ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার আল আহলি আরব হাসপাতালে গত ১৭ অক্টোবর বিমান হামলা চালিয়ে অর্ধসহস্রাধিক মানুষকে হত্যা করে ইসরায়েলি বাহিনী (আইডিএফ)। এর পর থেকে অঞ্চলটির একের পর এক হাসপাতালকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে সিরিজ বিমান হামলা চালিয়েছে তারা। উপত্যকার সবচেয়ে বড় চিকিৎসা কেন্দ্র আল শিফা হাসপাতাল পরিদর্শনের পর গত রোববার সেটিকে মৃত্যুপুরী হিসেবে আখ্যায়িত করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। হাসপাতালটির প্রবেশপথে গণকবরেরও সন্ধান মিলেছে। এর মধ্যেই নতুন করে ট্যাংক নিয়ে গাজার উত্তরাঞ্চলের ইন্দোনেশীয় হাসপাতাল কমপ্লেক্স ঘিরে ফেলে সেখানে তাণ্ডব চালায় আইডিএফ। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গতকাল জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনীর গোলাবর্ষণে সেখানে চিকিৎসক ও রোগীসহ অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছে।
ইন্দোনেশীয় হাসপাতালটি উত্তর গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতালগুলোর একটি। ট্যাংক নিয়ে গত রোববার হাসপাতালটির চারপাশে জমায়েত হতে শুরু করে ইসরায়েলি সেনারা। এক পর্যায়ে তারা সেটির চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে। তাদের হামলার মুখে জেনারেটর নষ্ট হয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে মোবাইলের আলো দিয়ে রোগীদের অপারেশন করতে বাধ্য হন চিকিৎসা কর্মীরা।
আল জাজিরার সাংবাদিক সাফওয়াত আল কাহলুত বলেন, ‘আল শিফা হাসপাতালে যা ঘটেছে দৃশ্যত ইন্দোনেশীয় হাসপাতালেও তারই পুনরাবৃত্তি ঘটাতে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।’ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হাসপাতালটিতে রোগী ও চিকিৎসা কর্মীসহ সহস্রাধিক মানুষ রয়েছে। অব্যাহত হামলার মুখে মৃত্যুঝুঁকিতে রয়েছে তারা। তবে ইসরায়েলি গোলার আঘাতে উদ্ভূত বিপর্যয়কর পরিস্থিতির মধ্যেও রোগীদের সেবা দিতে সেখানে থেকে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন চিকিৎসা কর্মীরা।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গত রোববার জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর থেকে অঞ্চলটিতে ১৩ হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এর মধ্যে সাড়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি শিশু ও সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি নারী। আহতের সংখ্যা এরই মধ্যে ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে। আহতদের ৭৫ ভাগেরও বেশি নারী ও শিশু। এছাড়া নিখোঁজ আরো ছয় সহস্রাধিক মানুষ। আশঙ্কা করা হচ্ছে, তাদের বেশির ভাগই ইসরায়েলি বিমান হামলায় ধসে পড়া বিভিন্ন ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে।