সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, ‘২০০৯ সালে তরুণ সমাজের সমর্থনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ বিজয় পেয়েছিল। এখন হাইস্কুলের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া, সবাই আওয়ামী লীগের বিপক্ষে। কেন এমন ঘটল, কী ঘটল।’
গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে সৃষ্ট অচলাবস্থা নিরসনের দাবিতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সুজন।
কোটা আন্দোলনকে রোগের উপসর্গ উল্লেখ করে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘রোগটা আরো গুরুতর। জটিল ও ভয়াবহ রোগটা হচ্ছে ক্ষমতাসীন দলের কাছের না হলে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে। ভোটাধিকার, আইনের শাসনের মতো মৌলিক নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে। এ অধিকারগুলো সমন্বিত। একটা বঞ্চিত হলে আরেকটা থেকেও বঞ্চিত হতে হয়।’
সংকট নিরসনে আন্তরিক বা কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘সরকার একটা প্রলেপ দেয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু যে ক্ষত জাতির হৃদয়ে হয়েছে সেটা গভীর। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ঘিরে যে ঘটনা, তা পুরো সমাজকেই প্রভাবিত করেছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দিয়ে জনগণকে স্বস্তির জায়গায় আনা যাবে না।’
এত মানুষের প্রাণ নেয়ার ঘটনাকে ক্ষমা করার সুযোগ নেই জানিয়ে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘এবার বিচার না পেলে বাংলাদেশ থেকে বিচার শব্দটা একেবারে উঠে যাবে।’
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে দেশে গণ-অভ্যুত্থান হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস। তিনি বলেন, ‘এ আন্দোলনে সরকারের নৈতিক ও রাজনৈতিক পরাজয় হয়েছে। ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানে ৬১ জন মারা গিয়েছিল। তার চার গুণ মানুষ মারা গেছে ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানে।’
রোবায়েত ফেরদৌস আরো বলেন, ‘অনেকে দ্বিধায় ভোগেন আওয়ামী লীগ চলে গেলে কি বিএনপি-জামায়াত আসবে? আওয়ামী লীগ ব্যর্থ হয়েছে, বিএনপিকেও দেখেছি। জামায়াত-জাতীয় পার্টিকেও দেখেছি। সব রাজনৈতিক দল গণধিকৃত হলে সবাইকে প্রত্যাখ্যান করতে হবে। নতুন সংবিধান লিখতে হবে।’