ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলায় গ্রেফতার
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা জামিনে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার
থেকে মুক্তি পেয়েছেন। আজ সোমবার (২০ নভেম্বর) সকাল ৯টার দিকে কারা ফটকের বাইরে আসেন
তিনি। প্রায় ১৫ মাস আটক ছিলেন খাদিজা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাশিমপুর মহিলা
কারাগারের ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র সুপার মো. শাহজাহান মিয়া।
তিনি জানান, গতকাল রোববার সন্ধ্যায়
কারাগারে জামিনের আদেশ পৌঁছে। এরপর আজ সকাল ৯টার দিকে খাদিজার বোন এলে তাকে কারাগার
থেকে মুক্তি দেয়া হয়।
দিন কয়েক আগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের
দুই মামলায় কারাগারে থাকা এ শিক্ষার্থীর জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু
আপিল খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। ফলে খাদিজার মুক্তিতে আর বাধা নেই বলে তখন জানিয়েছেন
আইনজীবীরা।
খাদিজা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান
বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। অনলাইনে সরকারবিরোধী বক্তব্য প্রচারসহ দেশের ভাবমূর্তি
ক্ষুণ্নের অভিযোগে ২০২০ সালের অক্টোবরে খাদিজা ও অবসরপ্রাপ্ত মেজর দেলোয়ার হোসেনের
বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পৃথক দুটি মামলা হয়। একটি মামলা হয় রাজধানীর কলাবাগান
থানায়, অন্যটি নিউমার্কেট থানায়। দুটি মামলার বাদীই পুলিশ।
মামলার অভিযোগপত্র তৈরি হলে ২০২২ সালের
২৭ আগস্ট মিরপুরের বাসা থেকে খাদিজাকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এজাহারে বলা হয়েছে, বাদী
২০২০ সালের ১১ অক্টোবর মেজর দেলোয়ার হোসেনের ইউটিউব চ্যানেলে ‘হিউম্যানিটি ফর বাংলাদেশ’
শিরোনামে এক ভিডিও দেখতে পান। সেখানে সঞ্চালক খাদিজাতুল কুবরার উপস্থাপনায় দেলোয়ার
হোসেন তার বক্তব্যে সরকারকে উৎখাতের বিভিন্ন নির্দেশনা প্রদান করেন।
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে
ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ গত ১৬ নভেম্বর জামিনের আদেশ দেন। আদালতে খাদিজার পক্ষে শুনানি
করেন অ্যাডভোকেট বিএম ইলিয়াস কচি ও ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি
করেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সাইফুল আলম।
অ্যাডভোকেট বিএম ইলিয়াস কচি বলেন,
‘খাদিজা ১ বছর ২ মাস ১৭ দিন ধরে কারাগারে আছেন। আপিল বিভাগ তাকে জামিন দিয়েছেন। এখন
খাদিজার মুক্তিতে আর বাধা নেই।’
বিচারিক আদালতে একাধিকবার খাদিজার জামিন
আবেদন নাকচ হয়। পরে তিনি হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি তাকে জামিন
দেন হাইকোর্ট। পরে গত জুলাইয়ে আপিল বিভাগের এক আদেশে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত (চার মাস)
তার জামিনসংক্রান্ত আবেদনের শুনানি স্ট্যান্ডওভার (মুলতবি) রাখা হয়।