ঈদুল আজহার ছুটির পর পুঁজিবাজারে টানা দরপতন হওয়ায় বাধ্য হয়েই নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ফ্লোর প্রাইস আরোপ করে, যা এখনো চলমান রয়েছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যেও গতকাল প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) একদিনেই সূচক কমেছে প্রায় ২ শতাংশ। তাছাড়া লেনদেনে অংশ নেয়া সিকিউরিটিজগুলোর মধ্যে বেশির ভাগ ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকার পাশাপাশি ৪৫ শতাংশের বেশি দর হারিয়েছে। দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) গতকাল সূচক কমার পাশাপাশি বেশির ভাগ সিকিউরিটিজের দরপতন হয়েছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল সকাল সাড়ে ৯টায় লেনদেন শুরুর পর থেকেই সূচক নিম্নমুখী দেখা যায়। বেলা ১টা ৩৫ মিনিটে ডিএসইর সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১৩৫ পয়েন্ট কমতে দেখা যায়। তবে এরপর সূচকটি সামন্য উত্থান হয়ে ১২০ পয়েন্ট কমে লেনদেন শেষ হয়। দিন শেষে ডিএসইএক্স সূচকের অবস্থান দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৪৫০ পয়েন্টে।
এর আগের কার্যদিবসে যা ছিল ৬ হাজার ৫৭০ পয়েন্টে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইর ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ গতকাল ৪৭ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৩১৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর আগের দিন শেষে যা ছিল ২ হাজার ৩৬২ পয়েন্টে। শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গতকাল দিন শেষে ২৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৪১৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এর আগের কার্যদিবসে যা ছিল ১ হাজার ৪৪৩ পয়েন্টে। গতকাল সূচকের পতনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালস, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, বেক্সিমকো লিমিটেড ও বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ারের।
ডিএসইতে গতকাল ১ হাজার ৪১৭ কোটি টাকার সিকিউরিটিজ লেনদেন হয়েছে। যেখানে আগের কার্যদিবসে লেনদেন ছিল ১ হাজার ১৬৯ কোটি টাকা। গতকাল এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ৩৬৮টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিন শেষে দর বেড়েছে মাত্র ১৯টির, কমেছে ১৬৭টির আর অপরিবর্তিত ছিল ১৮২টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।
খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ২৩ দশমিক ৪ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে ওষুধ ও রসায়ন খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ দখলে নিয়েছে বিবিধ খাত। ১২ দশমিক ৬ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে কাগজ ও মুদ্রণ খাত। মোট লেনদেনের ১২ দশমিক ৩ শতাংশের ভিত্তিতে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে প্রকৌশল খাত। আর আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের দখলে রয়েছে লেনদেনের ৫ দশমিক ২ শতাংশ। গতকাল পুঁজিবাজারে শুধু কাগজ ও মুদ্রণ খাতে দশমিক ৩ শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে। এছাড়া বাকি সব খাত থেকেই নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৯ দশমিক ৩ শতাংশ নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে ভ্রমণ ও আবাসন খাতে। এছাড়া সেবা ও অবকাশ খাতে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ৪ দশমিক ১ শতাংশ নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে গতকাল।
সিএসইর নির্বাচিত সূচক সিএসসিএক্স গতকাল ১৭০ পয়েন্ট কমে ১১ হাজার ৪১৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সিএসইর সব শেয়ারের সূচক সিএএসপিআই ২৮৩ পয়েন্ট কমে ১৯ হাজার ৫০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ২৪৬টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২১টির, কমেছে ১১৯টির আর অপরিবর্তিত ছিল ১০৬টির বাজারদর। গতকাল সিএসইতে ১৯ কোটি টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ১৮ কোটি টাকা।