অস্ট্রেলিয়ার সৈকতে আটকা দেড়শর বেশি তিমি, অন্তত ৬০টির মৃত্যু

বিভাগীয় মুখপাত্র ব্রেনডন ক্লার্ক গণমাধ্যমকে বলেন, প্রাথমিক মূল্যায়নে দেখা গেছে যে, তিমিগুলোকে পুনরায় সমুদ্রে ভাসিয়ে দেয়া কঠিন হবে। কারণ স্থানটি দুর্গম, মহাসাগরের অবস্থাও প্রতিকূল, এবং বিশেষায়িত সরঞ্জাম সেখানে পৌঁছানো অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং।

অস্ট্রেলিয়ার একটি দুর্গম সমুদ্র সৈকতে গণহারে আটকে পড়েছে ১৫০ এর বেশি ফলস কিলার হোয়েল প্রজাতির তিমি। এর মধ্যে ৬০ এর বেশি তিমি মারা গেছে। স্থানীয় কর্মকর্তারা বাকি তিমিগুলোকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। খবর বিবিসি।

তাসমানিয়ার প্রাকৃতিক সম্পদ ও পরিবেশ বিভাগ জানিয়েছে যে, ১৫৭টি তিমির একটি দল দ্বীপের উত্তর-পশ্চিমের আর্থার নদীর কাছে সৈকতে আটকা পড়েছে। সেখানে প্রায় ৯০টি তিমি এখনো বেঁচে আছে। তার মধ্যে কয়েকটি তিমি অপ্রাপ্তবয়স্ক বলে জানায় প্রত্যক্ষদর্শীরা। সংরক্ষণ বিশেষজ্ঞ ও পশু চিকিৎসকরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছেন। কোনো তিমিকে সমুদ্রে ফিরিয়ে দেয়া সম্ভব কিনা তা যাচাই করছেন তারা।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাসমানিয়ায় একাধিক গণ তিমি আটকের ঘটনা ঘটেছে—যার মধ্যে আছে ২০২০ সালে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক তিমি আটকে পড়ার ঘটনা। তবে ফলস কিলার হোয়েল প্রজাতির তিমি সেখানে গত ৫০ বছরে এইভাবে আটকা পড়েনি।

ফলস কিলার হোয়েল আসলে ডলফিনের সবচেয়ে বড় প্রজাতিগুলোর একটি। তারা দেখতে ওরকার মতো। এই প্রজাতির তিমি ৬ মিটার পর্যন্ত লম্বা ও দেড় টন পর্যন্ত ওজনের হতে পারে।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই তিমির দল প্রায় ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা ধরে ওই এলাকায় আটকা পড়ে রয়েছে। তাই তাদের বাঁচানো বেশ কঠিন হবে।

বিভাগীয় মুখপাত্র ব্রেনডন ক্লার্ক গণমাধ্যমকে বলেন, প্রাথমিক মূল্যায়নে দেখা গেছে যে, তিমিগুলোকে পুনরায় সমুদ্রে ভাসিয়ে দেয়া কঠিন হবে। কারণ স্থানটি দুর্গম, মহাসাগরের অবস্থাও প্রতিকূল, এবং বিশেষায়িত সরঞ্জাম সেখানে পৌঁছানো অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং।

প্রাণী কল্যাণকে অগ্রাধিকার দেয়া হলেও উদ্ধারকারী দলের নিরাপত্তা এবং সুস্থতা নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে। ব্রেন্ডন ক্লার্ক বলেন, জোয়ারের পানি উত্তাল এবং জলস্রোত আছে। তাই প্রাণীদের সরাসরি সেই জলস্রোতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা চ্যালেঞ্জিং হবে। পাশাপাশি অবশ্যই আমাদের কর্মীদের জন্যও রয়েছে নিরাপত্তা ঝুঁকি। হাঙরও একটি উদ্বেগের বিষয়।

কর্তৃপক্ষ জনসাধারণকে ঘটনাস্থল এড়িয়ে চলতে বলেছে এবং রাস্তাঘাটে প্রবেশাধিকার সীমিত করা হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ার সৈকতে তিমি আটকে পড়ার ঘটনার ৮০ শতাংশই ঘটে তাসমানিয়ায়, বিশেষ করে এর পশ্চিম উপকূলে। ২০২০ সালে ম্যাককোয়ারি বন্দরে প্রায় ৪৭০টি পাইলট তিমি আটকা পড়েছিল। সেবার উদ্ধার প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তাদের মধ্যে প্রায় ৩৫০টি মারা গিয়েছিল। ২০২২ সালে আরো ২০০টি তিমি একই বন্দরে আটকা পড়েছিল।

আরও