ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি মূলত একটি স্নায়ুজনিত রোগ। বিশেষজ্ঞদের মতে, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ৫০ শতাংশেরই এ ধরনের কমপ্লিকেশন দেখা যায়। এ রোগে রক্তের উচ্চমাত্রার গ্লুকোজ আমাদের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় যেসব স্নায়ু থাকে, তা নষ্ট করে দেয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের পা এবং পায়ের পাতা এ ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়। সারা শরীরে অনুভূতি ও চলাফেরা নিয়ন্ত্রণের জন্য স্নায়ু বিস্তৃত থাকে। তাই সব ধরনের স্নায়ু এ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
কোন ধরনের স্নায়ু আক্রান্ত হয় সেটির ওপর নির্ভর করে কোন অঙ্গ ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথিতে আক্রান্ত হবে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে হাত ও পা, খাদ্যনালি, মূত্রনালি ও তন্ত্র, রক্তনালি, হার্ট—এসব অঙ্গ ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথিতে আক্রান্ত হয়।
বিভিন্ন ধরনের স্নায়ু ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথিতে আক্রান্ত হওয়ার কারণে এর লক্ষণগুলো বিভিন্ন রকম দেখা যায়। তবে উল্লেখযোগ্য লক্ষণগুলো হচ্ছে হাত ও পায়ে অবশ বা ঝিনঝিন অনুভূত হওয়া, হাত ও পায়ে জ্বালাপোড়াজাতীয় সমস্যা, সংবেদনশীলতা বেড়ে যাওয়া, যেমন অল্প চাপেই ব্যথা অনুভূত হয় বা যেসব আঘাতে সাধারণত সবাই ব্যথা পায় না সেসব ব্যথা, আঘাতে ব্যথা পাওয়া, খাদ্যনালির স্নায়ু আক্রান্ত হওয়ার কারণে ক্ষুধামান্দ্য, বমি বমি ভাব—এ জাতীয় লক্ষণ প্রকাশ পায়, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে ব্যথা অনুভূত হওয়া, পায়ে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষত তৈরি হয়।
যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তাদের প্রয়োজন বিশেষ সতর্কতা। তাদের নিয়মিত রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। ডায়াবেটিসের ওষুধ যথানিয়মে সেবন করতে হবে। ছয় মাস পর পর অথবা চিকিৎসক নির্ধারিত সময় পর পর চিকিৎসকের সঙ্গে ফলোআপ করা এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা এবং ওজন নিয়ন্ত্রণ করা।
ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথিতে ব্যথাসহ অন্য অনেক সমস্যা হতে পারে। এ রোগ থেকে সুস্থ থাকতে সচেতনতাই প্রথম ও কার্যকর পদক্ষেপ।