পাইকারিতে ভোজ্যতেলের দাম এখনো ঊর্ধ্বমুখী

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে কয়েক দিন ধরে ঊর্ধ্বমুখী দেশের ভোজ্যতেলের বাজার।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে কয়েক দিন ধরে ঊর্ধ্বমুখী দেশের ভোজ্যতেলের বাজার। এর মধ্যে সীমিত পরিসরে ব্যাংকসেবা ও পণ্যবাহী যান চলাচল শুরু হলেও সংকট কাটেনি। পাইকারিতে ভোজ্যতেলের বাজার ঊর্ধ্বমুখীই রয়ে গেছে। আর পাইকারি বাজারে দাম বাড়ায় খুচরা বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে। 

দেশে ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত সপ্তাহে মাত্র দুদিন ব্যাংকসেবা সীমিত পরিসরে চালু থাকলেও লেনদেনের পরিমাণ ছিল খুবই কম। ক্লিয়ারিং চেকের নগদায়ন হার কম থাকায় চাহিদা অনুযায়ী পাওনাদারের দাবি পরিশোধ করতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। এ কারণে আগের সপ্তাহের মতোই চলতি সপ্তাহের শুরুতেও ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে। গত চারদিনের ব্যবধানে ভোজ্যতেলের দাম দ্বিতীয় দফায় বেড়েছে মণপ্রতি (৩৭ দশমিক ৩২ কেজি) প্রায় ১০০-১২০ টাকা। নগদে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ার পাশাপাশি ডিও ভোজ্যতেলের দামও প্রায় সমপরিমাণ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। 

খাতুনগঞ্জের ট্রেডিং প্রতিষ্ঠানের দেয়া তথ্যে জানা গেছে, গতকাল পাইকারি বাজারে মণপ্রতি পাম অয়েল বেচাকেনা হয়েছে ৪ হাজার ৯২০ থেকে ৪ হাজার ৯৩০ টাকায় (ডিও)। মিলগেট থেকে সরাসরি উত্তোলনযোগ্য প্রতি মণ পাম অয়েল বেচাকেনা হয়েছে ৫ হাজার ২০ টাকায়। আগের সপ্তাহেও একই মানের পাম অয়েলের দাম ছিল (ডিও) ৪ হাজার ৮২০ টাকা। আর রেডি পাম অয়েলের দাম ছিল মণপ্রতি ৪ হাজার ৯১০ থেকে ৪ হাজার ৯২০ টাকা। অন্যদিকে গতকাল মণপ্রতি সুপার পাম অয়েলের ডিও বেচাকেনা হয়েছে ৫ হাজার ১০ টাকায় ও রেডি সুপার পাম অয়েল বেচাকেনা হয়েছে ৫ হাজার ১২০ টাকায়।

পাইকারি বাজারে সয়াবিন তেলের দামও মণপ্রতি ১১০-১২০ টাকা বেড়েছে। খাতুনগঞ্জের ট্রেডিং প্রতিষ্ঠান জানায়, গতকাল প্রতি মণ সয়াবিন তেল বেচাকেনা হয়েছে ৫ হাজার ৭০০ থেকে ৫ হাজার ৭৫০ টাকায় (ডিও)। মিল গেট থেকে সরাসরি উত্তোলনযোগ্য সয়াবিন তেল বেচাকেনা হয়েছে মণপ্রতি প্রায় ৬ হাজার টাকায়। 

এ বিষয়ে খাতুনগঞ্জের ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক বণিক বার্তাকে জানান, দেশে চলমান পরিস্থিতির কারণে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে দেশের ভোগ্যপণ্যের বাজার অস্থিতিশীল। ব্যাংকিং চ্যানেলে লেনদেনের সমস্যার কারণে পণ্য বিক্রি ও সরবরাহ করতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। মিলগেট থেকে সংগ্রহ করা ভোজ্যতেলের দাম সবচেয়ে বেশি বেড়েছে, যার কারণে খুচরা পর্যায়ে খোলা ভোজ্যতেলের দাম লিটার বা কেজিপ্রতি কয়েক টাকা পর্যন্ত বাড়তে পারে। মিল থেকে দীর্ঘ দূরত্বে যানবাহন চলাচল এখনো স্বাভাবিক না হওয়ায় ভোজ্যতেলের দাম বাড়ছে। 

জানা গেছে, দেশে এখনো সরকার নির্ধারিত দামেই বোতলজাত ভোজ্যতেল অর্থাৎ সয়াবিন তেল বেচাকেনা হচ্ছে। তবে পাম অয়েল, সুপার পাম অয়েল ও পাম অয়েলের দাম সরকার নির্ধারণ করলেও সাম্প্রতিক সময়ে বাজার অস্থিতিশীল থাকায় সরকার নির্ধারিত দামে এসব ভোজ্যতেল বেচাকেনা হচ্ছে না। 

আরও