জুনের মুদ্রাস্ফীতির তথ্য ও সুদহার কমানোর বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের (ফেড) সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন স্বর্ণের বাজারের বিনিয়োগকারীরা। ফেডারেল রিজার্ভ সুদহার কমাতে পারে এ প্রত্যাশায় গতকাল বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম বেড়েছে। খবর রয়টার্স।
স্পট মার্কেটে গতকাল স্বর্ণের দাম আগের দিনের তুলনায় দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে। আউন্সপ্রতি মূল্য স্থির হয়েছে ২ হাজার ৩৬০ ডলার ৫৯ সেন্ট। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ফিউচার মার্কেটে স্বর্ণের দাম আগের দিনের তুলনায় দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি আউন্সের মূল্য পৌঁছেছে ২ হাজার ৩৬৭ ডলার ১০ সেন্টে।
এদিকে ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভার উচ্চ কক্ষ সিনেটে গতকাল ও আজ হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভে সুদহার কমানোর বিষয়ে আলোচনা করার কথা রয়েছে। এ বিষয়ে এক্সিনিটি গ্রুপের প্রধান বাজার বিশ্লেষক হ্যান টান বলেন, ‘ফেডারেল রিজার্ভের সুদহার কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা স্বর্ণের বাজারের প্রধান চালক। সুদহার কমলে স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৪০ ডলারের কাছাকাছি আসতে পারে।’
তিনি আরো জানান, আগামীকাল ভোক্তা মূল্য সূচক (সিপিআই) ডাটাও ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে। মুদ্রাস্ফীতির তথ্য মূল্যবান ধাতুটির দামে প্রভাব ফেলবে।
সিএমই গ্রুপের ফেডওয়াচ টুল জরিপের তথ্য অনুসারে, ব্যবসায়ীরা বর্তমানে সেপ্টেম্বরে ফেডারেল রিজার্ভের সুদহার কমানোর বিষয়ে প্রায় ৭৫ শতাংশ আশাবাদী। এক সপ্তাহ আগে এ সম্ভাবনার মাত্রা ছিল ৬৬ শতাংশ।
অন্যদিকে বিশ্লেষকরা বলছেন, চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে স্বর্ণের চাহিদা কিছুটা কমলেও বছরের শেষ নাগাদ তা বাড়তে পারে। আর এ সময় স্বর্ণের চাহিদা বাড়লে স্পট মার্কেটে স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৪০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ ডলারে পৌঁছতে পারে।
গতকাল স্পট মার্কেটে রুপার দাম আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৯ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি আউন্সের মূল্য স্থির হয়েছে ৩১ ডলার ৬ সেন্টে। প্লাটিনামের দাম দশমিক ৩ শতাংশ কমে আউন্সপ্রতি মূল্য ৯৯৩ ডলার ৩৫ সেন্টে নেমেছে। স্পট মার্কেটে গতকাল প্যালাডিয়ামের দাম বেড়েছে দশমিক ২ শতাংশ। প্রতি আউন্সের মূল্য স্থির হয়েছে ১ হাজার ১০ ডলার ৭৫ সেন্ট।
এদিকে বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) স্বর্ণের চাহিদা (ওটিসিসহ) গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ৩ শতাংশ। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকের গোল্ড ডিমান্ড ট্রেন্ডস শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল (ডব্লিউজিসি)।
ডব্লিউজিসি জানায়, জানুয়ারি-মার্চ পর্যন্ত ওটিসিসহ সব খাত মিলিয়ে স্বর্ণের বৈশ্বিক চাহিদা বেড়ে ১ হাজার ২৩৮ টনে দাঁড়িয়েছে। তবে ওটিসি বাদে চাহিদা ৫ শতাংশ কমে ১ হাজার ১০২ টনে নেমেছে।
ওটিসি বা ওভার দ্য কাউন্টার মার্কেট বলতে মূলত এমন বিকেন্দ্রীকৃত বাজারকে বোঝায়, যেখানে অংশগ্রহণকারীরা নির্দিষ্ট কোনো এক্সচেঞ্জের পরিবর্তে সরাসরি নিজেদের মধ্যে বাণিজ্য সম্পাদন করে। বিশ্ববাজারে স্বর্ণ কেনাবেচার ক্ষেত্রে ওটিসি বাজারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।