ইসরায়েলের গাজায় সামরিক আগ্রাসনের প্রতিবাদে ও ইরানের প্রতিরোধের পক্ষে বিশ্বজুড়ে একযোগে ফেটে পড়েছে গণবিক্ষোভ। ব্রাজিল, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক শহরে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে এসে ইসরায়েলি নৃশংসতার প্রতিবাদ জানিয়েছে। সেই সঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলোর নীরব সমর্থনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিক্ষোভকারীরা। খবর তাসনিম নিউজ।
রোববার ব্রাজিলের সাও পাওলো শহরের প্রাকা রুজভেল্ট স্কোয়ারে জড়ো হন বিপুলসংখ্যক মানুষ। তারা গাজায় চলমান গণহত্যার অবসান দাবি করার পাশাপাশি ইসরায়েলের বোমাবর্ষণের তীব্র নিন্দা জানান। এই বিক্ষোভ থেকে ফিলিস্তিনের সঙ্গে সঙ্গে ইরানের প্রতিও সংহতি জানানো হয়। অনেকেই ব্রাজিল সরকারের প্রতি আহ্বান জানান যেন তারা তেল আবিবের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ব্রাজিলের সংসদ সদস্য, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা ও সুপরিচিত অধিকারকর্মী থিয়াগো আভিলা। আভিলা বলেন, সরকারগুলোর নীরবতা আর চলবে না, ইসরায়েলি বর্ণবৈষম্যমূলক শাসন ব্যবস্থা ভেঙে ফেলতেই হবে।
যুক্তরাজ্যের লন্ডনে পার্লামেন্ট স্কোয়ারে বিপুলসংখ্যক প্রো-প্যালেস্টাইন বিক্ষোভকারী জড়ো হন। তারা ইরানি পতাকা বহন করেন এবং ‘ইরানে বোমা হামলা বন্ধ করো’ বলে স্লোগান দেন। আয়োজক সংগঠন প্যালেস্টাইন সলিডারিটি ক্যাম্পেইন (পিএসসি) জানিয়েছে, তারা যুক্তরাজ্য সরকারের কাছে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা ও নেতানিয়াহুসহ শীর্ষ নেতাদের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে পিএসসি জানায়, ‘ইসরায়েল যখন ইরানে বড় আকারে হামলা চালাচ্ছে, তখন ব্রিটিশ সরকারের দায়িত্ব অত্যন্ত পরিষ্কার—সম্পূর্ণ অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা ও রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে।’
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসেও একটানা তিনদিন ধরে চলছে বিক্ষোভ। অংশগ্রহণকারীরা ইরান ও ফিলিস্তিনের পতাকা নিয়ে রাস্তায় নেমে ইসরায়েলের যুদ্ধাপরাধ এবং পশ্চিমা বিশ্বের সহানুভূতিশীল ভূমিকাকে তীব্রভাবে নিন্দা জানান। ফরাসি-ইরানি সাংবাদিক শাহিন হাজামি বিক্ষোভের ভিডিও প্রকাশ করেন। ইসরায়েলের হামলার পর ইরানের জবাবকে কেন্দ্র করে আনন্দ উদযাপনের ছবিও শেয়ার করেন তিনি।
বার্লিনে প্রায় ২ হাজার মানুষ ফিলিস্তিন ও ইরানের পক্ষে সমর্থন জানিয়ে একটি যৌথ সমাবেশে অংশ নেন। স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, বিক্ষোভ চলাকালে কয়েকজন সাংবাদিকের ওপর হামলা হয়, যা প্রো-ইসরায়েলি গোষ্ঠীর উসকানির ফল বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফরাসি রাজনৈতিক দল লা ফ্রঁস ইনসুমিস-এর কিছু সদস্যকেও ইরানি পতাকা বহন করতে দেখা যায়।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের টাইমস স্কয়ারে সোমবার একটি সমাবেশের ডাক দিয়েছে ব্রঙ্কস অ্যান্টি-ওয়ার কোয়ালিশন নামের একটি সংগঠন। ‘ইরানের প্রতি সংহতি’ শিরোনামের এই বিক্ষোভে সংগঠনটি ওয়াশিংটনের সাম্রাজ্যবাদী নীতির বিরুদ্ধে ও ইসরায়েলের আগ্রাসনের প্রতিবাদে সরব হবে। পশ্চিম এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ বন্ধের দাবি তাদের।