বিদেশে কর্মী পাঠাতে রিক্রুটিং এজেন্সির সাব-এজেন্ট হিসেবে কার্যক্রম
পরিচালনাকারীদের (কর্মী সরবরাহকারী) প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলা,
নিজেদের কাজ সম্পর্কে দায়িত্বসম্পন্ন এবং নিরাপদ অভিবাসনে উৎসাহিত করতে হবে। একইসঙ্গে
তাদের রেজিস্ট্রেশন, জামানত গ্রহণ ও সাব এজেন্টদের তালিকা প্রণয়নের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে
নিয়ে আসতে হবে। তা না হলে নৈতিক ও নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন
বক্তারা।
শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক জাতীয় পরামর্শ
সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা। রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিট (রামরু)
এ সভার আয়োজন করে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য ও বিএমইটির সাবেক মহাপরিচালক
মো. সেলিম রেজা বলেন, রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো সাব-এজেন্টের মাধ্যমে কর্মী সংগ্রহ করেন,
তাদের নিয়ন্ত্রণও করেন। কারণ এসব সাব এজেন্টদের ওপর তাদের ব্যবসা নির্ভর করে। অনেকেই
সাব এজেন্টের কাছ থেকে জামানতও রাখেন, এটা এখনো নিয়ন্ত্রিত আছে। এটাকে আনুষ্ঠানিক খাতে
নিয়ে আসলে রিক্রুটিং এজেন্সির কাছ থেকে সাব-এজেন্টের রেজিস্ট্রেশানের প্রস্তাব আসতে
হবে। তারপর বিএমইটি তার অনুমোদন দেবে।
তিনি বলেন, এটা খুব স্পর্শকাতর বিষয়। এর জন্য যারা অভিবাসনের সঙ্গে
সম্পর্কিত, অভিজ্ঞতা আছে, আইন সম্পর্কিত জ্ঞান আছে, তাদের মাধ্যমে সবকিছু বিবেচনায়
নিয়ে আইন প্রণয়ন করতে হবে। তা না হলে ভালো করতে গিয়ে খারাপ হওয়ার আশঙ্কাও আছে।
বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের (বোয়েসেল)
ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মল্লিক আনোয়ার হোসেন বলেন, বোয়েসেলের মাধ্যমে যে অভিবাসন নিশ্চিত
করা হয় তা বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে করা সম্ভব নয়। বোয়েসেল তার সব ধরনের
কার্যক্রম অনলাইনে পরিচালনা করে। এ সিস্টেম হলে এজেন্ট, সাব-এজেন্টের প্রয়োজন হত না। গুণগত অভিবাসন করতে গেলে সাব-এজেন্টের ভূমিকা একেবারে সীমাবদ্ধ এবং নির্দিষ্ট থাকবে।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজের মহাপরিচালক
আলী হায়দার চৌধুরী বলেন, আমরা অভিবাসনের ডাটা ব্যাংক করতে পারিনি। যার কারণে কারা কার
কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে তা জানা যাচ্ছে না। মাঝে মাঝে
সাব-এজেন্ট নিয়ে আমরা হয়রানিতে পড়ি। তাদের ডকুমেন্টেশান থাকলে, বিএমইটির কাছে তার রেজিস্ট্রেশন
থাকলে আমরাও নিরাপদ হই।
অনুষ্ঠানে ‘রেগুলারাইজেশন অব সাব-এজেন্টস ফর এনসিউরিং ফেয়ার অ্যান্ড
এথিক্যাল রিক্রুটমেন্ট প্র্যাকটিস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রবন্ধ
উপস্থাপন করেন রামরুর প্রোগ্রাম পরিচালক মেরিনা সুলতানা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মাইগ্রেশন ককাস অন বাংলাদেশের মহাসচিব মেহজাবিন
খালিদ, সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও)
ন্যাশনাল প্রজেক্ট ম্যানেজার তাজুল ইসলাম, পরিচালক (কর্মসংস্থান) মোহাম্মদ আব্দুল হাই,
বিএমইটির সিনিয়র পরিসংখ্যান কর্মকর্তা মাসুদ রানাসহ অনেকে।