ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যার একটি সম্ভাব্য সুযোগ নাকচ করে দিয়েছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গেলো দিনেই একাধিক পশ্চিমা সূত্র দাবি করেছে, সাম্প্রতিক এক ইসরায়েলি পরিকল্পনায় খামেনিকে হত্যা করার কথা চিন্তা হয়েছিল। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাতে অনুমতি দেননি।
তবে ৮৬ বছর বয়সী এই ধর্মীয় নেতা এখনো ইসরায়েলের নিশানায় আছেন বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। প্রাণভয়ে তিনি আশ্রয় নিয়েছেন রাজধানী তেহরানের উত্তর-পূর্বে লাভিজান এলাকার একটি গোপন ভূগর্ভস্থ বাঙ্কারে।
লন্ডনভিত্তিক পার্সি ভাষার গণমাধ্যম ‘ইরান ইন্টারন্যাশনাল’কে দেশটির একটি সূত্র জানায়, গত শুক্রবার ইসরায়েলের হামলার পরপরই খামেনিকে ওই বাঙ্কারে সরিয়ে নেওয়া হয়। তার সঙ্গে রয়েছেন ছেলে মোজতবা খামেনিসহ পরিবারের ঘনিষ্ঠ সদস্যরা। মোজতবা-ই পরবর্তী নেতা হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছেন।
তেহরানে ইসরায়েলি হামলার পর সর্বশেষ গত ১৩ জুন শুক্রবার খামেনিকে টেলিভিশনে দেখা গেছে। সেদিন একটি অজ্ঞাত স্থান থেকে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছেন তিনি। পাশে ছিল ইরানের জাতীয় পতাকা ও ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের নেতা রুহুল্লাহ খোমেইনির প্রতিকৃতি।
‘দ্য ইকোনমিস্ট’ সাময়িকীর প্রতিরক্ষা সম্পাদক শশাঙ্ক জোশি বিবিসির নিউজকাস্টে বলেন, আমি মনে করি খামেনি প্রকাশ্যে আসবেন না। ইসরায়েল তাদের ভেতরে অনুপ্রবেশ করেছে— এটি ইরান বুঝতে পেরেছে। এখন তারা চারপাশ থেকে সমস্ত সম্ভাব্য নিরাপত্তা পর্যালোচনা করছে, এমনকি তাকে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে সরিয়ে নেওয়ার কথাও ভাবছে।
ইরানের এই শঙ্কা অনর্থক নয়। খামেনির ওপর হামলার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তাকে হত্যা করা হলে সংঘাত বাড়বে না, বরং শেষ হবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
সোমবার এবিসি নিউজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেন, আমরা প্রয়োজনীয় কাজটাই করছি। আমি বিশদে যেতে চাই না, তবে আমরা তাদের শীর্ষ পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য করেছি। এটি কার্যত হিটলারের পারমাণবিক দল। নেতানিয়াহু দাবি করেন, ইরানি শীর্ষ নেতৃত্বকে টার্গেট করলেও তা সংঘাতকে উসকে দেবে না; বরং সেটাই হবে যুদ্ধের পরিসমাপ্তির পথ।
তবে বিশ্লেষকদের মতে, খামেনিকে হত্যা করা হলে তা ইরানের রাজনৈতিক কাঠামোয় বিপুল অস্থিরতা তৈরি করবে। ভেঙে পড়বে অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার ভারসাম্য। এ ধরনের হামলার সফলতা নির্ভর করবে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার নির্ভুল অবস্থান শনাক্তকরণ ও বিমানবাহিনীর সক্ষমতার ওপর।