তামাক এমন একটি পণ্য, যার ব্যবহারে ক্ষতি ছাড়া কোনো উপকার হয় না। তবু এ পণ্য বাজারে আছে এবং রমরমা ব্যবসা করছে। অর্থাৎ মানুষ পয়সা খরচ করে কিনছে। যারা ব্যবহার করে এবং যারা করে না, সবাই জানে এর ক্ষতির কথা। যখন একজন রিকশাওয়ালাকে দেখি সিগারেটে টান দিয়ে রিকশা চালাতে, কিংবা যখন দেখি একজন মহিলা ইট ভাঙার কাজ করছেন আর মুখ লাল করে জর্দা দিয়ে পান খাচ্ছেন, তখন খুব দুঃখ হয়। এসব পণ্য খুচরা কেনার জন্য খুব সস্তা, তাই খাদ্যের পরিবর্তে কয়েকবার তামাক পণ্য সেবন করে ফেলছেন। বাংলাদেশ বিশ্বে উচ্চ তামাক সেবনকারী দেশ, এখানে তামাক পণ্য খুব সস্তা বলেও ‘খ্যাতি’ আছে। বছরে ১ লাখ ৬২ হাজার মৃত্যু ঠেকাতে তামাক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের জন্য আইন আছে। আন্তর্জাতিক আইন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল, ২০০৩ (এফসিটিসি) অনুযায়ী আইন করে এর ব্যবহারের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার ঘোষণা দিয়েছে ২০৪০ সালে তামাকমুক্ত করবে নিজেকে। তামাকমুক্ত হতে হলে তামাকের ব্যবহার শূন্য হতে হবে এমন কথা নেই, প্রাপ্তবয়স্ক জনগণের ৫ শতাংশ ব্যবহারকারী হলেই তামাকমুক্ত দাবি করা যাবে।
তামাক কোম্পানি প্রায় শত বছর ধরে মানুষের মধ্যে ধোঁয়া এবং নাকে নস্যি দেয়া বা মাড়িতে তামাক লাগানো ইত্যাদি পদ্ধতিতে এক ধরনের নেশা তৈরির ব্যবসা করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের মতো দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোয় পান খাওয়ার যে সামাজিক সাংস্কৃতিক রীতি আছে, তার মধ্যেও জর্দা হয়ে ঢুকে আছে এ তামাক। সিগারেট খাওয়া ভদ্রলোকের বিষয় বানিয়ে ফেলেছে, শুধু একটু আদব-কায়দা মেনে মুরব্বিদের সামনে না খেলেই হলো। আর এখন? সিগারেট ক্ষতিকর—এটা যত প্রমাণ ও স্বীকৃত হচ্ছে, কোম্পানিগুলো নতুন তামাক পণ্য নিয়ে বাজার ছেয়ে ফেলছে; ই-সিগারেট; ভাপিং ইত্যাদি নামে। তারা দাবি করছে, তামাক নয় নিকোটিন দিয়ে ধোঁয়ার স্বাদ নিচ্ছে মানুষ। তামাক ছাড়তে হলে অন্য একটি পণ্য ব্যবহারের প্রয়োজন হয়। ‘ই-সিগারেট সেই প্রয়োজন মেটাবে’ এমন মিথ্যা ও খোঁড়া যুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। অবশ্য এরই মধ্যে