ইসরায়েলের তেল আবিব ও হাইফা শহরে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বহু বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে। ইসরায়েলের জরুরি চিকিৎসাসেবা সংস্থা ‘মাগেন ডেভিড আদম’ (এমডিএ) আজ সোমবার জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের চারটি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আটজন নিহত হয়েছেন এবং অন্তত ৮৭ জন আহত হয়েছেন। খবর গার্ডিয়ান, রয়টার্স ও এপি।
বর্তমান পরিস্থিতিতে চলমান ইসরায়েল-ইরান সংঘাত মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে আরো ব্যাপক যুদ্ধে রূপ নিতে পারে বলে চলতি সপ্তাহেই জি-৭ জোটের বৈঠক চলাকালে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর নেতারা।
তেল আবিবের কাছাকাছি অবস্থিত পেতাহ তিকভা শহরের কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে গার্ডিয়ান জানিয়েছে, সেখানে একটি আবাসিক ভবনে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানায় কংক্রিটের দেয়াল পুড়ে যাওয়ার পাশাপাশি একাধিক ফ্ল্যাট গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
উত্তরাঞ্চলীয় বন্দরনগরী হাইফায় প্রায় ৩০ জন আহত হয়েছেন। সেখানে উদ্ধার তৎপরতা চালানো হ্চ্ছে বলে জরুরি সেবা সংস্থাগুলো জানিয়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, হাইফা বন্দরের কাছে একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে।
ইরানের রাষ্ট্রায়াত্ত্ব টেলিভিশন চ্যানেলে দাবি করা হয়েছে, দেশটি থেকে ইসরায়েলের দিকে অন্তত ১০০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ও সামরিক নেতৃত্বের ওপর ইসরায়েলের আকস্মিক হামলার প্রতিশোধ হিসেবে চালানো এ হামলা চালানো হয়েছে।
ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডস বাহিনীর দাবি, সর্বশেষ এ হামলায় এমন কৌশল ব্যবহার করা হয়েছে, যার ফলে ইসরায়েলের বহুস্তরীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিজেদেরই আঘাত করতে শুরু করে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান প্রয়াস নিয়েও এ দাবির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি। এ বিষয়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কাছ থেকেও তাৎক্ষণিকভাকে কোনো জবাব পায়নি তারা।
ইসরায়েলি কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছেন, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শতভাগ নিশ্ছিদ্র নয় এবং সামনে আরো কঠিন সময় আসতে পারে।
এর আগে রোববার ইসরায়েলের চালানো হামলায় ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডস বাহিনীর গোয়েন্দা প্রধান মোহাম্মদ কাজেমি ও আরো দুই কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ইরানী রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনা।
রোববার রাতেই ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা ইরানে ভূমি-থেকে-ভূমিতে (সারফেস টু সারফেস) নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটিতে হামলা চালাচ্ছে।
আজ সোমবারের আগ পর্যন্ত ইসরায়েলে ইরানের হামলায় অন্তত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দেশটির স্থানীয় কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে। অন্যদিকে ইরানি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত ইরানে মৃত্যু হয়েছে ২২৪ জনের, যাদের প্রায় ৯০ শতাংশই বেসামরিক নাগরিক।