২৬ বীমা কোম্পানির সঙ্গে বিএসইসির বৈঠক

বাজার ঊর্ধ্বমুখী হলেই ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের আশ্বাস

তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত ২৬টি বীমা কোম্পানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

তালিকাভুক্ত -তালিকাভুক্ত ২৬টি বীমা কোম্পানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিএসইসির কার্যালয়ে গতকাল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সময় বীমা কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে ফ্লোর প্রাইসের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। কমিশনের পক্ষ থেকে এটিকে স্বল্পমেয়াদি পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করে পুঁজিবাজার ঊর্ধ্বমুখী হলেই ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করার বিষয়ে আশ্বাস দেয়া হয়।

বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক . শেখ শামসুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তালিকাভুক্ত সাতটি -তালিকাভুক্ত ১৯টি বীমা কোম্পানির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এদের মধ্যে রয়েছে হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, গোল্ডেন লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সানফ্লাওয়ার লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বায়রা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বেস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স, চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এনআরবি গ্লোবাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স, প্রটেক্টিভ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, আলফা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ডায়মন্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স, যমুনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, মার্কেন্টাইল ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, স্বদেশ লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এলআইসি (বাংলাদেশ), মেঘনা ইন্স্যুরেন্স, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স, সাউথ এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্স, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স সিকদার ইন্স্যুরেন্স।

২০২০ সালে ৩০ কোটি টাকার কম পরিশোধিত মূলধন রয়েছে এমন ২৬টি বীমা কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় দেয় বিএসইসি। এক্ষেত্রে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজে কমপক্ষে ইকুইটির ২০ শতাংশ বিনিয়োগের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়। ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স, মেঘনা ইন্স্যুরেন্স, চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স এরই মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে। এই ২৬ কোম্পানির পুঁজিবাজার বিনিয়োগ পরিস্থিতি তদারকির অংশ হিসেবে গতকাল তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসে বিএসইসি।

বৈঠক শেষে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মুখপাত্র মো. রেজাউল করিম বিষয়ে ব্রিফিং করেন। তিনি বলেন, ২৬ বীমা কোম্পানির মধ্যে যেসব কোম্পানি প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে তালিকাভুক্তির আবেদন করেছে বা আইপিও অনুমোদন পেয়েছে তাদের প্রত্যেকে ইকুইটির ২০ শতাংশ বিনিয়োগ করেছে, বৈঠকে সেটি নিশ্চিত করেছে। যারা এখনো আবেদন করেনি তাদের বিনিয়োগের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং তাদেররে ইকুইটির ২০ শতাংশ বিনিয়োগের মাধ্যমে তালিকাভুক্তির জন্য আবেদন করার আহ্বান জানানো হয়েছে। আইপিও আবেদনের ক্ষেত্রে তারা যদি কোনো ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হয়, সে বিষয়ে কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সহযোগিতা করা হবে। আইপিও আসার ক্ষেত্রে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ইতিবাচক থাকার বাধ্যবাধকতা রয়েজে। এক্ষেত্রে ইপিএস কত হতে হবে এমন কোনো সীমা রয়েছে কিনা বীমা কোম্পানির পক্ষ থেকে সেটি জানতে চাওয়া হয়েছিল। বিষয়ে কমিশন থেকে জানানো হয়েছে যে ধনাত্মক ইপিএস থাকলেই আইপিওতে আসা যাবে।

বিএসইসির মুখপাত্র আরো বলেন, বর্তমানে পুঁজিবাজারে ২৬ বীমা কোম্পানির যে বিনিয়োগ আছে, সেটা কীভাবে আরো বাড়ানো যায় এবং বীমা উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএবিনিয়োগ নীতিমালা অনুযায়ী তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজে সর্বোচ্চ পরিমাণ বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। বীমা কোম্পানিগুলো আশ্বস্ত করেছে আগামী কয়েকদিন তারা বিনিয়োগ বাড়াবে। বৈঠকে ফ্লোর প্রাইস নিয়ে বীমা কোম্পানির কেউ কেউ কথা বলেছেন। কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে এটি স্বল্প সময়ের জন্য দেয়া হয়েছে। বাজার ঊর্ধ্বমুখী হলেই কমিশন এটি প্রত্যাহার করার বিষয়টি বিবেচনা করবে।

বৈঠকে বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক . শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাংক স্বল্পমেয়াদি আমানত নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেয়। আর বীমা কোম্পানি দীর্ঘমেয়াদি তহবিল পেয়ে থাকে। জীবন বীমা কোম্পানি অনেক দীর্ঘমেয়াদি তহবিল পায়। সেই তহবিল যদি তারা পুঁজিবাজারে দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করতে পারে, তারা অনেক বেশি রিটার্ন পাবে। সেই বিনিয়োগের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য যদি তাদের বিনিয়োগ শিক্ষার প্রয়োজন পড়ে, সে ক্ষেত্রে কমিশন থেকে ওয়ার্কশপ, সেমিনার ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে। বীমা একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত। অর্থনীতির উন্নয়নে খাতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এই ভূমিকা আগামীতে আরো বাড়বে। সে ক্ষেত্রে কমিশনের দিক থেকে কোনো সহযোগিতার প্রয়োজন পড়লে তা করা হবে। পাশাপাশি আইডিআরএর দিক থেকে কোনো সহযোগিতার প্রয়োজন পড়লে কমিশন থেকে বিষয়ে সহযোগিতার জন্য আইডিআরএকে অনুরোধ করা হবে।

আরও