মৌসুমি ফল আবাদ ও উৎপাদনে বড় ভূমিকা রেখে আসছে পার্বত্যাঞ্চল। তিন পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের পাহাড়ে বিভিন্ন ধরনের ফল উৎপাদন হয় বছরজুড়ে। গ্রীষ্মকালীন ফল হিসেবে আম, কাঁঠাল ও আনারসের মৌসুম এখন। বছরজুড়ে যেসব ফল উৎপাদন হয়; তার এক-তৃতীয়াংশ হয় এ মৌসুমে। বাণিজ্যিকভাবে ফলের বাগান বাড়ায় পাহাড়ে মৌসুমি ফলের উৎপাদনও বাড়ছে। চলতি মৌসুমে সাত লাখ টন ফল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে কৃষি বিভাগের।
কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, তিন পার্বত্য জেলায় বছরজুড়ে প্রায় ৪৫ ধরনের দেশী-বিদেশী ফল উৎপাদন হচ্ছে। এর মধ্যে বেশকিছু ফল বারোমাসি অর্থাৎ বছরজুড়ে পাওয়া যায়। প্রায় এক লাখ হেক্টর মৌসুমি ফলের বাগান রয়েছে পার্বত্য অঞ্চলে। সবচেয়ে বেশি রয়েছে বান্দরবানে। চলতি মৌসুমে ফলন ভালো হওয়ায় বাজারে প্রত্যাশিত দামও পাচ্ছেন চাষীরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাঙ্গামাটি অঞ্চল কার্যালয়ের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে তিন পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে ৩৩ হাজারের অধিক হেক্টর জমিতে আম, কাঁঠাল ও আনারস আবাদ হয়েছে। আবাদকৃত ফলের বাগান থেকে ৬ লাখ ৮৩ হাজার ৩০০ টন ফল উৎপাদনের লক্ষ্য রয়েছে কৃষি বিভাগের। এর মধ্যে তিন পার্বত্য জেলায় ১৭ হাজার ৭৩৬ হেক্টর জমিতে আম, ৭ হাজার ৪৪২ হেক্টর জমিতে কাঁঠাল ও ৭ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে আনারসের আবাদ হয়েছে। চলতি বছরে ১ লাখ ৯৬ হাজার টন আম, ২ লাখ ৮৭ হাজার ৩০০ টন কাঁঠাল এবং ২ লাখ টন আনারস উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
রাঙ্গামাটি শহরের বনরূপা বাজারের কয়েকজন আম বিক্রেতা জানান, এ বছর পাহাড়ে আম উৎপাদন ভালো হয়েছে। মিষ্টি ও আঁশবিহীন হওয়ায় চাহিদা বেশি আম্রপালি আমের। এছাড়া রাঙ্গুই, সূর্যমুখীসহ বিভিন্ন জাতের আম বাজারে রয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাঙ্গামাটি অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক তপন কুমার পাল বণিক বার্তাকে বলেন, ‘রাঙ্গামাটি কৃষি অঞ্চলে প্রায় ১ লাখ হেক্টর ফলদ বাগান রয়েছে। এক জমিতে বিভিন্ন মৌসুমি ও বারোমাসি ফল উৎপাদন হয়। বর্তমানে আম, কাঁঠাল ও আনারস সংগ্রহ হচ্ছে। বাতালি লেবু ছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে কলা ও পেঁপে সারা বছর দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে। এছাড়া অন্য মৌসুমি ফল তরমুজ, ড্রাগন, কুল, পেয়ারা, কমলা ও মাল্টার বাণিজ্যিক আবাদও বাড়ছে।’