প্রথমবারের মতো লোকসানে ওয়ালটন হাই-টেক

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত শীর্ষস্থানীয় ইলেকট্রনিক ও হোম অ্যাপ্লায়েন্স উৎপাদক ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসিকে প্রথমবারের মতো লোকসানে পড়তে হয়েছে।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত শীর্ষস্থানীয় ইলেকট্রনিক হোম অ্যাপ্লায়েন্স উৎপাদক ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসিকে প্রথমবারের মতো লোকসানে পড়তে হয়েছে। চলতি ২০২২-২৩ হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) কোম্পানিটির ৪৬ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। যেখানে আগের বছরের একই সময়ে ২৮১ কোটি টাকা মুনাফা করেছিল কোম্পানিটি। গতকাল অনুষ্ঠিত সভায় প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করে কোম্পানিটির পর্ষদ।

চলতি ২০২২-২৩ হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের আয় হয়েছে হাজার ৪৭৮ কোটি টাকা। যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে আয় ছিল হাজার ৭২১ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির আয় কমেছে ১৪ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছে ৪৬ কোটি টাকা। যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে নিট মুনাফা ছিল ২৮১ কোটি টাকা। কাঁচামাল জাহাজী করণের ব্যয় বৃদ্ধি এবং টাকা অবমূল্যায়নের কারণে কোম্পানির ব্যয় বেড়েছে। পাশাপাশি মূল্যস্ফীতির কারণে ভোক্তাদের ক্রয়সক্ষমতা কমায় কোম্পানির ব্যবসায়  নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান (ইপিএস) হয়েছে টাকা ৫২ পয়সা, যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় ছিল টাকা ২৮ পয়সায়। বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর শেষে পুনর্মূল্যায়সহ কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৩১৮ টাকা পয়সায়।

সর্বশেষ ৩০ জুন সমাপ্ত ২০২২ হিসাব বছরে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ২৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ। এর বাইরে উদ্যোক্তা পরিচালকদের জন্য ১৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশের সুপারিশ করেছে কোম্পানিটি। নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৪০ টাকা ১৬ পয়সা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৫৪ টাকা ২১ পয়সা। ৩০ জুন ২০২২ শেষে কোম্পানিটির পুনর্মূল্যায়িত শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৩৩৪ টাকা ৬৮ পয়সায়। যা আগের হিসাব বছর শেষে ছিল ৩১১ টাকা ৫৯ পয়সায়। আর পুনর্মূল্যায়ন ছাড়া এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ২৩১ টাকা ৩৪ পয়সায়। আগের হিসাব বছর শেষে যা ছিল ২০৮ টাকা ১৬ পয়সা।

এর আগে ৩০ জুন সমাপ্ত ২০২১ হিসাব বছরের জন্য উদ্যোক্তা পরিচালকদের ১৭০ শতাংশ নগদ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ২৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৫৪ টাকা ২১ পয়সা। যেখানে আগের হিসাব বছরে ইপিএস ছিল ২৪ টাকা ২১ পয়সা। ৩০ জুন ২০২১ শেষে পুনর্মূল্যায়নসহ কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়ায় ৩১১ টাকা ৫৯ পয়সায়। আগের হিসাব বছর শেষে যা ছিল ২৬৪ টাকা ৪৮ পয়সা। এর আগে ২০২০ হিসাব বছরের জন্য সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ২০০ শতাংশ নগদ এবং উদ্যোক্তা পরিচালকদের ৭৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল কোম্পানিটি।

দেশের পুঁজিবাজারে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের লেনদেন শুরু হয় ২০২০ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর। কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ৬০০ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ৩০২ কোটি ৯২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে হাজার ৭৪২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৩০ কোটি ২৯ লাখ ২৮ হাজার ৩৪৩। এর মধ্যে ৯৯ দশমিক শূন্য শতাংশ শেয়ারই রয়েছে উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে দশমিক ৩৬ শতাংশ, বিদেশী দশমিক ১০ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে দশমিক ৫২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। ডিএসইতে গতকাল ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ারের সর্বশেষ সমাপনী দর ছিল হাজার ৪৭ টাকা ৭০ পয়সা।

আরও