সময়ের ভাবনা

বাজারের অদৃশ্য হাত বনাম সরকারের ভূমিকা

বাজারের মধ্যে একটা বিশৃঙ্খল ব্যাপার আছে। সবসময়ই এটি ছিল। কখনো দাম বাড়ে, কখনো দাম কমে; কখনো মন্দা আসে, কখনো বাজার গরম; কখনো নতুন কোনো পণ্য এসে পুরনো পণ্যকে হটিয়ে দেয়; কোনো ব্যবসার রমরমা অবস্থা, আবার কোনো ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়, কখন কে কাকে ঠকায়, কখন কেউ কারোর বিপন্নতারও সুযোগ নেয়।

বাজারের মধ্যে একটা বিশৃঙ্খল ব্যাপার আছে। সবসময়ই এটি ছিল। কখনো দাম বাড়ে, কখনো দাম কমে; কখনো মন্দা আসে, কখনো বাজার গরম; কখনো নতুন কোনো পণ্য এসে পুরনো পণ্যকে হটিয়ে দেয়; কোনো ব্যবসার রমরমা অবস্থা, আবার কোনো ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়, কখন কে কাকে ঠকায়, কখন কেউ কারোর বিপন্নতারও সুযোগ নেয়। 

বাজার নিয়ন্ত্রণ বা প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করবে কে? উত্তর হলো জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে সরকার। বাজারকে প্রতিযোগিতামূলক করার অন্যতম উপায় হলো বিকল্প বাড়ানো। আবার প্রতিযোগিতার জন্য চাই সুযোগের সমানাধিকার। প্রতিযোগিতা ব্যাহত হয় যদি বাজার প্রবেশে বাধা থাকে। তখন একচেটিয়া বিক্রেতা ক্রেতার সঙ্গে যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন। অনেক অর্থনীতিবিদ সরকারি নানা নিয়ন্ত্রণকে এর জন্য দায়ী করেন। কিন্তু তারা ভুলে যান, দারিদ্র্য-বঞ্চনাও তো সুযোগের অসাম্য তৈরি করে এবং নানা পেশা বা ব্যবসা-বাণিজ্যের জগতে প্রবেশের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। 

মানুষ অর্থ ব্যয় করে আহারের জন্য খাদ্যশস্য ক্রয় করে, জীবনযাপনের জন্য কাপড় ক্রয় করে, উপার্জনের যোগ্যতা অর্জনের জন্য শিক্ষা ক্রয় করে ইত্যাদি। এভাবে কৃষিপণ্য, শিল্পপণ্যের সঙ্গে সেবাও একটি ক্রয়যোগ্য পণ্য। তবে পণ্যের উৎপাদন ব্যয় যাই-ই হোক, তার চাহিদার ওপর দাম ওঠানামা করে। দেশে আলুর উৎপাদন বেশি হলে বাজারে তার দাম পড়ে যাবে। বন্যায় ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হলে কাঁচামরিচের দাম বাড়বে। মানুষের মধ্যে রোগবালাই বেশি হলে চিকিৎসার ব্যয় বাড়বে। তবে পণ্য সময়মতো বাজার পেলে দাম সন্তোষজনক হবে, না পেলে দাম কমে যাবে। 

খাদ্যপণ্য সময়ের ব্যবধানে নষ্ট হয়ে যায়। অনেক খাদ্য গুদামজাত করে নষ্ট হওয়া কিছুকাল রোধ করা গেলেও গুণমান হারায়। তাই কৃষিপণ্য যথাসম্ভব দ্রুত ভোক্তার কাছে না পাঠালে তার দাম কমে একসময় আবর্জনায় পরিণত হয়। শিল্পপণ্য সময়মতো ব্যবহার না করলে অব্যবহারযোগ্য হয়ে যায়। তাই সব পণ্যের একটি মেয়াদ থাকে, ওই সময়ের মধ্যে তা ভোক্তার কাছে পৌঁছে ব্যবহার হওয়া দরকার। উৎপাদন বাজারজাত করার ব্যবস্থা নিয়মিত না হলে উৎপাদনের একাংশ বা বড় অংশ নষ্ট হবে। কৃষক কিংবা উৎপাদনকারী ওই নষ্ট হওয়া ক্ষতির মূল্য ধরেই পণ্য বাজারজাত করলে পণ্যের মূল্য অনিয়ন্ত্রিতভাবে ওঠানামা করবে।

আমরা প্রায় ক্ষেত্রেই সিন্ডিকেটের কথা শুনি। সিন্ডিকেট হলো কিছু মুষ্টিমেয় ব্যবসায়ীর কার্টেল, যারা কোনো পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। বিশেষ ধরনের পণ্যের ক্ষেত্রে এবং দামের ক্ষেত্রে এ নিয়ন্ত্রণ হয়। যেমন ঢাকার খোলাবাজারে কোনো পণ্য কী দামে বিক্রি হবে তারা তা নিয়ন্ত্রণ করবে। এ নিয়ন্ত্রণ ডালের ক্ষেত্রে, তেলের ক্ষেত্রে, চিনির ক্ষেত্রে হতে পারে। অর্থাৎ উৎপাদিত পণ্য যা-ই থাক না কেন, বাজারে তার সরবরাহ একটা চক্র নিয়ন্ত্রণ করবে। সিন্ডিকেটের মূল কাজ হলো সরবরাহ ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বাড়তি মুনাফা করা। এটা করতে গিয়ে তারা পণ্যের সরবরাহ কমিয়ে দেন এবং পণ্য গুদামজাত করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়িয়ে দেন। মূল কথা হলো, বাজারে পণ্যের সরবরাহ ও চাহিদার স্বাভাবিক পরিস্থিতিকে বাধাগ্রস্ত করা। বাজারে চাহিদার চেয়ে সরবরাহ কমিয়ে দিলেই দাম বেড়ে যায়। তবে এটা করতে হলে বাজারের বড় একটি অংশ তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকতে হয়। এটা আমদানি পণ্য এবং দেশী বিশেষ ধরনের পণ্য যা অল্প কিছু ব্যবসায়ীর নিয়ন্ত্রণে থাকে—তাদের পক্ষে করা সহজ। বাংলাদেশে সিন্ডিকেট অনেকটা একচেটিয়ামূলক, অনেক বিক্রেতা থাকলেও তারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ যোগসাজশের মাধ্যমে জোগান নিয়ন্ত্রণ করে দাম বাড়িয়ে অতিরিক্ত মুনাফা করতে সবসময় সচেষ্ট থাকে। 

বাজারে পণ্যের জোগানের সঙ্গে বিভিন্ন গোষ্ঠী জড়িত থাকে যাদের হাত ঘুরে তা ক্রেতার কাছে পৌঁছায়। কৃষক উৎপাদন করে পণ্যটি ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেন। ব্যবসায়ীরা পণ্যটি আড়তে মজুদ করে রাখেন, অনেক সময় গুদামেও রাখা হয়। সেখান থেকে বাজারের চাহিদা বুঝে সেটি সরবরাহ করা হয়। গ্রামে ও শহরে প্রচুর আড়তদার ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। তাদের মধ্যে আন্তঃযোগাযোগ ব্যবস্থা এতটা শক্তিশালী নয় যে পুরো দেশের বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। তবে তারা যোগসাজশের মাধ্যমে স্থানীয় বাজারে পণ্যের দাম কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, তবে সেটি স্বল্প সময়ের জন্য। তাছাড়া আড়তদারদের আর্থিক সক্ষমতাও বাজার নিয়ন্ত্রণে সহায়ক নয়। বাজার নিয়ন্ত্রণে বড় ভূমিকা রাখে করপোরেট প্রতিষ্ঠান ও বড় ব্যবসায়ীরা, যাদের সংখ্যা আবার হাতে গোনা। একাধিক প্রতিষ্ঠান হলেও তারা যোগসাজশের মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। ‘‌কালোবাজারি’ শব্দের সঙ্গে সবাই কমবেশি পরিচিত। তারাও বাজারের বিভিন্ন দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে কারসাজির মাধ্যমে অতিরিক্ত মুনাফা হাসিলে সচেষ্ট থাকে। পণ্য আটকে রেখে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করা তাদের কাজ। 

বাংলাদেশে ভোজ্যতেলের ৯০ শতাংশই আমদানি করা হয় এবং ছয়-সাতটি ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এ আমদানির সঙ্গে যুক্ত। চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে করপোরেট ব্যবসায়ী ও চাতাল মালিকরা। তারাও সংখ্যায় বেশি নন। আবার পেঁয়াজ দেশে উৎপাদন হলেও একটি অংশ আমদানি করতে হয়। এ আমদানিকারকরাও সংখ্যায় বেশি নন। ঠিক একইভাবে চিনি, ডাল, মসলার বাজারও গুটিকতক ব্যবসায়ীই বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো গত কয়েক সপ্তাহে বাংলাদেশে যে বয়লার মুরগির দাম হু হু করে বেড়ে গিয়েছিল তার নেপথ্যে কী? মুরগি তো আমদানি করা হয় না। আর বাংলাদেশে তো অনেক খামারি আছেন। বাংলাদেশে ৮-১০টি করপোরেট প্রতিষ্ঠান আছে যারা মূল বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। তারাই প্রতিদিন সকালে ডিম, মুরগির দাম বেঁধে দেয়। তারা যে দাম বেঁধে দেবে সেই দামে বিক্রি করতে হবে। কোনো অজুহাত পেলেই তারা এ কাজ করে। এ ধরনের চক্র আগে থেকেই ছিল, আজকাল যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় তাদের সুবিধা হয়েছে। বাজারে কোনো পণ্যের ঘাটতি হলে সরকার আমদানি করে বা মজুদ থেকে সরবরাহ বাড়িয়ে পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখবে—এটাই সরকারের দায়িত্ব। কিন্তু ওই পণ্যের সিন্ডিকেট সরকারকে অকার্যকর করে দিয়ে ইচ্ছামতো জোগান ও দাম নিয়ন্ত্রণ করে অতিরিক্ত মুনাফা করে নেয়। তাই ভোক্তার স্বার্থে বাজার নিয়ন্ত্রণ করাটা জরুরি।

মিল্টন ফ্রিডম্যানের মতো অর্থনীতিবিদের কাছে বাজারের মূল আকর্ষণ হলো বেছে নেয়ার স্বাধীনতা। এ স্বাধীনতার বিষয়টি একটু গোলমেলে। এটা ঠিক, বাজারে ক্রেতার স্বাধীনতা আছে—এক দোকানে না গিয়ে অন্য দোকানে যাওয়ার বা এক কোম্পানির পণ্য না কিনে আরেক কোম্পানির পণ্য কেনার। বাস মালিকের স্বাধীনতা আছে জ্বালানির দামে না পোষালে এবং ভাড়া না বাড়াতে দিলে গাড়ি না চালানোর। কিন্তু স্বাধীনতা আসলে কতটা তা তো বিকল্পের ওপর নির্ভর করে। জন রোমার যেমন বলেছেন, দারিদ্র্যের কাছে বাজার যা দেয় তা হলো হেরে যাওয়ার স্বাধীনতা। কাজের জায়গা না পোষালে অন্য চাকরি করা বা চালের দাম বাড়লে আটা কেনার বিকল্প না থাকলে অভুক্ত থাকা। স্বেচ্ছায় কিছু করা আর বাধ্যবাধকতা থেকে করা দুটো সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়, যেটি বাজারের পক্ষের ব্যক্তিরা অনেক সময় গুলিয়ে ফেলেন। 

আধুনিক সমাজে যেখানে জনসংখ্যা প্রচুর, কখন কার কিসের প্রয়োজন আর কখন কে কোনটা সরবরাহ করতে পারবে—এর সমন্বয় সাধনের সমস্যা সমাধানের জন্য যে তথ্য ও বিশ্লেষণের প্রয়োজন, তা সাধ্যের অতীত। পরিকল্পিত অর্থনীতির ইতিহাসের শিক্ষাও তা-ই বলে। তার মানে, সব বাজারের হাতে ছেড়ে দেয়া সঠিক সিদ্ধান্ত নয়। আবার কে কেন রাস্তায় কখন কোথায় যাবে, তার জন্য যদি কোনো সংস্থার কাছে আবেদন পেশ করতে হতো এবং সেই সংস্থার কাজ যদি হতো পুরো বিষয়ের সমন্বয় ও নিয়ন্ত্রণ—তখন কী হতো—তাও সুখকর নয়। তাই ব্যাপারটির কিছুটা ব্যক্তিগত উদ্যোগের ওপর ছেড়ে দেয়া ছাড়া উপায় নেই। যদিও তাতে মাঝেমধ্যে চরম বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। তাই নিয়ন্ত্রণের দরকার। যদি মাছের দাম বাড়ে, তাহলে কোন কারণে জোগান কম তা জেনে যদি সবাই ডিম কিনে বাসায় ফেরে, তাহলে ডিমের দামও বেড়ে যাবে। অগণিত ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে সমন্বয় সাধনের জন্য তথ্য ও সিদ্ধান্তের বিকেন্দ্রীকরণ হলো বাজারের একটা বড় গুণ—অ্যাডাম স্মিথের ভাষায় যেন অদৃশ্য কোনো হাত দিয়ে সবাই চালিত হচ্ছে। তার মানে এই নয় যে কখনো কখনো এ ব্যবস্থায় সংকট দেখা দেয় না, এমনকি মুমূর্ষু হয় না। তখন অবশ্য সরকারি হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হয়। কিন্তু ছোটখাটো বিচ্যুতি যেন বাজার নিজেই ঠিক করতে পারে, তার ব্যবস্থাও থাকা উচিত। 

বাজার নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশের সরকারের জন্য একটি মারাত্মক চ্যালেঞ্জ। হঠাৎ করে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি একটি নিয়মিত ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। মূল্যস্ফীতি এখন বড় উদ্বেগের কারণ। খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি মূল্যস্ফীতির মূল কারণ। বাংলাদেশের মতো দেশে সাধারণ মানুষের ভোগ্যপণ্যের তালিকায় খাদ্যসামগ্রীর গুরুত্ব অনেক বেশি। নিত্যপণ্যের মধ্যে চাল, গম, আটা, ময়দা, ভোজ্যতেলের বিপণন, মজুদ ও বাজারমূল্য পরিস্থিতির ওপর দৃষ্টি দিলে দেখা যাবে এসব পণ্যের বাজার দাম অতিমাত্রায় ওঠানামা করছে। এটা সত্য যে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়লে কিছু পণ্যের বিশেষ করে আমদানিনির্ভর পণ্যের খানিকটা দাম বাড়া স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু হঠাৎ করে কোনো উপলক্ষ ছাড়াই এসব নিত্য পণ্যসামগ্রীর দাম বাড়ায় দেশীয় ব্যবসায়ী শ্রেণীর অতিমুনাফা করার মনোবৃত্তি অন্যতম কারণ। এখানেই বাজার নিয়ন্ত্রণের প্রশ্ন আসে। 

সরকারের পক্ষ থেকে দ্রব্যমূল্য সহনশীল পর্যায়ে রাখার জন্য নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যেমন আমদানিকারকদের সুবিধার্থে ব্যাংকের সুদের হার কমানো হয়েছে, স্বয়ংক্রিয় করা হয়েছে বন্দরে শুল্কায়ন পদ্ধতি, কিছু পণ্যের দাম কমাতে শুল্ক কমানো হয়েছে। এমনকি বাজার তদারকির ব্যবস্থা করা হয়েছে। কয়েকটি পণ্যের দামও সরকার বেঁধে দিচ্ছে। খাদ্য মন্ত্রণালয় দায়িত্ব ও এখতিয়ার অনুযায়ী চাল ও গমের মূল্য স্থিতিশীল রাখার অংশ হিসেবেই ওএমএস চালু করা হয়েছে। স্বল্প আয়ের মানুষের সুবিধার্থে সারা দেশে ন্যায্যমূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি করছে টিসিবি। এসব পদক্ষেপ সত্ত্বেও পণ্যের মূল্য কমাতে সরকার সফল হয়নি। মন্ত্রণালয়গুলোর কার্যপ্রণালি বিধি অনুযায়ী, নিত্যপণ্যের মধ্যে চাল ও আটার দাম স্থিতিশীল রাখার দায়িত্ব খাদ্য মন্ত্রণালয়ের। শুধু দাম স্থিতিশীল রাখা নয়, সরকারি গুদামে এ দুই পণ্যের সংগ্রহ এবং প্রয়োজনে বাজারদরের চেয়ে কিছুটা কমিয়ে জনগণের কাছে বিক্রির ব্যবস্থা করাও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। অন্যদিকে কার্যপ্রণালি বিধিতে দ্রব্যমূল্য বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাজের মধ্যে মূল্য নিয়ন্ত্রণ অন্যতম। বাণিজ্য সংগঠনগুলো যেহেতু বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত, সেহেতু মূল্য পরিস্থিতি সহনশীল পর্যায়ে রাখতে তাদেরই রয়েছে বেশি ভূমিকা। এটা সত্য যে ব্যবসায় বা পুঁজির ধর্মই হলো মুনাফা সর্বোচ্চকরণ। ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত মুনাফা অর্জন করতে চাইবেন, এটাই স্বাভাবিক। জনগণের সামর্থ্য বা দুর্ভোগ দেখার বিষয় তাদের নয়। কিন্তু রাষ্ট্র একটি সামাজিক ও কল্যাণমূলক সংগঠন। বাজার ব্যবস্থার একচেটিয়া আগ্রাসন থেকে জনসাধারণকে রক্ষা করা তাই রাষ্ট্রের দায়িত্ব। সুতরাং বাজার ব্যবস্থায় রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ স্বাভাবিকভাবেই কাম্য। কিন্তু বাজার নিয়ন্ত্রণে রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ কতটুকু কার্যকর কিংবা রাষ্ট্র ক্ষমতাহীন হয়ে যাচ্ছে কিনা তা ভেবে দেখার বিষয়। 

এম এম মুসা: সহযোগী সম্পাদক, বণিক বার্তা

আরও