চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে সন্দেহমূলক কার্যক্রমের (এসএআর) অভিযোগে প্রায় ২০ লাখ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট শনাক্ত করা হয়েছে। ২০২২ সালে এ সংখ্যা ছিল ১৮ লাখ। এটা আগের দুই বছরের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেশি। ব্যাংকগুলো সম্প্রতি ৫০০ গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট বন্ধও করে দিয়েছে। খবর নিউইয়র্ক টাইমস।
রাজ্য পর্যায়ে এসএআরের ঘটনা প্রায়ই ঘটে। এ কারণে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধের বিষয়ে খুব বেশি তথ্য দিতে পারে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বন্ধ হওয়া ৫০০ অ্যাকাউন্ট বিশ্লেষণ এবং ব্যাংকারদের সঙ্গে কথা বলে এ ব্যাপারে একটি নিশ্চিত ধারণা পাওয়া গেছে।
আইন অনুযায়ী, কোনো গ্রাহকের লেনদেন অথবা আচরণে সন্দেহ হলে ব্যাংক তা তদন্ত করে। যেমন অস্বাভাবিক লেনদেন করলে অথবা ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি, সংগঠন বা দেশের সঙ্গে লেনদেন করলে।
ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রতারণা, সন্ত্রাস, অর্থ পাচার, মানব পাচার এবং অপরাধে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযানের অংশ হিসেবে অ্যাকাউন্ট বন্ধ করা হয়।
বন্ধ অ্যাকাউন্টগুলোর মধ্যে রয়েছে ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও ছোট ব্যবসায়ীদের হিসাব। গ্রাহকরা জানান, তাদের বিরুদ্ধে ব্যাংকের এমন সিদ্ধান্ত সংকীর্ণ চিন্তার বহিঃপ্রকাশ। কখনো কখনো যান্ত্রিক পদ্ধতির কারণে কারো অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যেতে পারে। যদিও এগুলো প্রতিদিন কোনো না কোনো কর্মী যাচাই করে থাকেন।
ব্যাংক সাধারণত গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট বন্ধের কারণ প্রকাশ করে না। ভুল স্বীকারও করে না। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক্ষেত্রে তথ্য সরবরাহ করে।
এসব তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, অনেক গ্রাহক তাদের বিল যথাসময়ে পরিশোধ করেননি। পরিশোধ করলেও ব্যাংক কখনো কখনো প্রতিষ্ঠানকে টাকা পাঠাতে সপ্তাহের পর সপ্তাহ সময় নিয়েছে। ততদিন ক্রেডিট কার্ড কোম্পানি তাদের কার্ড বাতিল করে দিয়েছে।
ব্যাংক কোনো গ্রাহকের বিরুদ্ধে এসএআর দাখিল করলে আইনিভাবে এটা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে জানানো হয় না। কোনো ব্যক্তি কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অভিযোগ করলে তাকে এ-সংক্রান্ত তথ্য সরবরাহ করা হয়। ফলে অ্যাকাউন্ট বন্ধ হলে এটা জানা প্রায় অসম্ভব যে ঠিক কী কারণে এমনটা ঘটেছে। কার্যত ব্যাংকগুলো এখন আগের চেয়ে বেশি নীতি মেনে চলছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় ব্যাংক জেপি মরগান চেজ। এ ব্যাংকের গ্রাহকের মধ্যে খুচরা ক্রেতা রয়েছে আট কোটি এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ৬০ লাখ। যেসব গ্রাহকের অভিযোগের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে, তাদের মধ্যে ২০০ জনই এ ব্যাংকের সেবাগ্রহণকারী। ব্যাংকটির মুখপাত্র জেরি দুব্রোস্কি বলেন, ‘আমরা গ্রাহকের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্ক তৈরি করতে চাই। ঘটনার পর যথাযথ নিরীক্ষণ এবং বিবেচনার মাধ্যমে গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করা হয়। আমরা নীতিমালা মেনে গ্রাহকের স্বার্থ যতটা রক্ষা করা যায়, তা করি। এর পরও আমাদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে।’