হরিপুর গ্যাসক্ষেত্রের ৯ নং কূপ

গ্যাস মিলেছে, তেল পর্যন্ত পৌঁছতে পারেনি বাপেক্স

ত্রিমাত্রিক জরিপ শেষে সিলেটের হরিপুর গ্যাসক্ষেত্রের ৯ নং কূপে তেল থাকতে পারে বলে জানিয়েছিল বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি (বাপেক্স)। এরপর নতুন এ কূপ খননের কাজ শুরু করে তারা। তবে তেলের গভীরতা পর্যন্ত পৌঁছতে পারেনি বাপেক্সের খনন যন্ত্র। তেলের গভীরতায় পৌঁছতে না পারলেও এর উপরিভাগেই মিলেছে গ্যাসের সন্ধান। শিগগিরই দেশের প্রাচীনতম এ গ্যাসক্ষেত্রের নতুন কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

ত্রিমাত্রিক জরিপ শেষে সিলেটের হরিপুর গ্যাসক্ষেত্রের নং কূপে তেল থাকতে পারে বলে জানিয়েছিল বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি (বাপেক্স) এরপর নতুন কূপ খননের কাজ শুরু করে তারা। তবে তেলের গভীরতা পর্যন্ত পৌঁছতে পারেনি বাপেক্সের খনন যন্ত্র। তেলের গভীরতায় পৌঁছতে না পারলেও এর উপরিভাগেই মিলেছে গ্যাসের সন্ধান। শিগগিরই দেশের প্রাচীনতম গ্যাসক্ষেত্রের নতুন কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

হরিপুরই এখন পর্যন্ত দেশের একমাত্র অঞ্চল, যেখানে তেলের সন্ধান মিলেছে। ১৯৮৬ সালে হরিপুর গ্যাস ক্ষেত্রের নম্বর কূপ খনন করা হয়। ওই বছরের ২৩ ডিসেম্বর কূপটিতে তেল পাওয়া যায়। এরপর ১৯৮৯ সালে হরিপুর গ্যাসক্ষেত্রের নম্বর কূপ খনন করা হয়। সেই কূপেও তেল পাওয়ার সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত গ্যাস পাওয়া যায়।

হরিপুর গ্যাসক্ষেত্র সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের (এসজিএফএল) আওতাধীন। এসজিএফএলের মহাব্যবস্থাপক (পরিচালন) প্রদীপ কুমার বিশ্বাস বলেন, গ্যাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়ার পর আমরা এখন ড্রিল স্টেম টেস্ট (ডিএসটি) করছি। এরপর উৎপাদন শুরু করা হবে।

নতুন কূপ থেকে উৎপাদনে যেতে বেশিদিন সময় লাগবে না জানিয়ে কর্মকর্তা বলেন, আমরা চলতি মাসের মধ্যেই উৎপাদনে যাওয়ার আশা করছি। নতুন কূপ থেকে প্রতিদিন সাত মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে।

এসজিএফএল সূত্রে জানা যায়, ত্রিমাত্রিক ভূকম্পন জরিপ শেষে কূপটির হাজার ৭২ থেকে হাজার ৯৪ মিটার গভীরতায় তেল আছে বলে ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু খননকালে ওই স্তরে পৌঁছতে পারেনি বাপেক্সের খনন যন্ত্র (রিগ) হাজার ২৫ মিটারে রিগটি আটকে যায়। ভূতাত্ত্বিক জটিলতা এবং খননকাজ পরিচালনায় ত্রুটির কারণে এমনটি হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ফলে সম্ভাব্য তেলের স্তরটি বাদ দিয়ে এর ওপরে চিহ্নিত চার স্তর থেকে গ্যাস উত্তোলনের প্রক্রিয়া হিসেবে ডিএসটি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ত্রিমাত্রিক জরিপ শেষে গত বছরের অক্টোবর থেকে কূপের খননকাজ শুরু হয়। ৯৪ দিন পর গত জানুয়ারি সন্ধ্যায় হাজার ৯৯৮ মিটার নিচে গ্যাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়া যায়।

নম্বর কূপের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) আব্দুল জলিল প্রামাণিক জানান, কূপে গ্যাস মিলেছে। পরীক্ষামূলক উত্তোলন চলছে। এর বাইরে তিনি আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

পেট্রোবাংলার তথ্য অনুযায়ী, ১৯৫৫ সালে সিলেটের হরিপুরে দেশের প্রথম গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়। গ্যাসক্ষেত্রের একটি কূপে আশির দশকে প্রথমবারের মতো তেলের সন্ধান পাওয়া যায়। ১৯৮২ সালে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের কার্যক্রম শুরু হলে হরিপুর গ্যাসক্ষেত্র প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।

বর্তমানে এসজিএফএলের অধীনে পাঁচটি গ্যাসক্ষেত্র রয়েছে। এগুলো হচ্ছে হরিপুর গ্যাস ফিল্ড, রশিদপুর গ্যাস ফিল্ড, ছাতক গ্যাস ফিল্ড, কৈলাশটিলা গ্যাস ফিল্ড বিয়ানীবাজার গ্যাস ফিল্ড। পাঁচটি ফিল্ডসের নয়টি কূপ থেকে বর্তমানে গ্যাস উত্তোলন হচ্ছে। তবে ছাতক গ্যাস ফিল্ড বর্তমানে পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে।

আরও