লাইভ জিন ব্যাংক খাবারের পাতে ফিরিয়ে আনছে দেশী মাছের স্বাদ

আমাদের খাদ্য তালিকায় পুঁটি, মলা, শিং, মাগুর, কৈ, টেংরা, পাবদা, গুলশাসহ নানা প্রজাতির দেশীয় মাছ প্রাণিজ পুষ্টির প্রধান উৎস। বর্তমানে দেশের মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় ১৪ লাখ নারীসহ ১ কোটি ৯৫ লাখ বা ১২ শতাংশ মানুষ মৎস্য খাতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে।

পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্রসহ অসংখ্য নদ-নদী, হাওর-বাঁওড়, খাল-বিল, পুকুর-দিঘিসহ বিস্তীর্ণ সাগর ও বৈচিত্র্যময় জলাশয় নিয়ে বাংলাদেশ। জলজ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও জাতীয় অগ্রগতি ত্বরান্বিত করতে জলজ সম্পদের সর্বোত্তম ও কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিতকরণ অত্যাবশ্যক। আবহমানকাল থেকে মৎস্য ও মৎস্যসম্পদ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। দেশের আপামর জনসাধারণের জন্য নিরাপদ প্রাণিজ আমিষ সহজলভ্য ও নিশ্চিতকরণ, দারিদ্র্য দূরীকরণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনসহ সুস্থ, উদ্যমী ও মেধাবী নতুন প্রজন্ম গড়ে তুলতে মৎস্য খাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় মৎস্য খাতের অর্জিত সাফল্যের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ মৎস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও জনসংখ্যার ক্রমাগত বৃদ্ধির ফলে অতিআহরণ, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব, যত্রতত্র নগরায়ণ ও শিল্পায়ন এবং মানবসৃষ্ট নানা কারণে মাছের প্রজনন ও বিচরণক্ষেত্রসহ জলাশয়ের পরিমাণ প্রতিনিয়ত ছোট হয়ে আসছে। এর ফলে অভ্যন্তরীণ উন্মুক্ত জলাশয়ে মৎস্যের উৎপাদন ও জীববৈচিত্র্য ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও বৃষ্টিপাতের পরিমাণসহ নানা ধরনের পরিবর্তন পরিলক্ষিত হচ্ছে ও তার বিরূপ প্রভাব পড়ছে মৎস্য প্রজনন ও উৎপাদনে, বিশেষ করে দেশীয় প্রজাতির মৎস্যের ক্ষেত্রে।

আমাদের খাদ্য তালিকায় পুঁটি, মলা, শিং, মাগুর, কৈ, টেংরা, পাবদা, গুলশাসহ নানা প্রজাতির দেশীয় মাছ প্রাণিজ পুষ্টির প্রধান উৎস। বর্তমানে দেশের মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় ১৪ লাখ নারীসহ ১ কোটি ৯৫ লাখ বা ১২ শতাংশ মানুষ মৎস্য খাতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০২৪-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী জিডিপিতে মৎস্য খাতের অবদান ২ দশমিক ৫৩ শতাংশ, কৃষিজ জিডিপিতে মৎস্য খাতের অবদান ২২ দশমিক ২৬ শতাংশ ও জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার ২ দশমিক ৮১ শতাংশ। দেশের চাহিদা মিটিয়ে মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য পৃথিবীর ৫২টির অধিক দেশে রফতানি করছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) দ্য স্টেট অব ওয়ার্ল্ড ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকোয়াকালচার ২০২৪-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশ ইলিশ আহরণে প্রথম আর মিঠা পানির মাছ আহরণে বাংলাদেশ চীনকে টপকে দ্বিতীয়। কিন্তু অতিআহরণ ও জলজ পরিবেশ বিপর্যয়সহ নানা কারণে আমাদের অনেক প্রজাতির মাছ আজ বিলুপ্তপ্রায়।

দেশীয় প্রজাতির মাছ সংরক্ষণে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বিএফআরআই) দেশে প্রথমবারের মতো দেশীয় মাছের লাইভ জিন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠিত এ লাইভ জিন ব্যাংকে দেশের বিলুপ্ত প্রায় ভাগনা, দেশী কই, নাপিত কই, গুলশা, খলিশা, লাল খলিশা, মাগুর, বোয়ালি পাবদা, সরপুঁটি, পুঁটি, শিং, মহাশোল, রুই, বুজুরি টেংরা, ভিটা টেংরা, গুলশা, বাটা, রিটা, মলা, পুইয়া গুতুম, পাহাড়ি গুতুম, ঠোঁট পুইয়া, শাল বাইম, টাকি, ফলি, ঢেলা, চেলা, লম্বা চান্দা, রাঙা চান্দা, লাল চান্দা, পিয়ালি, বৈরালি, দারকিনা, ইংলা, কেপ চেলা, রাণী, লোহা চাটা রাণী, কাকিলা, কাজলী, বাচা, বাতাসি, আঙ্গুস, কানপোনা, ঘাউরা, ভেদা, একঠুঁটি কাকিলা, বাসপাতা, জারুয়া, কেলে টেংরাসহ মোট ১১০ প্রজাতির মাছ সংরক্ষণ করা হয়েছে। অন্যদিকে নীলফামারীর সৈয়দপুরে অবস্থিত স্বাদুপানি উপকেন্দ্রে অন্য একটি লাইভ জিন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে যেখানে এরই মধ্যে চান্দা, সরপুঁটি, তিতপুঁটি, জাতপুঁটি, বাটা, বোল, কালবাউশ, রুই, মৃগেল, টাটকিনি, কাতলা আঙ্গুস, কুর্শা, বৈরালী, খোকশা, বউ মাছ, জারুয়া, পাহাড়ি গুতুম, লোহাচাটা, চেং, কাউয়াসহ ৬২টি প্রজাতি সংরক্ষণ করা হয়েছে। স্বাদু পানির আরো একটি উপকেন্দ্র বগুড়ার সান্তাহারে স্থাপিত হয়েছে যেখানে এরই মধ্যে পিয়ালী, বাতাসি, গাংটেংরা, ভেদা, খশল্লা, চ্যালা, বাচা, আইড়, বেলে কাকিলাসহ ২৪টি প্রজাতি সংরক্ষণ করা হয়েছে। এছাড়া উপকূলীয় লবণাক্ত এলাকার মাছের প্রজাতি সংরক্ষণের জন্য লোনা পানি কেন্দ্র খুলনার পাইকগাছায় আরো একটি লাইভ জিন ব্যাংক স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে সেখানে ভাঙন, পারশে, খরশোলা, চিত্রা, দাতিনা, রয়না, কাইন মাগুর, বেলেসহ ২০ প্রজাতির মাছ সংরক্ষিত আছে।

মাছের জার্মপ্লাজম সংরক্ষণের জন্য লাইভ জিন ব্যাংক একটি আধুনিক ধারণা। জিন ব্যাংক হারিয়ে যাওয়া বা বিলুপ্তপ্রায় মাছ সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এর মাধ্যমে মাছের প্রজাতির জিনগত বৈচিত্র্য সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়, যা পরবর্তী সময়ে গবেষণা, প্রজনন ও পুনরায় প্রাকৃতিক পরিবেশে অবমুক্তির জন্য কাজে লাগে। লাইভ জিন ব্যাংক মূলত মাছের জিন সংরক্ষণ করে রাখে, যা তাদের বংশগত বৈশিষ্ট্যগুলোকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। এটি বিশেষ করে বিপন্ন বা হুমকির সম্মুখীন দেশীয় মাছের প্রজাতির টিকে থাকার সম্ভাবনা বাড়ায়। জিন ব্যাংক মূলত কোনো প্রাণী বা উদ্ভিদের জেনেটিক উপাদানের সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনা। কোনো প্রাণী বা উদ্ভিদ যখন হুমকির সম্মুখীন হয় তখন জিন ব্যাংকের প্রয়োজন হয়। প্রাকৃতিক উৎসে কোনো দেশীয় মাছ হারিয়ে গেলে সেসব মাছকে পুনরুদ্ধারের জন্য লাইভ জিন ব্যাংক থেকে ব্যবহার করা যাবে। সেক্ষেত্রে লাইভ জিন ব্যাংক থেকে সংশ্লিষ্ট মাছকে হ্যাচারিতে কৃত্রিম উপায়ে পোনা উৎপাদনের মাধ্যমে প্রকৃতিতে ফিরিয়ে আনা হবে। মাত্রাতিরিক্ত মাছ আহরণ, পরিবেশগত বির্পযয়, জলাশয় সংকোচনসহ নানা কারণে মৎস্যসম্পদ হুমকির সম্মুখীন হলে জিন ব্যাংক কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। এছাড়া দেশীয় মাছের বংশগত অবক্ষয় হলে লাইভ জিন ব্যাংকে সংরক্ষিত বিশুদ্ধ জাতের মাছ থেকে পোনা উৎপাদন সম্ভব হবে। দেশকে মাছে স্বয়ংসম্পূর্ণ রাখতে এবং সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণসম্পন্ন মাছের উৎপাদন বাড়াতে জিন ব্যাংক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

জিন ব্যাংক মূলত দুই ধরনের হতে পারে—এর একটি এক্স সিটু সংরক্ষণ যেখানে জীবন্ত প্রাণীদের বাইরে জেনেটিক উপাদান সংরক্ষণ করা হয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, বীজ, ডিএনএ বা শুক্রাণু ও ডিম্বাণু আর অন্যটি ইন সিটু সংরক্ষণ—যেখানে প্রাকৃতিক পরিবেশেই জীব বা তাদের জিন সংরক্ষণ করা হয়। লাইভ জিন ব্যাংকের মাধ্যমে মাছের বিভিন্ন প্রজাতির জিন সংগ্রহ করা হয় এবং প্রয়োজনীয় সময়ে তা পুনরায় প্রাকৃতিক পরিবেশে ফিরিয়ে দেয়া হয়। এতে করে দেশীয় মাছের প্রজাতিগুলো বিলুপ্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে যায় এবং জৈববৈচিত্র্য সংরক্ষিত থাকে। বাংলাদেশে যেক্ষেত্রে মাছ অর্থনৈতিক ও পুষ্টির দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে সেক্ষেত্রে এ ধরনের উদ্যোগের মাধ্যমে মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষমতা বাড়ানো যায় এবং মৎস্যসম্পদ দীর্ঘমেয়াদে টিকিয়ে রাখা সম্ভব।

দেশের জলাশয়ের ৪৭৫ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ ও ২৬০ প্রজাতির মিঠা পানির মাছ রয়েছে। এর মধ্যে ১৪৩ প্রজাতির ছোট মাছ রয়েছে। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) ২০১৫-এর তথ্যমতে, দেশে স্বাদু পানির ৬৪ প্রজাতির মাছ বিলুপ্তপ্রায়। দেশীয় মিঠাপানির ২৬০ প্রজাতির মাছ সংরক্ষণ ও এর উৎপাদন বাড়িয়ে বাণিজ্যিকভাবে দেশের চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রফতানি করাই এ উদ্যোগের লক্ষ্য। দেশের বিভিন্ন আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে থাকা এসব মাছ সংরক্ষণ করে উৎপাদন বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলমান। মাছের চাষাবাদ বৃদ্ধি পাওয়ায় বর্তমানে হ্যাচারিতে দেশী মাছের পোনা ব্যাপকভাবে উৎপাদিত হচ্ছে। বিলুপ্তপ্রায় দেশী মাছের প্রাকৃতিক উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মৎস্য অধিদপ্তর হাওর-বাঁওড়, বিল ও নদ-নদীতে অধিকসংখ্যক অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠা ও বিলুপ্তপ্রায় মাছের পোনা অবমুক্ত করছে। দেশী প্রজাতির মাছ সংরক্ষণে লাইভ জিন ব্যাংক অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রেখেছে। ফলে দেশে বিলুপ্তপ্রায় মাছের প্রাপ্যতা সাম্প্রতিককালে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এসব মাছের মূল্য সাধারণ ভোক্তার সক্ষমতার মধ্যে এসেছে। এর ফলে খাবারের পাতে বৃদ্ধি পেয়েছে দেশী মাছের স্বাদ।

দেশী প্রজাতির মাছ সহজলভ্য পুষ্টির অন্যতম উৎস হিসেবে প্রাচীনকাল থেকে বিবেচিত হয়ে আসছে। এর মধ্যে পুঁটি, ঢেলা, মলা, বাইম, শিং, টেংরা, খলশে, পাবদা, চান্দা, মাগুর, কেঁচকি অন্যতম। এসব মাছে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, লোহা ও আয়োডিনের মতো প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থ রয়েছে। এসব উপাদান শরীরের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী এবং রক্তশূন্যতা, গলগণ্ড, অন্ধত্ব প্রভৃতি রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। কিন্তু জনসংখ্যা বৃদ্ধি, জলাশয় সংকোচন, অতি আহরণ ইত্যাদি কারণে মাছের প্রজনন ও বিচরণ ক্ষেত্র বিনষ্ট হওয়ায় প্রাকৃতিক জলাশয়ে ছোট মাছের প্রাপ্যতা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে। দেশের মৎস্য উৎপাদনে দেশী ছোট মাছের অবদান প্রায় ৩৫ শতাংশ। মৎস্য অধিদপ্তর (২০২২)-এর তথ্যমতে ২০২১-২২ অর্থবছরে পুকুরে চাষের মাধ্যমে দেশী ছোট মাছের মোট উৎপাদন ২ দশমিক ৫৮ লাখ টন। ইয়ারবুক অব ফিশারিজ স্ট্যাটিসটিকস অব বাংলাদেশের তথ্যমতে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে পুকুরে চাষের মাধ্যমে দেশী ছোট মাছের উৎপাদন বেড়ে ২ দশমিক ৭৭ লাখ টনে উন্নীত হয়েছে।

মাছের চাষাবাদ বৃদ্ধি পাওয়ায় বর্তমানে হ্যাচারিতে দেশী মাছের পোনা ব্যাপকভাবে উৎপাদিত হচ্ছে। এসব প্রযুক্তি মাঠপর্যায়ে সম্প্রসারিত হওয়ায় বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির মাছের প্রাপ্যতা বৃদ্ধি পেয়েছে। মাছ এখন সাধারণ ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে এসেছে। তাছাড়া নদ-নদী, হাওর ও বিলে দেশী মাছের পোনা অবমুক্তকরণ ও মৎস্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠা করে বিলুপ্তপ্রায় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিসহ মাছের জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। বিলুপ্তপ্রায় দেশী মাছের প্রাকৃতিক উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার হাওর-বাঁওড়, বিল ও নদ-নদীতে অধিকসংখ্যক অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠা ও বিলুপ্তপ্রায় মাছের পোনা অবমুক্ত করছে। দেশী প্রজাতির মাছ সংরক্ষণে এ লাইভ জিন ব্যাংক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

মাত্রাতিরিক্ত মাছ আহরণ, পরিবেশগত বিপর্যয়, জলাশয় সংকোচন প্রভৃতি কারণে মৎস্যসম্পদ হুমকির সম্মুখীন হলে মাছের জিন ব্যাংক কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। দেশকে মাছে স্বয়ংসম্পূর্ণ রাখতে এবং সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণসম্পন্ন মাছের উৎপাদন বাড়াতে জিন ব্যাংক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে প্রত্যাশা মাছ গবেষকদের।

বিলুপ্তপ্রায় মাছ সংরক্ষণের জন্য বিএফআরআই গবেষণা করে এরই মধ্যে ৪০ প্রজাতির মাছ পুনরুদ্ধার করেছে। এছাড়া দেশী মাছের প্রজনন ও চাষাবাদ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়েছে। গবেষক, চাষী ও উদ্যোক্তা পর্যায়ে যেন সহজেই এ মাছগুলো পাওয়া যায় সেজন্যই এ প্রচেষ্টা। গবেষণার ফলে বিলুপ্তপ্রায় দেশী ছোট মাছের উৎপাদন বেড়েছে। বাজারে দেশী মাছের প্রাপ্যতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে এসব মাছ পাওয়া যাচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সব বিলুপ্ত প্রজাতির মাছকে খাবার টেবিলে ফিরিয়ে আনাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

মো. মামুন হাসান: সিনিয়র তথ্য অফিসার, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়

আরও