রাজধানীর ফার্মগেটে অবস্থিত আনন্দ প্রেক্ষাগৃহ। ঢাকায় যে কয়টা প্রেক্ষাগৃহ এখনো ধুঁকে ধুঁকে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে, সেগুলোর মধ্যে এটি একটি। হলটির বর্তমান অবস্থা কী? কী ছবি চলছে? দর্শকের উপস্থিতি কেমন? এসব জানতে গতকাল যোগাযোগ করা হয় হল ম্যানেজার সালাউদ্দিনের সঙ্গে। তার কথায় জানা গেল এ মুহূর্তে হলটিতে চলছে ‘মনে বড় কষ্ট’ চলচ্চিত্র। গত শুক্রবার থেকে এ পুরনো ছবিটিই প্রদর্শিত হচ্ছে।
চলমান মহামারীর কারণে প্রায় দীর্ঘ সাত মাস বন্ধ ছিল প্রেক্ষাগৃহের দরজা। অবশেষে ‘নতুন স্বাভাবিক’
পরিস্থিতিতে গত বছর ১৬ অক্টোবর থেকে চলচ্চিত্র প্রদর্শনের অনুমতি দেয় সরকার। প্রেক্ষাগৃহ খোলার পর থেকে আনন্দ হলে পুরনো ছবিই চলেছে বেশি। নতুন ছবির মধ্যে মুক্তি পেয়েছিল ‘বিশ্বসুন্দরী’,
‘সাহসী হিরো আলম’,
‘তুই আমার রাজা, আমি তোর রানী’। এগুলোর মধ্যে ‘বিশ্বসুন্দরী’
ভালো চলেছে। বাকি ছবিগুলোতে দর্শক সংখ্যা খুব একটা ভালো ছিল না বলে জানালেন হল ম্যানেজার। নতুন বছরে জানুয়ারিতে আর কোনো নতুন ছবি মুক্তি পায়নি হলটিতে। প্রতিদিন হলে দর্শকের উপস্থিতি কেমন? ‘নতুন ছবি চললে দর্শক সংখ্যা একটু বেশি হয়। আর পুরনো ছবি হলে ২০-২৫ জন দর্শক আসে’—সালাউদ্দিন বলেন। এতে প্রতিদিনই লোকসান গুনতে হচ্ছে হল কর্তৃপক্ষকে। হল ম্যানেজারের ভাষ্যে, ‘আমাদের বিদ্যুৎ, পানির বিল, কর্মচারীদের বেতন তিন-চার মাস ধরে আটকে আছে।’
আনন্দ হলে বর্তমানে কর্মচারী রয়েছেন ৪০ জনের মতো। কর্মচারীর সংখ্যা আরো বেশি ছিল। কিন্তু করোনার কারণে বেশ কয়েকজন তাদের পেশা পরিবর্তন করেছেন। প্রতিদিনের লোকসান সত্ত্বেও নতুন ছবির আশায় হল খুলছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে এভাবে চলতে থাকলে আর নতুন ছবি মুক্তি দেয়া না হলে হল বন্ধের আশঙ্কা রয়েছে। মোবাইলে কথার এক পর্যায়ে সালাউদ্দিনের কণ্ঠে আক্ষেপের সুর ভেসে আসে, ‘তিন-চার মাস ধরে বেতন আটকে আছে। যদি আমার পেটই না চলে, তাহলে আমি এ কাজ করব কী করতে?’ প্রতিবেদনটি লেখার আগ পর্যন্ত হলটিতে ‘মনে বড় কষ্ট’
চলচ্চিত্রটিই প্রদর্শিত হচ্ছিল এবং দর্শক সংখ্যা খুব বেশি ছিল না। সার্বিক বিষয়ে কথা বলতে আনন্দ হলের জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ শামসুদ্দিনকে ফোন করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।