গাজায় ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের প্রথম নয় মাসে মৃত্যুর সংখ্যা সরকারি হিসাবের চেয়ে ৪০ শতাংশ বেশি হতে পারে। ল্যানসেট মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় এ দাবি করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে এ সংঘাতে ৬৪ হাজার ২৬০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। যার মধ্যে ৫৯ দশমিক ১ শতাংশই নারী, শিশু ও ৬৫ বছরের বেশি বয়সী মানুষ। খবর দ্য গার্ডিয়ান।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত বছরের জুন পর্যন্ত যুদ্ধে ৩৭ হাজার ৮৭৭ জন নিহত হয়েছে। কিন্তু ল্যানসেটের গবেষণায় দেখা গেছে, এ সংখ্যা প্রকৃত মৃত্যুর তুলনায় অনেক কম। গবেষণার হিসাবে, মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা যুদ্ধপূর্ব গাজার জনসংখ্যার প্রায় ২ দশমিক ৯ শতাংশ। অর্থাৎ প্রতি ৩৫ জনে একজন মারা গেছে।
এ গবেষণায় ‘ক্যাপচার-রিক্যাপচার’ নামে একটি পরিসংখ্যান পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য, অনলাইন জরিপ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত মৃত্যু সংবাদের ভিত্তিতে এ হিসাব করা হয়েছে। গবেষণা অনুযায়ী, ৫৫ হাজার ২৯৮ থেকে ৭৮ হাজার ৫২৫ জন নিহত হয়েছে। তবে গবেষণার সর্বোত্তম অনুমান বলছে, নিহতের সংখ্যা ৬৪ হাজার ২৬০। প্যালেস্টাইন সেন্ট্রাল ব্যুরো অব স্ট্যাটিসটিকস জানিয়েছে, এ হিসাব ছাড়াও আরো ১১ হাজার মানুষ নিখোঁজ রয়েছে। তাদের সবাইকে মৃত বলে ধরে নেয়া হচ্ছে।
গবেষক দলের প্রধান ও লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের মহামারী–বিশেষজ্ঞ জেইনা জামালউদ্দিন জানিয়েছেন, শুধু আত্মীয়-স্বজন ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নিশ্চিত করা মৃত্যুগুলোই হিসাবে ধরা হয়েছে। অন্যদিকে ইসরায়েলের এক শীর্ষ কর্মকর্তা এ গবেষণার তথ্যকে অসামঞ্জস্যপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন। তবে জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা এ পরিসংখ্যানকে বিশ্বাসযোগ্য মনে করছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। জবাবে গাজায় নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েল। শুরু থেকে এ যুদ্ধে কত ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে, তা নিয়ে বিতর্ক চলছে। গাজা যুদ্ধ এরই মধ্যে ১৫ মাস পূর্ণ হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার গাজায় নিহত মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৬ হাজার ৬-এ।