখতে চায়। বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশগুলো মূলত যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের মিত্রতার প্রলোভন থেকে সরতে পারছে না। এসব দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের অত্যাধুনিক সামরিক ও নজরদারি যন্ত্রপাতি পেতে আগ্রহী। নিজেদের নিরাপত্তার জন্য তারা এসব গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে।

অন্যদিকে উপসাগরীয় অঞ্চলের অনেক দেশ ইরানকে নিজেদের জন্য হুমকি মনে করে। এসব হিসাব-নিকাশের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তারা অনেকটা নীরব প্রত্যক্ষদর্শীর ভূমিকা পালন করছে। উপসাগরীয় দেশগুলো দুই ধরনের শঙ্কায় রয়েছে। একদিকে তাদের অধিকাংশ দেশে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি আছে। ফলে বড় যুদ্ধ হলে ইরান এসব ঘাঁটিতে পাল্টা আঘাত হানতে পারে। অন্যদিকে যুদ্ধ বাধলে তেলের দাম, বাণিজ্যপথ ও অঞ্চলটির অনেক দেশের বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প হুমকিতে পড়বে।

আর তাই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একাই লড়ছে ইরান। তেল আবিবের হামলার কঠিন জবাব দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে শনিবার রাত থেকে ইসরায়েলের সামরিক অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে তেহরান।

আরও