একবার ভাবুন
তো আস্ত একটা জাহাজ উড়ে বেড়াচ্ছে আকাশে। দেখতে
অবিকল সমুদ্রে চলা জাহাজের মতো কিন্তু গোত্রে উড়োজাহাজ। যাকে বলা হচ্ছে ‘এয়ারশিপ’। ভবিষ্যতে আকাশে নাকি রাজত্ব করবে এটি। এয়ারল্যান্ডার
টেন নামের এই এয়ারশিপ তৈরি করছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক এয়ারশিপ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান
হাইব্রিড এয়ার ভেহিকেলস। ২০২৮ সালের মধ্যে
নতুন এয়ারশিপ তৈরির ঘোষণা দিয়েছে তারা। বলা হচ্ছে, উড়জাহাজারের ধারণাই পাল্টে
দেবে বিশেষ এই মডেল। বিমান খাত প্রবেশ করবে নতুন যুগে।
পৃথিবীর সবচেয়ে
বড় এই এয়ারশিপটি ডনকাস্টারে উৎপাদিত হবে বলে জানিয়েছে এইচএভি। সংস্থাটি আরো জানায়,
বছরে ২৪টি এয়ারকক্রাফট তৈরির পরিকল্পনা করছে তারা।
এয়ারল্যান্ডার
টেন মূলত একটি হাইব্রিড বিমান যা হিলিয়াম বুয়ান্ট লিফট, অ্যারোডাইনামিক শেপ লিফট
এবং টেক-অফ এবং ল্যান্ডিংয়ের জন্য ভেক্টরিং ইঞ্জিন শক্তি ব্যবহার করে।
এয়ারল্যান্ডার
টেনের থাকবে ১০০ যাত্রী বহন করার ক্ষমতা। এটির
অর্ডার বুকের মূল্য বর্তমানে ১ বিলিয়ন পাউন্ডের বেশি। এয়ার নস্ট্রাম ২০২৮ সালে এই
বিমানটি ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে।
এয়ার নস্ট্রাম
স্পেন থেকে ভূমধ্যসাগর এবং মাল্টায় তার নেটওয়ার্ক প্রসারিত করার লক্ষ্যে ২০টি জাহাজ
অর্ডার করেছে। সম্ভাব্য রুটের মধ্যে রয়েছে মাল্টা থেকে গোজো এবং মাল্টা থেকে সিসিলি।
সেই সঙ্গে আলোচনায় রয়েছে ইতালি এবং তিউনিসিয়ার অন্যান্য লিঙ্কগুলি । এয়ারল্যান্ডার
টেনের সর্বোচ্চ গতি হবে ঘণ্টায় প্রায় ১০০ মাইল। যা একটি গাড়ি বা ট্রেনের গতির কাছাকাছি।
এছাড়া এয়ারল্যান্ডার
ব্যবহার করে নর্দার্ন লাইট দেখার অভিজ্ঞতা দিতে গ্রাউন্ড স্পেসের মতো বিলাসবহুল ট্যুর
অপারেটরদের সঙ্গেও আলোচনা করছে। ২৫ বছর ধরে সংস্থাটি ছোট নৌকায় করে এ ধরনের ট্যুর
পরিচালনা করে আসছে।
এয়ারল্যান্ডার
টেনের শুরুটা অবশ্য অতটা সহজ ছিল না। ২০১৬ সালের দিকে এই যানটির প্রথম পরীক্ষামূলক
উড্ডয়ন হয়। দ্বিতীয় উড্ডয়নের সময় যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। এয়ারল্যান্ডারের একটি প্রটোটাইপ পরীক্ষামূলক ফ্লাইটের
সময় কম গতিতে অনেক বেশি শব্দ করতে থাকে। ফ্লাইট ডেকের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গণমাধ্যমগুলোতে
এ সংক্রান্ত নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশিত হলে পরবর্তী সফল পরীক্ষামূলক ফ্লাইটগুলোও ততটা
মনোযোগ পায়নি। তবে তাতেও দমে যায়নি এইচএভি। ডিজাইন ও প্রযুক্তিতে পরিবর্তন এনেছে। সবকিছু
ঠিকঠাক থাকলে ২০২৮ পুরোদমে উৎপাদনে যেতে চায় নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানটি।