একসময় প্রধান অর্থকরী ফসল ছিল পাট। তবে দিন দিন দাম কমে যাওয়ায় পাট চাষ কমিয়ে দিয়েছেন ঝিনাইদহের কৃষক। কয়েক বছরে অনুকূল পরিবেশ ও পাটের বাজার দর ভালো হওয়ায় চাষও কিছুটা বেড়েছিল। এক বিঘা জমিতে স্বাভাবিকভাবে আগের বছরগুলোয় পাট উৎপাদন হয়েছে ১৫-১৬ মণ। তবে চলতি মৌসুমে খরার কারণে উৎপাদন নেমে এসেছে অর্ধেকে। কৃষক বলছেন, এবার বিঘাপ্রতি ৮-১০ মণ পাট পাওয়া যাচ্ছে। এক বিঘা জমিতে পাট চাষ করতে খরচ হয় ২৫-২৮ হাজার টাকা। প্রকারভেদে বাজারে প্রতি মণ পাট বিক্রি হচ্ছে আড়াই-তিন হাজার টাকা। তবে উৎপাদন অর্ধেকে নেমে আসায় প্রতি বিঘায় প্রায় ৫ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২২ হাজার ৫২৪ হেক্টর জমি। সেখানে চাষ হয়েছে ২১ হাজার ৪৪৬ হেক্টরে।
পাটচাষীরা জানান, এ বছর অতিমাত্রায় খরাসহ বিভিন্ন কারণে পাটের ফলন বিপর্যয় হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রায় দেড় হাজার হেক্টর কম জমিতে পাট চাষ হয়েছে। পাটের বীজ বপন থেকে শুরু করে বিক্রি পর্যন্ত প্রস্তুত করতে অন্যান্য বছরের তুলনায় খরচও এবার বেশি হয়েছে। প্রকারভেদে বাজারে প্রতি মণ পাট আড়াই-তিন হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। খরচের তুলনায় দাম কম হওয়ায় লোকসানের কারণে পাট চাষে আগ্রহ হারাবেন কৃষক।
সদর উপজেলার হাটগোপালপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল আজিজ খান বলেন, ‘পাট চাষে আমাদের লোকসান হয়েছে। এক বিঘা জমিতে পাট চাষ করতে খরচ হচ্ছে প্রায় ২৫-২৮ হাজার টাকা। কিন্তু পাটের তো ফলন নেই। ফলন না থাকায় প্রতি বিঘায় ১০ মণের বেশি পাট পাওয়া যাচ্ছে না। উৎপাদন কমে যাওয়ায় আমাদের লোকসান হচ্ছে। সরকার যদি পাটের দাম একটু বাড়ায় তাহলে চাষীরা কিছুটা স্বস্তি পাবেন।’
প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহার কমানো ও পাটজাত পণ্যের ব্যবহার বাড়ানোর পাশাপাশি বিদেশে রফতানির ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পাট ব্যবসায়ী আব্দুল গাফফার।
ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘পাট চাষে খরচ কমাতে ও ফলন বাড়াতে কৃষি বিভাগ থেকে কারিগরি বিভিন্ন পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। সরকারিভাবে পাট ক্রয় শুরু হলে কৃষক তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন।’