দক্ষিণ আফ্রিকার একটি পরিত্যক্ত স্বর্ণখনিতে শতাধিক শ্রমিকের আটকা পড়ার ঘটনায় অন্তত ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে মাইনিং অ্যাফেক্টেড কমিউনিটিস ইউনাইটেড ইন অ্যাকশন (ম্যাকুয়া) গোষ্ঠী। শ্রমিকদের উদ্ধারে চলছে অভিযান। উদ্ধারকারীরা অবৈধ স্বর্ণখনিটি থেকে এ পর্যন্ত কয়েকটি মৃতদেহ বের করে এনেছে। খবর এএফপি।
জোহানেসবার্গ থেকে প্রায় ১৪০ কিলোমিটার (৯০ মাইল) দক্ষিণ-পশ্চিমে স্টিলফন্টেইনের কাছে অবস্থিত এই বাফেলসফন্টেইন স্বর্ণখনি। গত সোমবার (১৩ জানুয়ারি) পেশাদার একটি খনি উদ্ধারকারী দল খনির ভেতরে শ্যাফটে বড় একটি খাঁচা পাঠায়। দক্ষিণ আফ্রিকান ন্যাশনাল সিভিকস অর্গানাইজেশনের মুখপাত্র মজুকিসি জাম সাংবাদিকদের বলেন, উদ্ধারকাজ ভালোভাবে চলছে। এ পর্যন্ত সাতজনকে উপরে ওঠানো হয়েছে।
মাইনিং অ্যাফেক্টেড কমিউনিটিস ইউনাইটেড ইন অ্যাকশন (ম্যাকুয়া) গোষ্ঠীর মুখপাত্র সাবেলো মঙ্গুনি জানান, শুক্রবার উদ্ধারকৃত কিছু খনি শ্রমিকের সঙ্গে উপরে আনা একটি মোবাইল ফোনে দুইটি ভিডিও পাওয়া গেছে, যেখানে মাটির নিচে প্লাস্টিকে মোড়ানো ডজন ডজন মৃতদেহ দেখা গেছে। মঙ্গুনি বলেন, খনিতে অন্তত ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মতে, শ্রমিকরা সম্ভবত অনাহার বা পানিশূন্যতায় মারা গেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, খনি শ্রমিকরা গ্রেফতার হওয়ার ভয়ে বাফেলসফন্টেইন স্বর্ণখনি থেকে বের হতে চাচ্ছে না। তবে সাবেলো মঙ্গুনি বলেছেন, পুলিশ শ্রমিকদের ওঠা-নামার জন্য ব্যবহৃত দড়ি এবং পালি ব্যবস্থা সরিয়ে দেয়ার পর তারা মাটির নিচে আটকা পড়ে আছেন।
শুক্রবার একটি সামাজিক উদ্যোগে পরিচালিত অভিযানে নয়টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গুনি আরো জানান, সোমবার কর্তৃপক্ষের পরিচালিত একটি সরকারি উদ্ধার অভিযানে আরো নয়টি মৃতদেহ এবং ২৬ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার পুলিশ বিভাগের মুখপাত্র সাবাটা মকগওয়াবোনে জানান, কতগুলো মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে এবং কতজন জীবিত উদ্ধার হয়েছে, সে বিষয়ে তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ এখনো খনি থেকে সকল জীবিত শ্রমিককে উদ্ধার করার আশা করছে।
দুই মাস আগে শ্রমিকদের বের করে এনে খনি বন্ধ করে দেয়ার প্রথম প্রচেষ্টার পর থেকে এই ঘটনা পুলিশ এবং শ্রমিকদের মধ্যে অচলাবস্থার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে।
ম্যাকুয়ার কর্মকর্তা ম্যাগনিফিসেন্ট মান্দেবেলে জানান, শ্যাফটটি ২ কিলোমিটার (১.২ মাইল) গভীর। মানুষের পক্ষে দড়ি বা অন্য কোনো ব্যবস্থা ছাড়া উপরে ওঠা অসম্ভব।