শিক্ষার্থী হত্যা, নির্বিচারে গ্রেফতার ও শিক্ষক লাঞ্চিতের ঘটনায়
সারা দেশের সঙ্গে সমন্বয় করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে ‘রিমেম্বারিং আওয়ার
হিরোজ’ কর্মসূচি হিসেবে দেয়াল লিখন ও গ্রাফিতি অংকন করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের
শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্ত্বরে
এ গ্রাফিতি অংকন করেন তারা। এ সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের
কয়েকজন শিক্ষক কর্মসূচিতে যোগ দেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্ত্বরের সামনে কাপড় বিছিয়ে
গ্রাফিতির মাধ্যমে বিভিন্ন চিত্র অংকন করছেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও সৈয়দ নজরুল ইসলাম
প্রশাসন ভবনের সামনে ও পশ্চিম পাশের দেয়ালেও বিভিন্ন প্রতিবাদী লেখা ও চিত্র অংকন করতে
দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। এখানে সংবাদপত্রে ছাপা পুলিশী নির্যাতনের ছবি সংবলিত পোস্টার
আঁকেন তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী হাবিব বলেন, সারা
দেশের সঙ্গে সমন্বয় করে শান্তিপূর্ণভাবে আমরা গ্রাফিতি ও দেয়াল লিখনের কাজ করছি। এখানে
বর্তমান পরিস্থিতিতে আমার ভাইদের ওপর যে নির্যাতন করা হচ্ছে সেই বিষয় ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে।
কর্মসূচিতে অংশ নেয়া আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড. ইফতেখারুল আলম মাসউদ
বলেন, ছাত্র-ছাত্রীরা দেশের সাম্প্রতিক ছাত্রহত্যা ও গণগ্রেফতার এবং তাদের ৯ দফার সমর্থনে
আজ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্ত্বরে গ্রাফিতি অংকন করার কর্মসূচি ঘোষণা
করেছিল। কিন্ত পুলিশ তাদের ক্যাম্পাসে ঢুকতে বাধা প্রদান করে। এক পর্যায়ে ছাত্র-ছাত্রীরা
জোর করেই ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে এবং শিক্ষকদের একটি কর্মসূচিতে অংশ নেয়। এরপর পুলিশ
অত্যন্ত বেপরোয়াভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর হামলা করে শিক্ষকদের সামনে থেকে টেনে হেচড়ে
ছাত্র-ছাত্রীদের গ্রেফতার করতে উদ্যত হয়। উপস্থিত শিক্ষক ও সংবাদকর্মীদের চাপে শেষ
পর্যন্ত তারা মুক্ত হয়।
তিনি বলেন, ছাত্র-ছাত্রীরা সংক্ষিপ্তভাবে হলেও তাদের গ্রাফিতি কর্মসূচি
পালন করেছে। আমি তাদের এ শান্তিপূর্ণ ও সৃজনশীল প্রতিবাদ কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা
ঘোষণার জন্যই এখানে এসেছি। তাদের ভিন্নধর্মী সাহসী এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। ছাত্র-ছাত্রীরা
তাদের সহপাঠীদের হত্যাকারীদের বিচার চেয়ে এবং দেশের বর্তমান কর্তৃত্ববাদের বিরুদ্ধে
রংতুলির মাধ্যমে যে প্রতিবাদ জানিয়েছে তা অত্যন্ত গঠনমূলক এবং সৃজনশীল।