সময়ের ভাবনা

ঢাকা শহর যেন এক সক্রিয় বোমা!

তুর্কিয়েতে ভয়াবহ ভূমিকম্পে ২১ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু বাংলাদেশকেও ভাবিয়ে তুলেছিল। রাজধানী ঢাকায় তুরস্কের মতো ভূমিকম্প হলে কী হবে, কত মানুষ মারা যাবে, সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি কত হবে প্রভৃতির হিসাব নিয়ে বিশেষজ্ঞরা যখন বসেছিলেন ঠিক তখনই রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রামে একের পর এক বিস্ফোরণ ঘটতে থাকে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে ঢাকায় বসবাসরত নাগরিকদের মৃত্যুর জন্য এখন আর

তুর্কিয়েতে ভয়াবহ ভূমিকম্পে ২১ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু বাংলাদেশকেও ভাবিয়ে তুলেছিল। রাজধানী ঢাকায় তুরস্কের মতো ভূমিকম্প হলে কী হবে, কত মানুষ মারা যাবে, সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি কত হবে প্রভৃতির হিসাব নিয়ে বিশেষজ্ঞরা যখন বসেছিলেন ঠিক তখনই রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রামে একের পর এক বিস্ফোরণ ঘটতে থাকে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে ঢাকায় বসবাসরত নাগরিকদের মৃত্যুর জন্য এখন আর ভূমিকম্পের দরকার নেই। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়াই মানুষের মৃত্যু হচ্ছে অব্যবস্থাপনা থেকেই। আজ এ এলাকায় গ্যাস বিস্ফোরণ তো কাল অন্য এলাকায় বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ড। কোনো এলাকায় এসি বিস্ফোরণ আবার কোনো এলাকায় জমে থাকা মিথেন গ্যাসে বিস্ফোরণ। বিস্ফোরণের সংখ্যা ও তীব্রতা ক্রমেই বাড়ছে। বিস্ফোরণের তীব্রতা এত বেশি যে ভবনের কয়েক তলাই শুধু ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না রাস্তায় চলাচলকারী ব্যক্তি ও আশপাশের ভবনের মানুষও মারা যাচ্ছে। দেখে মনে হচ্ছে পুরো ঢাকা শহরই বিস্ফোরণোন্মুখ, যেকোনো সময়ই ঘটবে আরো বড় দুর্ঘটনা। 

পুরো ঢাকা শহরের সক্রিয় বোমায় পরিণত হওয়ার জন্য দায়ী অপরিকল্পিত নগরায়ণ। কোন স্থান দিয়ে বিদ্যুতের তার ও গ্যাসের পাইপলাইন গেছে তা কেউ জানে না। পানি বা সুয়ারেজ লাইনের সঙ্গে গ্যাসের লাইন মিশে একাকার। বিগত কয়েক বছরে ঢাকাসহ সারা দেশেই প্রতিযোগিতা দিয়ে বেড়েছে সু-উচ্চ ভবন নির্মাণ। শিল্পায়নের এ যুগে নগরায়ণ বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেই নগরায়ণ কতটুকু পরিকল্পনামাফিক গড়ে উঠছে সেটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। একটি নগর গড়ে ওঠার সময় দেখতে হয় সেখানকার ভবনগুলো বিল্ডিং কোড মেনে তৈরি কিনা, বিদ্যুৎ-গ্যাসের বণ্টন ব্যবস্থা নিরাপদ উপায়ে গড়ে উঠছে কিনা, রাস্তাগুলো যথেষ্ট প্রশস্ত থাকছে কিনা, ড্রেনেজ সিস্টেম, ময়লা অপসারণ পদ্ধতিসহ নাগরিক জীবনের অন্য সুযোগ-সুবিধা যথাযথ থাকছে কিনা প্রভৃতি। দুঃখজনক হলেও সত্য, বাংলাদেশের নগরায়ণের দিকে দৃষ্টি রাখলে দেখা যাবে খুব কম ক্ষেত্রেই সঠিক নিয়ম মানা হচ্ছে। নতুন গড়ে ওঠা এলাকায় রাস্তার প্রস্থ পাঁচ-ছয় ফুটের বেশি নয়। এমন সরু রাস্তা দিয়ে বড় কোনো যানবাহন তো দূরের কথা, দুটো মাঝারি আকৃতির যানবাহনও স্বাচ্ছন্দ্যে চলতে পারে না। ফলে দুর্ঘটনা ঘটলে ফায়ার সার্ভিসসহ উদ্ধারকর্মীদের গাড়িগুলোই ঘটনাস্থলে পৌঁছতে পারছে না। বিল্ডিং কোড না মানায় দুটো ভবনের মাঝে দূরত্ব থাকছে একেবারে নগণ্য। ফলে আলো-বাতাসহীন বদ্ধ কতগুলো ভবনের জন্ম হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এমন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ শুধু ভালোভাবে বেঁচে থাকার পরিবেশ বিনষ্ট করে তা নয় বরং তাদের জীবনের নিরাপত্তাকেও বড় ধরনের হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। 

আইন অমান্য করেই অধিকাংশ ভবন গড়ে উঠছে। আবার আইন মেনে ভবন নির্মাণ হলেও ব্যবহারের ক্ষেত্রে আইনের তোয়াক্কা করা হচ্ছে না। এই যেমন সিদ্দিক বাজারের দুর্ঘটনাকবলিত ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ডে দোকান ভাড়া দেয়া হয়েছিল। অথচ সেটি ছিল গাড়ি পার্কিংয়ের স্থান। প্রতিটি দুর্ঘটনার পর এমন ভবন নির্মাণ ও ব্যবহারের অনিয়মের কথা শোনা যায়। কারখানা নির্মাণ ও পরিচালনার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রয়োজ্য। আইন মেনে নিরাপদ কারখানা নির্মাণ বা সেটি পরিচালনা করা হচ্ছে না। পরবর্তী সময়ে এসব সমস্যার নিরসনে নেয়া হয় না কোনো পদক্ষেপ। ফলে নতুন কোনো ক্ষেত্রে আবার বিস্ফোরণ ঘটছে। ১৯৯৩ সালে হাউজ বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউশনের মাধ্যমে সব পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ নিয়ে পূর্ণাঙ্গ ইমারত নির্মাণ বিধিমালা প্রণীত হয়, তা মাঠপর্যায়ে প্রয়োগের জন্য ২০০৬ সালে আইনগত ভিত্তি পায়। কিন্তু এ বিধিমালা প্রয়োগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আজ পর্যন্ত কোনো প্রশাসনিক কাঠামো গড়ে তোলা হয়নি। বিধিমালা অনুসরণ করে ভবন নির্মাণ না করলে সাত বছর কারাদণ্ড অথবা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে। কিন্তু এ বিধানের প্রয়োগ নেই বললেই চলে।

রাজধানী তো বটে বড় বড় শহরের ভবনঘেঁষে বিদ্যুৎ পরিবাহী তারের সঙ্গে আরো শত ধরনের তার, যেমন ডিশ, টেলিফোন, ইন্টারনেট, জেনারেটর প্রভৃতি মাকড়সার জালের মতো জটলা পাকিয়ে এমনভাবে নিয়ে যাওয়া হয় যে কোনোদিন এর থেকে বড় যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এমন আশঙ্কা বোধহয় নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কিংবা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কেউই করে না। গ্যাসের লাইনের অপরিকল্পিত বিস্তৃতি এবং লাইনের বিভিন্ন স্থানে ছিদ্র দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে। সেপটিক ট্যাংকে উৎপন্ন মিথেন গ্যাস ঘরে ছড়িয়ে পড়ছে। একটা নিরাপদ নগর গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয়ে কারো কোনো নজরদারি নেই। 

অফিস, কারখানা, মার্কেট, দোকান কোনো স্থানই নিরাপদ নয়। রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রামে সংঘটিত বিস্ফোরণের ঘটনাগুলো ঘটেছে কারখানা, অফিস ও দোকানে। প্রতিটি দুর্ঘটনার সঙ্গে নিয়ম না মানার বিষয়টি উঠে এসেছে।

আগের অভিজ্ঞতাগুলোর দিকে তাকালে আমরা কিছু বিষয় সম্পর্কে জানতে পারব। ২০২১ সালের জুন মাসে এক সন্ধ্যায় মগবাজারে অবস্থিত একটি ভবনের নিচতলায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। নিচতলাটি একেবারে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। আশপাশের ভবনগুলো কেঁপে ওঠে, অনেক দোকানঘরে আগুন লেগে যায়, মারা যায় ছয়জন। অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় অনেকে। বলা হয়, জমে থাকা মিথেন গ্যাস থেকে এ বিস্ফোরণ। ২০২০ সালের ৪ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় একটি মসজিদে বিস্ফোরণ ঘটে।৷ মসজিদে তখন লোকজন ছিল, তারা এশার নামাজ পড়ছিল।৷ বিস্ফোরণে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়, দগ্ধ হয় আরো ১৫ জন।৷ তদন্ত সংস্থা সিআইডি বিস্ফোরণের কারণ উদ্ঘাটন করে৷ জানায়, মসজিদের ভেতরে বিদ্যুতের অবৈধ সংযোগ ছিল, ছিল গ্যাসেরও অবৈধ সংযোগ৷। অবৈধ বিদ্যুতের স্পার্ক হয়েছে অবৈধ গ্যাস লাইনের লিকেজ দিয়ে বের হয়ে আসা গ্যাসের সঙ্গে, আর তাতেই বিস্ফোরণ।৷ অর্থাৎ পুরো দায় মসজিদ কর্তৃপক্ষের।৷ তারা বিদ্যুৎ আর গ্যাসের অবৈধ সংযোগ কেন নিল? কিন্তু এ ঘটনায় যারা মারা গেলেন, তারা কি এ অবৈধ কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত? চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের অক্সিজেন কারখানায় বিস্ফোরণের পর জানা গেল অনেক কাজেরই তাদের বৈধতা ছিল না। আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, এগুলো দেখার যাদের দায়িত্ব তারা কোনো পদক্ষেপই নেয়নি। 

সরকারি কাজে অবৈধ বিষয়টির উৎপত্তি হলো কীভাবে? বিদ্যুৎ বা গ্যাস সংযোগ বৈধ কি অবৈধ তা দেখার জন্য সরকারের কোনো লোক নেই? তারা বিষয়টি দেখলেন না, উল্টো অবৈধ আয়কে অব্যাহত রাখতে অবৈধ সংযোগকেই উৎসাহ দিতে থাকলেন বা সবসময়ই দিতে থাকেন, তার কি কোনো বিচার হবে? সরকারের নিয়োগকৃত ব্যক্তির দায় কি শেষ বিচারে সরকারের ওপরই বর্তায় না? এজন্যই কি সরকারের তদন্ত কমিটিগুলোর রিপোর্টে জনগণকেই দায়ী করতে দেখা যায় বেশি?

এরও আগের বেশকিছু মর্মান্তিক ঘটনার দিকে তাকাতে পারি।৷২০১০ সালে নিমতলী ট্র্যাজেডির কথা মনে আছে? সে বছরের ৩ জুন পুরান ঢাকার নিমতলীর একটি ভবনে কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন লাগে, মৃত্যু হয় ১২১ জনের। ৷২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে পুরান ঢাকার চুড়িহাট্টার ওয়াহেদ ম্যানসনে কেমিক্যাল গোডাউনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হয়, তাতে মারা যায় ৭০ জন। ঢাকা শহর গড়ে তোলা হয়েছে অপরিকল্পিতভাবে। যেকোনো সময় যেকোনো স্থানে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এতে বিপুল মানুষ হতাহত এবং সম্পদের ক্ষতি হবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এটার মূল কারণ ‘ম্যাপিং’ নেই। 

আসলে ব্যক্তি নয়, প্রশ্নটি ব্যবস্থা ও ব্যবস্থাপনার—সবই কাঠামোগত ত্রুটি।৷ সরকার যদি দেশে একটা যুক্তিগ্রাহ্য ব্যবস্থা তৈরি করতে পারত, তাহলে দায়টা আর এককভাবে একজনের ওপর গিয়ে পড়ত না। আবার উল্টো দিকে, কেউ কেউ কিন্তু এমন প্রশ্নও করতে পারেন—সে রকম একটা ব্যবস্থা চালু রাখার দায়িত্বটা কার? এই যে সিদ্দিক বাজারের ঘটনা, এর দায় শেষ পর্যন্ত গিয়ে কার ওপর বর্তাবে? বিভিন্ন বিভাগের লোকজন সেখানে গেছেন, মন্তব্য করেছেন, ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের চেষ্টা করেছেন। এই যে তদন্ত, সেটা কি প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটন করে দায়ী ব্যক্তিকে সাজার আওতায় আনার জন্য, নাকি নিজেদের প্রতিষ্ঠানটিকে দায়মুক্তি দেয়ার জন্য? এরই মধ্যে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এ ঘটনার জন্য দায়ী করে নাশকতার ইঙ্গিত দিচ্ছেন। এতে কি প্রকৃত তদন্ত বাধাগ্রস্ত হবে না?

প্রতিটি ঘটনায় একটি বিষয় বেশ লক্ষণীয় তা হলো কয়েকটি তদন্ত কমিটি গঠন। রাজধানীর সিদ্দিক বাজার, সায়েন্স ল্যাবরেটরি ও চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণের ঘটনায় একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। একটি ঘটনা তদন্তের জন্য আবার বিভিন্ন বিভাগ আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এক্ষেত্রে সমন্বয় হবে কীভাবে? এসব তদন্ত কমিটি, তাদের সুপারিশ যে আসলে কতটুকু কী কাজে লাগে সেটা এ দেশের মানুষ সবাই জানে।৷ নিমতলীর অগ্নিকাণ্ডের পর সরকারের পক্ষ থেকেই বলা হয়েছিল, পুরান ঢাকার আবাসিক এলাকায় আর কেমিক্যাল গোডাউন বা কারখানা করতে দেয়া হবে না।৷সীতাকুণ্ডে কনটেইনার টার্মিনালে বিস্ফোরণের সময় বলা হয়েছিল, ওই অঞ্চলে বিস্ফোরণ প্রতিরোধে অভিযান চালানো হবে। বাস্তবায়ন করা গেছে সে সিদ্ধান্ত? কেন যায়নি? কাদের অসহযোগিতার কারণে বাস্তবায়ন করা যায় না? ঢাকার আরমানিটোলায় কেমিক্যালের গোডাউনে৷আগুন লাগলে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছিলেন, সিটি করপোরেশন কেমিক্যাল গোডাউনের জন্য কোনো লাইসেন্স দিচ্ছে না। কিন্তু সরকারের অন্য দপ্তরের নিষ্ক্রিয়তার কারণে এগুলো এখান থেকে সরানো যাচ্ছে না। তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, সিটি করপোরেশনের কাছ থেকে বাণিজ্য অনুমতি ছাড়াই তারা কীভাবে রাসায়নিক দ্রব্য আমদানি করে, কীভাবে গুদামজাত করে এবং কীভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে? তার বক্তব্য থেকেই সমন্বয়হীনতার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। 

অপরিকল্পিত ও নিয়ম না মেনে ভবনসহ আনুষঙ্গিক বিষয়াদির নির্মাণ বিস্ফোরণের শঙ্কা বাড়িয়ে তুলছে। ভবনের পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা থেকে শুরু করে গ্যাস ও বিদ্যুতের লাইন কোনো ব্যবস্থাই নিয়ম মেনে তৈরি করা হচ্ছে না। বদ্ধ ঘরকেই রান্নাঘর হিসেবে তৈরি করা হচ্ছে, সেখানে আবার গ্যাসের লাইন থাকছে উন্মুক্ত। আবাসস্থলকে কারখানা বা মার্কেট হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। জমে থাকা গ্যাস বের হওয়ার কোনো রাস্তাই রাখা হচ্ছে না। এসব কারণে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে। অন্যদিকে পুরনো ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতি থেকেও বিস্ফোরণ ঘটছে। বিশেষত এসি বিস্ফোরণ বেড়ে উঠছে। ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষণের নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম রয়েছে, সেগুলোর কোনোটিই মানা হয় না। এমনকি মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেলেও বছরের পর বছর সেগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে। ভবনের মতো গাড়িগুলো যেন বোমায় পরিণত হচ্ছে। সিএনজিচালিত গাড়িগুলোর সিলিন্ডার নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ না করায় মাঝেমধ্যেই সেগুলো বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে। মানহীন ও মেয়াদ উত্তীর্ণ সিলিন্ডার ব্যবহারেও দুর্ঘটনা বাড়ছে। বাসায় বিস্ফোরণ ঘটছে, রাস্তায় বেরোলে গাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটছে। অফিস ও বাজারে বিস্ফোরণ ঘটছে। মানুষ আজ নিরাপদ নয়। শুধু পরিবেশগত দূষণেই ঢাকা বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে না, ব্যবস্থাপনা ও কাঠামোগত দুর্বলতার কারণেও বোমায় পরিণত হচ্ছে। এখান থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে সবকিছুই সঠিক পরিকল্পনার আওতায় আনতে হবে। আর এটি নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। 

এম এম মুসা: সহযোগী সম্পাদক, বণিক বার্তা

আরও