গত ১ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া মৌসুমে এখন পর্যন্ত ভারতে ২ কোটি ৮২ লাখ ইউনিট চিনি উৎপাদন করেছে কারখানাগুলো। বছরওয়ারি হিসেবে যা ১ শতাংশ কম। সম্প্রতি দেশটির সুগার মিলস অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। খবর হেলেনিক শিপিং নিউজ।
মিষ্টিজাতীয় দ্রব্য তৈরিতে শীর্ষে থাকা ভারতে চিনি উৎপাদন কম হওয়ায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে রফতানির জন্য তেমন উদ্বৃত্ত থাকবে না বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকার মাত্র ৬১ লাখ টন চিনি রফতানির অনুমতি দিয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রশাসন আরেক দফায় চিনি রফতানি করতে দেবে বলে আশা প্রকাশ করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।
অন্যদিকে দ্বিতীয় ধাপে চিনি রফতানি করতে দেয়া হবে এমন আশার বিপরীতে সরকারি সূত্র জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে জানায় যে নতুন করে কোনো চিনি রফতানিতে আগ্রহী নয় সরকার। বাজার থেকে ভারতের অনুপস্থিতি বৈশ্বিক দাম বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলবে। সেই সঙ্গে ব্রাজিল ও থাইল্যান্ড তাদের রফতানি বাড়াতে পারবে। ২০২১-২২ অর্থবছরে ভারত রেকর্ড ১ কোটি ১২ লাখ টন চিনি রফতানি করেছে।
জানুয়ারির শেষদিকে দ্য ইন্ডিয়ান সুগার মিলস অ্যাসোসিয়েশন ২০২২-২৩ অর্থবছরে চিনি উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৭ শতাংশ কমিয়ে ৩ কোটি ৪০ লাখ টন নির্ধারণ করেছে। যেখানে আগে ৩ কোটি ৬৫ লাখ টন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল। গত বছর ভারতের কারখানাগুলো রেকর্ড সর্বোচ্চ ৩ কোটি ৫৮ লাখ টন চিনি উৎপাদন করেছে। এছাড়া প্রতিকূল আবহাওয়া পশ্চিমাঞ্চলের মহারাষ্ট্রে আখ উৎপাদনে বাধা দিয়েছে। রয়টার্সই প্রথম ডিসেম্বরে উৎপাদন কমার বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
দ্য ইন্ডিয়ান সুগার মিলস অ্যাসোসিয়েশন জানায়, ২০২২-২৩ মৌসুমে এখন পর্যন্ত ১৯৪টি কারখানা উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। যেখানে আগের বছর এর পরিমাণ ছিল ৭৮টি। মূলত পর্যাপ্ত আখ না থাকায় কারখানাগুলো কার্যক্রম বন্ধে বাধ্য হয়েছে। এছাড়া প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে মহারাষ্ট্রের প্রায় দুই ডজন মিল আখ মাড়াই বন্ধ করে দিয়েছে বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
অন্যদিকে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে নতুন বিপণন মৌসুমের প্রথম দেড় মাসেই ভারতে চিনি উৎপাদন ৫ শতাংশ বেড়েছিল। এ সময় দেশটি ৪৫-৫০ লাখ টন চিনি রফতানির চুক্তিও করে। মৌসুমের প্রথম দেড় মাসে দেশটি ৮২ লাখ ১০ হাজার টন চিনি উৎপাদন করেছিল। গত মৌসুমের একই সময় উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৭৭ লাখ ৯০ হাজার টন। ইসমা সূত্রে সে সময় বলা হয়, ১ অক্টোবর থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪৫-৫০ লাখ টন চিনি রফতানির চুক্তি করেছিল দেশটির মিলগুলো। এর মধ্যে ছয় লাখ টন সরাসরি রফতানি করাও হয়। বিশ্ববাজারে বাড়ছে ভারতীয় চিনির চাহিদা। মূলত ২০২১ সাল থেকে বিশ্ববাজারে দেশটির চিনির চাহিদা বাড়ছে। এর কারণ হিসেবে উঠে এসেছে চিনি উৎপাদনে শীর্ষ দেশ ব্রাজিলের উৎপাদন ঘাটতি, ইউরোপে বৈরী আবহাওয়াসহ সৃষ্ট নানা সংকটের কথা। তবে দেশের বাজারেও ক্রমাগত চাহিদা বাড়তে থাকায় ভারত সরকার সে সময় মিলভিত্তিক রফতানির পরিমাণ নির্দিষ্ট করে দেয়।