বাতজ্বরে বেশি ভুগে থাকে শিশুরা। যেসব শিশুর একবার বাতজ্বর হয়ে গেছে তাদের জীবনযাপনে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। যেমন প্রতিদিন ৯-১০ ঘণ্টা ঘুমানো, নিয়মিত খেলাধুলা করা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশে সময় কাটানো, দুপুরে বিশ্রাম নেয়া, ঠাণ্ডা যাতে না লাগে সেক্ষেত্রে সতর্ক থাকা ইত্যাদি। খাবারদাবারের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যেমন নিয়মিত শাকসবজি, ফল, মাছ, শস্যদানা জাতীয় খাবার খাওয়া। প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলা জরুরি।
মা-বাবা বা অভিভাবকরা সচেতন হলে শিশু-কিশোররা বাতজ্বরে আক্রান্ত হওয়া থেকে অনেকাংশেই রক্ষা পেতে পারে। এজন্য শিশুর জ্বর, গলাব্যথা বা গিঁটেব্যথা দেখা দেয়া মাত্রই তাকে নিয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। শিশুকে একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর কিছু পরীক্ষার জন্য ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া উচিত।
সুস্থ হয়ে যাওয়ার পর আবার শিশুর দুর্বলতা, ফ্যাকাসে বর্ণ ধারণ করা বা শিশুর শরীরের বৃদ্ধি ঠিকমতো না ঘটলে অবিলম্বে শিশুচিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।
শিশুর বাতজ্বর হলে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে প্রয়োজনে হাসপাতালে ভর্তি করে দ্রুত চিকিৎসা দেয়া উচিত। প্রাথমিক অবস্থায় সুনির্দিষ্ট প্রতিরোধক ওষুধ বা পেনিসিলিন গ্রহণের মাধ্যমে শিশুর বাতজ্বর ও বাতজ্বরজনিত হৃদরোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। এজন্য ৫-১৫ বছর বয়সের ছেলেমেয়ের স্ট্রেপটো গলাব্যথা সন্দেহ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা করানো হলে বাতজ্বর হওয়া থেকে শিশুকে রক্ষা করা সম্ভব।
যারা এক বা একাধিকবার বাতজ্বরে আক্রান্ত হয়েছে অথবা বাতজ্বরজনিত হৃদরোগে ভুগছে, তাদের জন্য এ ব্যবস্থা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ব্যবস্থায় প্রতি তিন-চার সপ্তাহ অন্তর একটি বেনজাথিন পেনিসিলিন ইনজেকশন দিতে পারে।
যারা বাতজ্বরে আক্রান্ত হয়েছে কিন্তু হৃদযন্ত্রের ক্ষতি হয়নি, তাদের কমপক্ষে পাঁচ বছর এ প্রতিরোধক ব্যবস্থা নিতে হতে পারে। বাতজ্বরজনিত হৃদরোগে আক্রান্ত হলে এ ধরনের চিকিৎসা দীর্ঘদিন ধরে বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে সারা জীবন গ্রহণ করতে হতে পারে।