চীনের জিডিপি সাধারণত প্রতিবছর বাড়ে। তবে আগামী বছর দেশটির জিডিপি ৫ শতাংশ কমার পূর্বাভাস দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। এ সংকট কাটাতে হলে চীনকে সরকারি ব্যয় বাড়াতে হবে, যাতে বাণিজ্যের ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাজনিত অর্থনৈতিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারে। খবর দি এজ মালয়েশিয়া।
অর্থনীতিবিদরা জানান, চীনের উচিত আগামী দশকের জন্য ঘাটতির যে সর্বনিম্ন গড় আছে, সে সংখ্যা সংশোধন করা। জিডিপি কমার হার ৫ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা উচিত। এটি সরকার নির্ধারিত গড় ৩ শতাংশের চেয়ে কম। এ ৩ শতাংশ পর্যন্ত সরকার সাধারণত স্বীকার করে। তবে এবার এ হার ৩ দশমিক ৮ শতাংশের চেয়েও কম হতে পারে। ফলে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে মধ্যমেয়াদি বাজেট সংশোধন করার প্রয়োজন হতে পারে।
অর্থনীতিবিদরা পরামর্শ দেন, অর্থনীতিকে গতিশীল রাখার জন্য সরকারকে আরো আর্থিক প্রণোদনা দিতে হবে।
কয়েকজন অর্থনীতিবিদ একমত পোষণ করে জানান, গত মাসের অস্বাভাবিক বাজেট সংশোধন এবং আরো ১ ট্রিলিয়ন ইউয়ান মূল্যের ঋণ অর্থনীতিকে নতুন করে চাপে ফেলবে। অনেক বিশ্লেষক আশঙ্কা করেন, নীতি পরিবর্তনের ফলে বেইজিংয়ের স্থানীয় সরকারের অংশগুলো ঋণের চাপে পড়তে পারে।
অর্থনীতিবিদ জিয়া জেনলিয়াং ‘মডার্ন মানিটারি থিওরি’ বইয়ের সহলেখক। তিনি বেইজিংয়ে রেনমিন ইউনিভার্সিটির একজন অধ্যাপক। একই সঙ্গে তিনি আধুনিক মুদ্রাতত্ত্বের অন্যতম প্রবক্তা।
জিয়া জেনলিয়াং জানান, নিজস্ব মুদ্রায় ঋণ নিলে কোনো দেশ প্রকৃত ঋণসীমা মানে না। কারণ সরকার চাইলেই নিজস্ব মুদ্রা ছাপতে পারে।
তত্ত্বটি কয়েক বছর ধরে চীন সরকারের মনোযোগ আকর্ষণ করতে পেরেছে। কর্তৃপক্ষ মন্থর অর্থনীতি গতিশীল করার জন্য আর্থিক প্রণোদনা ও অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগের ওপর বেশি জোর দিয়েছে।
জিয়া জেনলিয়াং বলেন, ‘বেইজিংকে আরো বেশি কিছু করতে হবে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো চীনা রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে। এ রফতানি কয়েক বছর ধরে চীনের প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে।’
তিনি সরকারকে আরো কর্মসংস্থান তৈরি এবং বাসিন্দাদের আয় ও খরচ বাড়াতে সরকারি প্রণোদনা বাড়ানোর সুপারিশ করেছেন।
প্রসঙ্গত, চীনের অর্থনীতি মহামারীর আগে থেকে নিম্নমুখী ছিল। এর পেছনে চাহিদার ক্রমহ্রাসমান হার একটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে কাজ করছে। এ বছর রফতানি খারাপ হয়েছে। সামগ্রিক অর্থনৈতিক কার্যক্রম নেতিবাচক। যদিও এটি আগামী বছর উন্নতি করতে পারে। আগামীতে প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য অভ্যন্তরীণ চাহিদা এবং দেশীয় লেনদেনের ওপর নির্ভর করা ছাড়া চীনের কোনো বিকল্প থাকবে না।