মুদ্রানীতির ব্যবস্থাপনা ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ

গত ৩০ জুন, যেদিন বাজেট ২০২২-২৩ অনুমোদিত হলো, সে দিনই একই বছরের মুদ্রানীতিও ঘোষিত হলো। এ দুটি বিষয়ই অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ, আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরে ম্যাক্রো অর্থনীতি, কর ব্যবস্থা, আর্থিক বাজার ব্যবস্থাপনার অনেক দিকনির্দেশনা এ দলিল দুটিতে রয়েছে। গুরুত্বের দিক থেকে মুদ্রানীতি ব্যবস্থাপনা অনেক ব্যাপক, একটি সাম্প্রতিক আলোচনায় বলা হয়েছে, বাজেট নিয়ে যে রকম হইচই হয় সে রকমটা মুদ্রানীতির ক্ষেত্রে হয় না কেন, অথচ বাজেটে জিডিপির মাত্র ১৫ দশমিক ২ শতাংশ দখল করে আছে, সেখানে মুদ্রানীতির প্রতিফলন অর্থনীতিজুড়ে।

গত ৩০ জুন, যেদিন বাজেট ২০২২-২৩ অনুমোদিত হলো, সে দিনই একই বছরের মুদ্রানীতিও ঘোষিত হলো। দুটি বিষয়ই অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ, আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরে ম্যাক্রো অর্থনীতি, কর ব্যবস্থা, আর্থিক বাজার ব্যবস্থাপনার অনেক দিকনির্দেশনা দলিল দুটিতে রয়েছে। গুরুত্বের দিক থেকে মুদ্রানীতি ব্যবস্থাপনা অনেক ব্যাপক, একটি সাম্প্রতিক আলোচনায় বলা হয়েছে, বাজেট নিয়ে যে রকম হইচই হয় সে রকমটা মুদ্রানীতির ক্ষেত্রে হয় না কেন, অথচ বাজেটে জিডিপির মাত্র ১৫ দশমিক শতাংশ দখল করে আছে, সেখানে মুদ্রানীতির প্রতিফলন অর্থনীতিজুড়ে।

আবার হয়তো এটাও হতে পারে মুদ্রানীতি কিছুটা তাত্ত্বিক, যেখানে বাজেট বক্তৃতা সার্বজনীন, সমগ্র মিডিয়ায় এর ব্যাপক প্রচার হয়ে থাকে, সে রকমটি মুদ্রানীতির ক্ষেত্রে হয় না। যদিও মুদ্রানীতিতে বলা হয়েছে এটি সংশ্লিষ্ট মহলে বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমেই প্রণয়ন করা হয়েছে।  বাজেটে কিছুটা নয় বরং অনেকটাই রাজনৈতিক বক্তব্য। অন্যদিকে মুদ্রানীতি পুরোটাই বাস্তব অবস্থাজনিত, কিছুটা টেকনিক্যাল হয়তো সাধারণের জন্য তেমন বোধগম্য নয়। অন্যদিকে এত মূল্যস্ফীতি হয়েছে, সাধারণের কোনো উচ্চবাচ্য নেই। তারা ধরেই নিয়েছে, এটা মেনে নিয়েই বাঁচতে হবে। অর্থাৎ সর্বসাধারণের কী কারণে মূল্যস্ফীতি সেটি ভাবার বা বোঝার ব্যাপারে তেমন আগ্রহ নেই। তাই বাজেট সম্পর্কে খবর যতটা না প্রচার হয়, তার থেকে অনেক কম আলোচনা হয় মুদ্রানীতি নিয়ে।

বাজেটে যেখানে দশমিক শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে সেখানে মুদ্রানীতিতে অর্থের সরবরাহ কমিয়ে নিয়ে এসে, বিনিময় হারকে সঠিক রেখে (বিনিময় হার বর্তমানে প্রতি ডলারে ৯২ দশমিক ৯৫ টাকা, কার্ব মার্কেটে ১০০ টাকার কাছাকাছিকর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার প্রচেষ্টা নেয়ার কথা বলা হয়েছে। বলাই বাহুল্য মুদ্রানীতি বছর এমন একটি সময়ে ঘোষণা করা হয়েছে যখন বিশ্ব একটি টালমাটাল অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এই প্রথম উন্নত দেশের ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতি উন্নয়নশীল দেশের  চেয়ে বেশি। অন্যদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে জ্বালানি তেলের ক্ষেত্রে দেখা দিয়েছে এক অনিশ্চয়তা, দেশগুলো এখন নানা রকম বিকল্প জ্বালানি খোঁজার চেষ্টা করছে, যেখানে বাংলাদেশও ব্যতিক্রম নয়। সরকার অফিস সময় পরিবর্তন, লোডশেডিং, ওয়ার্ক ফ্রম হোম এমনকি কোল-বেইজড পাওয়ার প্লান্টে কেন গেলাম না সে ব্যাপারেও আলোচনা করছে। কারণ, আমদানীকৃত গ্যাসের দাম বেড়েছে বিপুল পরিমাণে এমনকি কিছুদিন পর হয়তো সরবরাহ পাওয়াও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। রকম পরিস্থিতিতে একমাত্র ভরসার কথা পদ্মা সেতুর উদ্বোধন যার মাধ্যমে পদ্মার দুই পারের অর্থনৈতিক কার্যক্রম জোরদার হবে, কিন্তু তার জন্য কিছুটা সময়ের দরকার।

তাহলে আর কী করা, সরকার তাই বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয়ার চিন্তা করছে, তার মধ্য একটি হলো বৈদেশিক মুদ্রা খরচে সাশ্রয়ী হওয়া, অর্থাৎ লাক্সারি পণ্যের আমদানি কমিয়ে দেয়া, মুদ্রানীতিতে তিনটি পণ্যকে চিহ্নিত করা হয়েছে যেমন ক্যান্ড ফুড এবং প্রসেসড ফুড, নন-সিরিয়াল ফুড, ফ্রুটস। এবং শতভাগ এলসি মার্জিনে আমদানি, যাতে অপ্রয়োজনীয়  আমদানি ক্রমাগত নিরুৎসাহিত হওয়া। তবে ক্ষুদ্র উদ্যোগ বিপদে পড়েছে। এলসি মার্জিন বেড়ে যাওয়া এবং ডলারের অত্যধিক মূল্যবৃদ্ধি তাদের কাঁচামাল আমদানিতে প্রভাব ফেলেছে, অন্যদিকে ব্যবসায় এবং এসএমইও উদ্যোক্তারা বেশ সমস্যার মধ্য রয়েছে, অনেক পণ্যের ক্ষেত্রে রেগুলেটরি ডিউটি বেড়েছে। একে ডলারের দাম ঊর্ধ্বমুখী তার ওপর উচ্চ মার্জিন, যা তাদের প্রয়োজনীয় জিনিস আমদানিতে বাধা দিচ্ছে বা অতিমূল্যে তা আমদানি করতে হচ্ছে।

বিলাসবহুল পণ্যের নিরুৎসাহিতকরণ সবাই মেনে নিয়েছে, তবে কোন কোন পণ্য বিলাসবহুল এবং কোনগুলো বিলাসবহুল পণ্য নয়, তার ব্যাখ্যা কে দেবে। কারো জন্য বা ক্ষেত্রে যেটা বিলাসবহুল সেটা অন্যের কাছে প্রয়োজনীয় হতে পারে, ব্যাপারে এনবিআরের  সার্কুলারে পরিষ্কার কিছু বোঝা যায় না। মুদ্রানীতিতে যে পণ্যগুলোকে নিরুৎসাহিত করার কথা বলা হয়েছে, সেগুলো আমদানিকারক দেশে চাহিদা আছে বলেই আমদানিকারক আমদানি করেন, কাজেই তার ব্যবসার ক্ষেত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এক্ষেত্রে কারো মতে একেবারে বন্ধ করে দেয়া ভালো, কারো মতে উচ্চ শুল্ক দিয়ে নিরুৎসাহিত করা শ্রেয়। সরকার উচ্চ শুল্ক দিয়ে আমদানি নিরুৎসাহিত করার কথাই ভাবছে। তবে জুলাই-এপ্রিল ২০২২ পর্যন্ত আমদানি প্রায় ৭০ কোটি টাকার মতো, এর মধ্যে শুধু ক্যাপিটাল মেশিনারি আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়েছিল ৫৫ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ইউএস ডলারের। শিল্প খাতে অবশ্য তেমন বিশেষ প্রবৃদ্ধি দেখা যায়নি। তবে মুদ্রা নীতির মতে বৃহৎ উৎপাদন খাতে আউটপুট বেড়েছে ১৭ দশমিক শূন্য শতাংশ (জুলাই-ফেব্রুয়ারি ২০২২) যা জুলাই-ফেব্রুয়ারি ২০২১- ছিল দশমিক ১৫ শতাংশ।

এমনিতেই বিনিয়োগ বিগত ২০২০ থেকেই কভিডের কারণে নিম্নমুখী, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার লক্ষ্যমাত্রার ৩৭ শতাংশের দিকে যাওয়ার  ক্ষেত্রে আমরা  এখনো অনেক পিছিয়ে রয়েছি। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে বিনিয়োগ ছিল জিডিপির ২৮ দশমিক শতাংশ, ২০১৯- তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩২ দশমিক ২১, ২০২০-  পরিমাণ কিছুটা হ্রাস পেয়ে দাঁড়ায় ৩১ দশমিক ৩১, ২০২১- কিছুটা বেড়ে ৩১ দশমিক শূন্য আর ২০২২- আরো কিছুটা বেড়ে ৩১ দশমিক ৩৮ শতাংশ। সরকারি বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধি দশমিক শতাংশ, যেখানে বেসরকারি বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধি দশমিক শতাংশ। কর্মসংস্থানের যে লক্ষ্যমাত্রা তা অর্জন করতে বিনিয়োগকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবেই। এক্ষেত্রে বেসরকারি বিনিয়োগ আকর্ষণে তাত্ক্ষণিক মুদ্রানীতিতে তেমন আশার কথা নেই। সে কারণেই অনেকে মনে করেন মুদ্রানীতি বরাবরের মতো ছয় মাসের বা অন্য অনেক দেশের উদাহরণের মতো  ত্রৈমাসিক মুদ্রানীতিও করা যায় যাতে অবস্থার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মুদ্রা ব্যবস্থাপনার পরিবর্তন আনা যায় বা বেসরকারি খাতকে আশ্বস্ত করতে পারে যে সংকোচনের নীতি অবস্থার নিরিখেই নেয়া হয়েছে, অর্থ সরবরাহ এবং ক্রেডিট  ফ্লো যেকোনো সময় বাড়তে পারে।

মুদ্রানীতিতে সিআরআর বা ক্যাশ রিজার্ভ রিকয়ারমেন্ট জুন ২০২২ সময়ে ভাগ নির্ধারণ করা আছে অর্থাৎ ব্যাংকের ডিপোজিটের পরিমাণ তরল অর্থ বজায় রাখতে হবে, অন্যদিকে এসএলআর ১৩ ভাগ, দুটি বিষয় অর্থায়ন সংস্থাগুলোয় তরলতা এবং এসএলআর সরকারের সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ ধরে রাখতে ব্যবহার করা হয়। অন্যদিকে ঈদের আগের দিন কলমানি রেট হঠাৎ বেড়ে দশমিক ৮৫ শতাংশে দাঁড়ায়, উদ্যোক্তাদের মতে, রেপো রেট বাড়ানোর কারণে কলমানি রেট বেড়েছে। অর্থাৎ রেপো রেট বৃদ্ধির অন্য ইমপ্যাক্টও আছে।

তবে এটা অবশ্যই সত্য যে অর্থের  সার্কুলেশন কমিয়ে এবং পলিসি রেট  বাড়িয়ে বেসরকারি খাতের জন্য ক্রেডিটকে কিছুটা অনিশ্চিত বা ঝুঁকিপূর্ণ করা হয়েছে, অন্যদিকে সুদের হার নির্ধারিত রয়েছে। মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ায় ডিপজিট হারের দিকে খেয়াল করতে হচ্ছে, ক্ষুদ্র সঞ্চয়কারী বাড়তি সুদের জন্য তাড়া দিচ্ছে, ব্যাংক সুদের হার কিছুটা বাড়িয়েছে। সংগত কারণে বেসরকারি খাতের ঋণ পেতে আরো সমস্যা হবে বা পাবে না। এতে বিনিয়োগ বিশেষ করে ক্ষুদ্র এবং নতুন বিনিয়োগ বিঘ্নিত হবে। ঋণ সুদের যে সীমা রয়েছে তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের মতো একটা বাজার অর্থনীতিতে সুদ-হার বেঁধে দেয়া কতখানি যুক্তিযুক্ত হয়েছে। বিজ্ঞজনের মতে, বেসরকারি খাতের অনুরোধেই এটা ফিক্সড করে রাখা হয়েছে এবং সুদহার নির্ধারণে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের প্রস্তাব  এসেছে। এটা বাজারের ওপর ছেড়ে দিলেও সময়মতো সরকারকে হস্তক্ষেপ করতেই হয়। যাই হোক ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা এবং বিশ্লেষণ দরকার, সংশ্লিষ্ট  প্রতিষ্ঠানগুলো বাজার ব্যবস্থা বিশ্লেষণ করে একটি সুন্দর সুদ নীতি নিয়ে আসবেন এটাই আশা করা যায়। 

এদিকে ব্যাংকগুলোয় ক্লাসিফায়েড ঋণের পরিমাণও বেড়ে গেছে, যা প্রায় দশমিক ৫৩ শতাংশ, গত বছর এর পরিমাণ ছিল দশমিক ৯৩। এছাড়া রয়েছে ননপারফরমিং লোন, যার ব্যাপারে মুদ্রানীতিতে কোনো কিছু উল্লেখ করা হয়নি। কোনো কোনো তথ্যে এর পরিমাণ ট্রিলিয়ন টাকার ওপরে। ক্রমাগত প্রভিশনিংয়ের মাধ্যমে অ্যাডহক ব্যবস্থায় এগুলো বার্ষিক প্রতিবেদনে রাখা হয়েছে। বলা যায় না এত বিপুল পরিমাণ নন-পারফরমিং অর্থ মূল্যস্ফীতিতে অবদান রাখছে। ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থার কথা বলা হয়নি। সব বিবেচনায় এবং তথ্যে মানি মার্কেটের পরিস্থিতি খুব একটা স্থিতিশীল নয়, মুদ্রানীতি ব্যাপারে  কী ধরনের  সুবিধা দিতে পারে তার বিশ্লেষণ থাকা গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

আশার কথা, রফতানি বেড়েছে এবং পদ্মা সেতু অচিরেই অর্থনীতি চাঙ্গা করার ক্ষেত্রে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে বলে ধরে নেয়া যায়। এছাড়া মুদ্রানীতিতে স্টিমুলাস প্যাকেজের কথা বলা হয়েছে। কিছু  ছোট উদ্যোক্তা প্যাকেজের  সুবিধা পেয়েছে। আমরা জানি, সরকার বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে বেশ বড় পরিমাণের প্রায় ট্রিলিয়নের বেশি অর্থ বিতরণের চেষ্টা করেছিল, অর্থ আবর্তনশীল  আকারে তিন বছর সময় ধরে দেয়া হবে। একজন এক বছর ধরে সাশ্রয়ী ঋণটি ব্যবহার করবে কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি, আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত মোরাটরিয়াম দেয়া হয়েছে। কারণ এসব ঋণগ্রহীতা কেউই কভিড-পূর্ব অবস্থায় ফিরে যেতে পারেনি, তাই ঋণ শোধ করতে সক্ষম হয়নি। এছাড়া কুটির, মাইক্রো উদ্যোক্তা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত, এদের মধ্যে কে কত ঋণ পেয়েছে তা জানা যায়নি, কারণ রকম সঠিক তথ্য কিছুদিন প্রকাশিত হলেও সম্প্রতি আর প্রকাশিত হয়নি।

বাংলাদেশ ব্যাংক অবশ্য বিভিন্ন স্কিম, রিফাইন্যান্সিং স্কিম গ্রহণ করে একেবারে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের কাছে পৌঁছানোর প্রচেষ্টা নিচ্ছে, যেমন ন্যানো  মার্চেন্টদের কাছে পৌঁছানোর জন্য একটি ডিজিটাল লোনের ব্যবস্থা জুন মাসেই করা হয়েছে, যার মাধ্যমে ৫০০ থেকে ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেয়া হবে ডিজিটাল মাধ্যমে। এই প্রথমবারের মতো বাংলা কিউআর কোড অর্থাৎ ইএমভি কমপ্লায়েন্ট (আইএসও ১৮০০৪-কমপ্লায়েন্ট) বাংলা কিউআর ব্যবহার করা হবে বলে বলা হয়েছে, এতে বিভিন্ন পেমেন্ট গেটওয়ে ব্যবহার করে ডিজিটাল লোন প্রাপ্তি অনেকটা সহজতর হবে। লোনের ক্ষেত্রে সময়সীমা ছয় মাস, বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা মেনে অনুমোদন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঋণ বিতরণ হবে, যেখানে ট্রেড লাইসেন্সের দরকার হবে না। জাতীয় পরিচয়পত্র, নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বরের মাধ্যমেই ঋণ বিতরণ হবে। ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপস, এমএফএস, -ওয়ালেট  ইত্যাদির মাধ্যমে ঋণ বিতরণ হবে। তবে এত ক্ষুদ্র ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে শর্ত যতটা সহজ করা যায় ততই এর ব্যবহার বাড়বে এবং ক্ষুদ্র উদ্যোগ উৎসাহিত হবে, যা আমাদের জন্য বিশেষভাবে দরকার।

বলা হচ্ছে, মূল্যস্ফীতি আমদানিপ্রসূত। কারণ সরবরাহ ব্যবস্থায় এখনো কোনো সমস্যা দেখা যায়নি। কাজেই আমদানিকে নিয়ন্ত্রণ করা দরকার, অর্থাৎ অপ্রয়োজনীয় আমদানি আমরা অবশ্যই কমিয়ে আনতে পারি। সে সঙ্গে এটাও বলা দরকার যেহেতু পলিসি রেটের সঙ্গে ল্যান্ডিং রেটের একটা সুদৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে তাই বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। অগ্রাধিকারমূলক খাতগুলোয় এর প্রতিফলন কী রকম তা বিশ্লেষণ দরকার, যাতে একটি সঠিক সুদনীতির প্রস্তাবও মুদ্রানীতির অংশ হতে পারে।

ফেরদাউস আরা বেগম: প্রধান নির্বাহী

বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্ট (বিল্ড)

আরও