গাজা ইসরায়েল যুদ্ধের বিভীষিকায় উদ্বিগ্ন সারা বিশ্ব। বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এ যুদ্ধের বর্বরতা থেকে গাজার মুক্তি এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আইইউবি আর্ট ক্লাব গত ২১ নভেম্বর ২০২৩, আইউবির সেন্টার কোর্টে আয়োজন করেছে অন স্পট আর্ট কম্পিটিশন, ২০২৩। এ প্রতিযোগিতার মূল বিষয়বস্তু ছিল শান্তি। প্রতিযোগিতার মূল লক্ষ্য যেকোনো ধরনের সংঘাত ও যুদ্ধবিগ্রহবিহীন পরিবেশ তৈরি করা, যেখানে জনগণের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত থাকবে। প্রতিযোগিতায় ১৮০ জন শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ এবং তাদের ছবি আঁকার মাধ্যমে গাজা ও ইসরায়েল যুদ্ধের বর্বরতা ও যুদ্ধ বন্ধের মানবিক আবেদন উঠে এসেছে।
ক্লাবের প্রেসিডেন্ট রশনি পারভিন জানান, অন স্পট আর্ট কম্পিটিশনের আইডিয়াটা প্রথম আসে সেই ২০১৯ সালে। আর্ট ক্লাবে কাজগুলোতে অনেক ডেকর ও পেইন্টিংয়ের কাজ থাকায় এটি অনেক সময়সাপেক্ষ এবং ধৈর্য নিয়ে করতে হয়। সুতরাং কাজগুলোকে আরো কীভাবে আনন্দদায়ক করা যায় ও উন্মাদনা ধরে রাখা যায় সেই চিন্তা থেকে মূলত প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট রুহুল এবং তার সহযোগীরা প্রতিযোগিতার আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নেয়। তাদের আর্ট কম্পিটিশনে তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপদেষ্টা ও অধ্যাপক ড. মিলান পাগন অংশগ্রহণ করেছিলেন। রশনি পারভিন বলেন, ‘প্রতিযোগিতাটি আমাদের কাছে উৎসবের মতো। ক্যানভাস, রঙ ও তুলি নিয়ে সবাই একসঙ্গে বসে পড়ে। মনের ভাব প্রকাশের একটি মাধ্যম হিসেবে দেখি আমরা প্রতিযোগিতাকে। এজন্য কোনো ক্লাসরুমে টেবিল চেয়ারে না করে উন্মুক্ত কোনো স্থানে এর আয়োজন করা হয়। সঙ্গে থাকে মিউজিক। কোনো বাঁধাধরা সময় দেয়া থাকে না। সবাই নিজের ইচ্ছেমতো সকাল থেকে সন্ধ্যা ছবি আঁকতে পারে। প্রতি বছর বিভিন্ন ঘটনা মাথায় রেখে ঠিক করা হয় বিষয়বস্তু। এর আগে স্বাধীনতা ও হ্যাপিনেস—এ দুটি বিষয়কে কেন্দ্র করে প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। ছবি আঁকার গতানুগতিক চিন্তাধারা থেকে বের হয়ে এসে তৎক্ষণাৎ ছবি এঁকেও যে একটি সমচিন্তাধারার দল তৈরি করে ফেলা যায়, এ প্রতিযোগিতা তারই জানান দেয়।’
এর বাইরে রশনি পারভিন আরো দুটি উল্লেখযোগ্য উৎসবের কথা বলেন, যেগুলো প্রতি বছর আয়োজন করা হয়। তাদের একটি হলো চলন্ত ক্যানভাস। যেটি মূলত করা হয় সমাজের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে। দ্বিতীয়টি ‘নাইট’, যেখানে একটি কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় শিক্ষার্থীদের আর্টের জ্ঞান বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে। তিনি জানান, পেন্সিল এবং রঙতুলি দিয়ে বিভিন্ন শৈল্পিক কলাকৌশল শেখানোর পাশাপাশি আইইউবি আর্ট ক্লাব এখন অব্দি ৩০টিরও বেশি এক্সিবিশনের আয়োজন করেছে। আইইউবির সবচেয়ে পুরনো ক্লাবগুলোর মধ্যে আইইউবি আর্ট ক্লাব অন্যতম। ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট সারিতা খন্দকার বলেন, ‘ছবির মাধ্যমে গণসচেতনতা তৈরি এবং বিভিন্ন সমস্যাকে সবার সামনে তুলে ধরাই আর্ট ক্লাবের অন্যতম উদ্দেশ্য। এছাড়া বিভিন্ন উৎসবে ক্যাম্পাসকে রঙিন করে সাজিয়ে তোলার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের শৈল্পিক দৃষ্টিভঙ্গি উন্নত করতেও তারা কাজ করে।’