রাশিয়া থেকে শস্য ও শস্যজাত পণ্যের আমদানি ২২ গুণ বেড়েছে ভারতের। ২০২৩-২৪ শস্য উৎপাদন মৌসুমে রাশিয়া থেকে দেশটি মোট ৮ কোটি ৯৩ লাখ টন শস্য ও শস্যজাত পণ্য আমদানি করেছে, যা এর আগের মৌসুমের তুলনায় ২১ শতাংশ বেশি। সম্প্রতি এ তথ্য জানিয়েছে রাশিয়ার কৃষি পর্যবেক্ষণ সংস্থা। খবর রয়টার্স।
কৃষি পর্যবেক্ষণ সংস্থার ডাটা অনুযায়ী, রাশিয়া থেকে ইন্দোনেশিয়ার শস্য ও শস্যজাত পণ্য আমদানি আট গুণ বেড়েছে। তিউনিসিয়ার বেড়েছে তিন গুণ।
অন্যদিকে রাশিয়ার কৃষি মন্ত্রণালয় জানায়, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে রাশিয়া ভারতের চতুর্থ বৃহত্তম কৃষিপণ্য রফতানিকারক ছিল।
এছাড়া রয়টার্সকে দেয়া এক পৃথক মন্তব্যে রাশিয়ার কৃষি পর্যবেক্ষণ সংস্থা জানায়, ২০২৩-২৪ মৌসুমে মটর আমদানিতে ঊর্ধ্বমুখিতা ভারতের সর্বমোট শস্য ও শস্যজাত পণ্যের আমদানি বাড়াতে প্রধান ভূমিকা পালন করেছে। এ মৌসুম থেকেই মূলত রাশিয়া ভারতে মটর রফতানি শুরু করেছে। এছাড়া এ সময় ভারতে দেশটির মসুর ডালের রফতানি তিন গুণ বেড়েছে।
প্রতিবেদন থেকে আরো জানা যায়, এ মৌসুমে রাশিয়া থেকে যবের সামগ্রিক রফতানি ৬৭ শতাংশ ও ভুট্টার রফতানি ৩১ শতাংশ বেড়েছে।
গত সোমবার রাশিয়া সফরের উদ্দেশে মস্কো পৌঁছান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সফরকালে নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মূল আলোচ্য সূচি ছিল অর্থনৈতিক সহযোগিতা।
চলতি বছরের শুরুতে ভারতের মোট সার আমদানির এক-তৃতীয়াংশ সরবরাহ করেছিল রাশিয়া। সফরকালে ভারতীয় কৃষকদের জন্য সারের প্রয়োজনীয় সরবরাহে সহায়তা করার জন্য নরেন্দ্র মোদি প্রেসিডেন্ট পুতিনকে ধন্যবাদ জানান।
ক্রেমলিনে একটি বৈঠকের সময় নরেন্দ্র মোদি ভ্লাদিমির পুতিনের উদ্দেশে বলেন, ‘আমাদের বন্ধুত্বের জন্য ধন্যবাদ, আমরা ভারতীয় কৃষকদের সমস্যার সমাধান করতে পেরেছি। এটি আমাদের বন্ধুত্বের একটি বিশেষ ভূমিকা।’
মঙ্গলবার ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা জানান, রাশিয়া ও ভারত ২০৩০ সালের মধ্যে একটি ১০ হাজার কোটি ডলারের
দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। বর্তমানে এ লক্ষ্যমাত্রার পরিমাণ ৬ হাজার ৫০০ কোটি ডলার।
এদিকে আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বৈশ্বিক খাদ্যশস্য উৎপাদন চলতি বছর বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব অপারেটিভ মিলার্স ইউরেশিয়া। এ সময় বিশ্বব্যাপী খাদ্যশস্য উৎপাদন গত বছরের তুলনায় ৮০ লাখ টন বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে চলতি বছর বৈশ্বিক খাদ্যশস্য উৎপাদন ও রফতানি নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। এমনকি গত বছর খাদ্যশস্যের দামও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়ে গিয়েছিল। তবে কৃষ্ণ সাগরীয় দেশগুলোর ব্ল্যাক সি গ্রেইন ইনিশিয়েটিভের কারণে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ খাদ্যশস্য আমদানি-রফতানিতে তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি।