করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা ওই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে থাকে। এ প্রতিরোধক্ষমতা এক পর্যায়ে অনিয়ন্ত্রিতভাবে সক্রিয় হয়ে শরীরের অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গে প্রদাহের সৃষ্টি করে। ফলে নানা শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়। একে মাল্টিসিস্টেম ডিসঅর্ডার বলা হয়। এর কারণে ফুসফুসসহ শরীরের নানা অঙ্গপ্রতঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যেমন দুর্বলতা, অল্পতে হয়রান লাগা, ক্লান্তি ভাব ইত্যাদি। বয়স, লিঙ্গ ও রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতাভেদে এর প্রভাব ভিন্ন।
ফুসফুস:
করোনাভাইরাসের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফুসফুস। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরও তার কাশি, শ্বাসকষ্ট দীর্ঘদিন ধরে থেকে যেতে পারে। ফুসফুসের এ দুর্বলতার কারণে দেখা যায় রোগীরা অল্পতেই খুব হাঁপিয়ে ওঠেন। যেসব রোগীর আইসিইউ বা জরুরি অক্সিজেন নিতে হয়েছে তাদের অনেকের ফুসফুসে পালমোনারি ফাইব্রোসিস সমস্যা দেখা দেখা দিতে পারে।
কিডনি:
যারা দীর্ঘদিন ধরে কিডনির জটিলতায় ভুগছিল এবং নিয়মিত ডায়ালাইসিস করতে হয় তারা করোনাভাইরাস থেকে সেরে ওঠার পরও বড় ধরনের ঝুঁকিতে থাকে।
করোনাভাইরাসের কারণে কিডনিতে সমস্যা না হলেও ডায়ালাইসিস ও হাই পাওয়ারফুল ওষুধ সেবনের কারণে রোগীর রোগ প্রতিরোধক্ষমতা স্বাভাবিকভাবেই দুর্বল হয়ে পড়ে। তবে যাদের কিডনি জটিলতা নেই তাদের দুশ্চিন্তার কিছু নেই বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
লিভার:
ভাইরাসজনিত রোগে আক্রান্ত হলে লিভার স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর পরিস্থিতি যদি জটিল পর্যায়ে পৌঁছায় তাহলে পরবর্তী সময়ে তাদের জন্ডিস, লিভার ফেইলিউর হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
প্যানক্রিয়াস:
করোনায় আক্রান্ত অনেক রোগী অ্যাকিউট প্যানক্রিয়াটাইটিস বা অগ্ন্যাশয়জনিত জটিলতায় আক্রান্ত হয়। বিশেষ করে যাদের আগ থেকেই হাই প্রেশার, লো প্রেশার, কোলেস্টেরল বা ডায়াবেটিসজনিত সমস্যা আছে তারা কভিড-পরবর্তী সময়েও ঝুঁকিতে থাকে।
কভিড থেকে সেরে ওঠার পরও অনেকের ক্ষুধামান্দ্য দেখা দেয়, ওজন খুব দ্রুত কমে যায়। ফলে প্রেশার লো হয়ে আসে। আবার যারা হাইপারটেনশনে ভোগেন তাদেরও প্রেশার হঠাৎ হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
সূত্র: বিবিসি