৫০টির বেশি দেশে জুতা রফতানি করছি

এডিসন গ্রুপ বাংলাদেশের শিল্প গ্রুপগুলোর মধ্যে অন্যতম নেতৃস্থানীয় প্রতিষ্ঠান। ২০০৯ সাল থেকে মোবাইল ফোনের পাশাপাশি অন্যান্য আরো অনেক ধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান তৈরি করেছে এবং দেশের ডিজিটালাইজেশনের জন্য ভূমিকা রাখছে। প্রথম দিকে অধিকাংশ কর্মসংস্থানই হতো উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তিদের জন্য। দেশের আপামর জনসাধারণের কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও শিল্পপ্রতিষ্ঠান তৈরির লক্ষ্যে তৈরি পোশাক

এডিসন ফুটওয়্যার তৈরির প্রেক্ষাপট

এডিসন গ্রুপ বাংলাদেশের শিল্প গ্রুপগুলোর মধ্যে অন্যতম নেতৃস্থানীয় প্রতিষ্ঠান। ২০০৯ সাল থেকে মোবাইল ফোনের পাশাপাশি অন্যান্য আরো অনেক ধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান তৈরি করেছে এবং দেশের ডিজিটালাইজেশনের জন্য ভূমিকা রাখছে। প্রথম দিকে অধিকাংশ কর্মসংস্থানই হতো উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তিদের জন্য। দেশের আপামর জনসাধারণের কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও শিল্পপ্রতিষ্ঠান তৈরির লক্ষ্যে তৈরি পোশাক শিল্প, ওষুধ শিল্প, প্লাস্টিক শিল্প, ফুটওয়্যার ও সিরামিকস শিল্প পরিকল্পনায় আসে। সব বিষয়ে বিশ্লেষণ করার পরে দেখা যায়, তৈরি পোশাকের পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী জুতা শিল্পের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সে লক্ষ্য থেকেই এডিসন ফুটওয়্যার প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং যা অদক্ষ বা স্বল্পশিক্ষিত বা নিম্ন আয়ের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।

আমাদের প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত জুতা

এডিসন ফুটওয়্যারে লেদার ও সিনথেটিক উভয় ধরনের জুতা উৎপাদন করা হয়। আমাদের প্রতিষ্ঠানে প্রধানত স্পোর্টস সুজ উৎপাদন করা হয়। পাশাপাশি আউটডোর সুজ বা ফাংশনাল সুজের কাজও করা হয়।

জুতা তৈরির দৈনিক সক্ষমতা

এডিসন ফুটওয়্যারের কারখানায় স্থাপিত মেশিনারিজের ক্যাপাসিটি অনুযায়ী প্রতিদিন ৫০ হাজার জোড়া জুতা উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। তবে রফতানির প্রয়োজনীয়তার ওপর ভিত্তি করে প্রতিদিন ৩০-৩৫ হাজার জোড়া জুতা উৎপাদন করা হয়।

যেসব দেশে রফতানি করা হয়

আমাদের প্রতিষ্ঠানে উৎপাদিত জুতার ৭০ শতাংশ ইউরোপের ফ্রান্স, স্পেন, পোল্যান্ড, জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশ; আমেরিকায় প্রায় ১০ শতাংশ; আফ্রিকার মরক্কোসহ কয়েকটি দেশে ১০ শতাংশ এবং এশিয়ার বিভিন্ন দেশ মিলিয়ে ৫০টির বেশি দেশে জুতা সরবরাহ করা হচ্ছে।

বাংলাদেশে জুতা রফতানির সম্ভাবনা

সম্ভাবনার দিক দিয়ে ফুটওয়্যার শিল্পে বাংলাদেশের অবস্থান শক্তিশালী করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে বলে আমরা মনে করি। ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিশ্ববাজারে ৩৮ হাজার কোটি ডলার মূল্যের জুতার চাহিদা রয়েছে। ২০২৬-২৭ অর্থবছরে এর পরিমাণ দাঁড়াবে ৫০ হাজার কোটি ডলার। বাংলাদেশে গত কয়েক বছরে গড়ে ১২০ কোটি ডলার রফতানি হয়েছে।

বিশ্ববাজারের অনুকূলতা

আন্তর্জাতিক বাজার যেমন জাপান, জার্মানি, ফ্রান্স, স্পেন, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশে উৎপাদিত জুতার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

গ্রিন ফ্যাক্টরি করার আগ্রহ 

বিশ্বব্যাপী সবুজায়নের অংশ হিসেবে সারা বিশ্বেই কারখানাগুলোকে সবুজায়নের জন্য উৎসাহ দেয়া হয়। বিশ্বে সবুজ কারখানার তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান প্রথম। সবুজ কারখানার তালিকায় বাংলাদেশের পরের অবস্থানে ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়া। সবুজ কারখানার তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষে থাকায় ইউরোপ আমেরিকা ছাড়াও নতুন বাজার থেকে বাড়তি অর্ডার আসছে। সর্বোপরি কারখানাগুলো সবুজায়নের কারণে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হচ্ছে এবং দেশের রফতানি বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।

জুতা রফতানির প্রতিবন্ধকতা

জুতা রফতানির প্রধান প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে লিড টাইম মেইনটেইন করতে না পারা। সিংহভাগ ক্ষেত্রেই দেশে ব্যাকওয়ার্ড শিল্পপ্রতিষ্ঠান না হওয়ায় দেশের বাইরে থেকে প্রয়োজনীয় কাঁচামালের জোগান দিতে হয়। আর জাহাজীকরণ বিলম্বিত হওয়া একটা অন্যতম প্রতিবন্ধকতা। গ্লোবাল ভ্যালু চেইনের অংশ হতে হলে সঠিক সময়ে রফতানি নিশ্চিত করতে হবে এবং দেশে ব্যাকওয়ার্ড শিল্প প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে ফুটওয়্যার শিল্পকে আরো সমৃদ্ধ করা যেতে পারে এবং এ খাতের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হতে পারে।

রফতানিনির্ভর নতুন খাতে বিনিয়োগ

ফুটওয়্যার শিল্পের পাশাপাশি চামড়াজাত পণ্য উৎপাদন ও রফতানি এবং ফুটওয়্যার কম্পোনেন্টস তৈরি করে প্রচ্ছন্ন রফতানির মাধ্যমে এ শিল্পের প্রয়োজনীয় কাঁচামালের জোগান দেয়ার জন্য ব্যাকওয়ার্ড শিল্পপ্রতিষ্ঠান তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে।

আরও