জেসমিন
মোগবেলি ও লোরেল ওহারা। নাসার দুই মহাকাশচারী ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে বা আইএসএসের
বাইরে সোলার প্যানেলে কাজ করছিলেন। তাদের গভীর মনোযোগের মাঝেই ঘটল একটি অনর্থ। সঙ্গে
থাকা যন্ত্রপাতির ব্যাগ হঠাৎ ফসকে গেল। মহাশূন্যে ভাসতে থাকল। সেটা আর উদ্ধারও করা
গেল না।
জেসমিন
ও লোরেলের মতো ঘটনা যে প্রথম ঘটেছে তা নয়। কিন্তু প্রশ্ন হলো, মহাশূন্যে হাত ফসকে
যাওয়া এসব যন্ত্রপাতি কি কখনো পৃথিবীতে পৌঁছাতে পারে, কিনা সেখানে রয়ে যায়। কতদিনই
বা ভাসবে।
দ্য
গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে ওই ঘটনা উল্লেখ করে বলা হয়, ফসকে যাওয়ার পর ব্যাগটি শুরু
করে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ। যারা নিয়মিত মহাকাশ পর্যবেক্ষণ করেন বা দূরবীক্ষণ যন্ত্র
নিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকেন, তাদের অনেকেই চোখে সহজেই পড়েছে ব্যতিক্রমী জিনিসটা।
দ্য
ন্যাশনাল অ্যারোনটিকস অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা নাসার ব্লগে দাবি করা
হয়েছে, মহাকাশচারীরা কাজ করার সময় ব্যাগটা হারিয়ে ফেলেন। যন্ত্রপাতি হারিয়ে যাওয়ার
পরও অবশিষ্ট কাজ শেষ করতে তাদের অসুবিধা হয়নি। ব্যাগ হারানোর সঙ্গে ঝুঁকির আশঙ্কাও
ছিল কম। ক্রু ও স্পেস স্টেশন নিরাপদেই আছে।
প্রতিবেদনে
বলা হয়, সাদা ব্যাগটি দৃষ্টি সীমানার মধ্যেই প্রদক্ষিণ করছে। আগ্রহীরা বাইনোকুলার
ব্যবহার করে দেখতে পারবেন। ঔজ্জ্বল্যের দিক দিয়ে ইউরেনাসের তুলনায় কম। ব্যাগটিকে শনাক্ত
করতে হলে আগ্রহীকে আগে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন খুঁজে বের করতে হবে। রাতের আকাশের
তৃতীয় বৃহৎ উজ্জ্বল বস্তুপিণ্ডের মতো দেখা যায় স্টেশনটিকে। আর ব্যাগটি পৃথিবীকে
প্রদক্ষিণ করছে স্টেশনটির সামান্য সামনে থেকে।
ব্যাগটি
আগামী কয়েক মাস পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করবে। তারপর নেমে আসবে ৭০ মাইল বা ১১৩ কিলোমিটারের
মধ্যে। এরপর জ্বলে-পুড়ে ছাই হয়ে যাবে।
আগেই বলা হয়েছে, মহাকাশচারীর
কাছ থেকে মহাকাশে কিছু হারিয়ে যাওয়ার এটাই প্রথম ঘটনা নয়। ২০০৮ সালের ১৮ নভেম্বর হেইডেমারি
স্টেফানিশিন-পাইপারের ব্যাগ ফসকে গিয়েছিল মহাশূন্যে। তখন তিনি আইএসএসের
ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামত করছিলেন। ব্যাগ পড়ে যাওয়ার কারণে মিশন নিয়ন্ত্রকেরা পরিকল্পনায়
পরিবর্তন আনতে বাধ্য হন। পরবর্তী কয়েক মাস পর্যন্ত স্পেস স্টেশনের সামনেই পৃথিবীকে
প্রদক্ষিণরত অবস্থায় দেখা গেছে ব্যাগটিকে। আরো আগে ২০০৬ সালে মহাকাশচারী পিয়ার্স
সেলার্স মেরামতের সময় স্প্যাচুলা হারিয়ে ফেলেন মহাশূন্যে।