২৪টি দেশে যাচ্ছে নুরুন্নবী ব্যাম্বো ক্রাফটের পণ্য

৬ হাজার ৫৩৪ বর্গফুটের কারখানা। এখানেই অবিরত স্বপ্ন বুনে যাচ্ছেন নুরুন্নবী। তৈরি করছেন বাঁশ ও বেতের পণ্য। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে সেগুলো দেশের বাইরেও রফতানি হচ্ছে। শুরুর গল্প : পারিবারিকভাবেই বাঁশ ও বেতের পণ্য তৈরির সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন মো. নুরুন্নবী। মা-বাবার কাছ থেকে কাজ শিখেছেন। তারপর বিভিন্ন কারখানায় কাজ করে আরো দক্ষতা অর্জন করেছেন। ১৯৯০

৬ হাজার ৫৩৪ বর্গফুটের কারখানা। এখানেই অবিরত স্বপ্ন বুনে যাচ্ছেন নুরুন্নবী। তৈরি করছেন বাঁশ ও বেতের পণ্য। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে সেগুলো দেশের বাইরেও রফতানি হচ্ছে।

শুরুর গল্প : পারিবারিকভাবেই বাঁশ ও বেতের পণ্য তৈরির সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন মো. নুরুন্নবী। মা-বাবার কাছ থেকে কাজ শিখেছেন। তারপর বিভিন্ন কারখানায় কাজ করে আরো দক্ষতা অর্জন করেছেন। ১৯৯০ সাল থেকেই তিনি এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত। তারপর শাহ আবদুস সালাম নামে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে কাজ করা শুরু করেন তিনি। শাহ আবদুস সালাম বায়ারদের কাছ থেকে ডিজাইন নিয়ে আসতেন। ডিজাইন অনুযায়ী পণ্য তৈরি করে দেয়ার দায়িত্ব নেন নুরুন্নবী। তার কারখানায় তৈরি হওয়া পণ্যগুলো শাহ আবদুস সালামের মাধ্যমে রফতানি হতে থাকে। ২০০৪ সালের দিকে তিনি আড়ংয়ের সঙ্গে যুক্ত হন। তখন থেকে তিনি প্রতি মাসে অর্ডার পেতে থাকেন। হিট বাংলাদেশের সঙ্গেও কাজ করেন তিনি। এভাবে পর্যায়ক্রমে ২০১৮ সালে পূর্ণাঙ্গ রূপ লাভ করে তার প্রতিষ্ঠান ‘নুরুন্নবী ব্যাম্বো ক্রাফট’।

কর্মীর সংখ্যা ও প্রশিক্ষণ : নুরুন্নবী ব্যাম্বো ক্রাফটে গড়ে ৬০-৭০ জন কর্মী বাঁশ ও বেতের পণ্য তৈরিতে নিয়োজিত আছেন। তবে কাজের চাপ অনুসারে কর্মীর সংখ্যায় তারতম্য ঘটে। কর্মীদের দুইভাবে নিয়োগ দেয়া হয়। এককালীন চুক্তিভিত্তিক ও দৈনিক হাজিরাভিত্তিক। চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্য নির্দিষ্ট সময়ে তৈরি করে দেয়ার বিনিময়ে এককালীন পারিশ্রমিক দেয়া হয়। আর হাজিরাভিত্তিক কর্মীদের ক্ষেত্রে দৈনিক গড়ে ৪০০ টাকা মজুরি দেয়া হয়। কর্মীদের নিজেই প্রশিক্ষণ দেন নুরুন্নবী।

রফতানি: বর্তমানে বিভিন্ন রফতানিকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতি বছর গড়ে ১৫-২০ লাখ টাকার বাঁশ ও বেতের পণ্য রফতানি করছে নুরুন্নবী ব্যাম্বো ক্রাফট। তবে কভিড মহামারী-পূর্ববর্তী সময়ে প্রতি বছর গড়ে ৬০-৭০ লাখ টাকা পর্যন্ত রফতানি করেছেন বলে জানান নুরুন্নবী। চীন, মালয়েশিয়া, দুবাই, কাতারসহ বিশ্বের ২৪টি দেশে রফতানি হচ্ছে নুরুন্নবী ব্যাম্বো ক্রাফটে উৎপাদিত বাঁশ ও বেতের পণ্য। তবে সবচেয়ে বেশি রফতানি হয় জাপানে। বাঁশ ও বেতের তৈরি পণ্যের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ঝুড়ির চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে।

রফতানি কমে যাওয়ার কারণ : বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতার কারণে অর্ডার কমে যাচ্ছে বলে জানান নুরুন্নবী। অন্যদিকে, কাঁচামালের দাম অত্যধিক বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন খরচ অনেক বেড়ে যাচ্ছে। প্রযুক্তির অভাবে অন্য প্রতিযোগী দেশের তুলনায় পিছিয়ে পড়ছেন বলেও জানান তিনি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রতিনিধিদের কাছ থেকেও পাচ্ছেন না কোনো সাহায্য। সব মিলিয়ে উৎপাদন কমেছে, সেই সঙ্গে কমেছে রফতানি আয়।

ভবিষ্যৎ স্বপ্ন: কারখানার আয়তন বাড়িয়ে বেকার ও নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে চান নুরুন্নবী। এ শিল্পের অগ্রযাত্রা টিকিয়ে রাখার জন্য কাজ করে যাবেন। এক্ষেত্রে তিনি সরকার, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রতিনিধিদের সুদৃষ্টি কামনা করেন। 

আরও